আসানসোল: গাড়ির ওপরের বোর্ডে লেখা ‘স্টেট কনভেনার ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রাইম অ্যান্ড ভিজিল্যান্স সেল’। দুধ সাদা গাড়ি পাশে দাঁড় করিয়ে রাস্তায় নজরদারিতে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি। দৃশ্যত তাঁরা সরকারি কোনও উচ্চ পদস্থ কর্তা। পণ্যবাহী কিংবা ব্যক্তিগত বিভিন্ন গাড়ি রাস্তার ধারে দাঁড় করাচ্ছেন। বিভিন্ন কাগজপত্র দেখতে চাইছেন। চালকরা দেখাচ্ছেনও। অথচ অভিযোগ, সব ঠিক থাকলেও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে অযথা জটিলতা তৈরি করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় বেশ কয়েকজন গাড়ি চালক স্থানীয় থানায় ফোন করে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে তদন্ত করতেই পর্দা ফাঁস। ঝাড়খণ্ডে ভিজিলেন্স অফিসার সেজে তোলাবাজি করতে গিয়ে ধৃত ৭ দুষ্কৃতী। জানা গিয়েছে, ৭ জনেরই বাড়ি আসানসোলে। ধানবাদ জেলার নিরসার গোপালগঞ্জ মোড়ের কাছে ওই আন্তঃরাজ্য সাত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের কাছ দুটি গাড়ি, দুটি পিস্তল, চারটি আই ফোন পুলিশ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গাড়ির ভেতরে পাওয়া গিয়েছে তেরঙা ব্যাজ ও টিএমসি লেখা উত্তরীয়।
নিরসার ডিএসপি অমর কুমার পান্ডে জানান, রাতে গোপালগঞ্জ মোড়ের কাছে ভুয়ো ভিজিল্যান্স অফিসার পরিচয় দিয়ে চালকদের কাছ থেকে অবৈধ টাকা আদায় করছিলেন ওই সাতজন। অভিযুক্তদের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে দুটি গাড়িও।
গাড়ির নম্বর প্লেটের উপরে লেখা ‘স্টেট কনভেনার ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রাইম অ্যান্ড ভিজিল্যান্স সেল’ একটি বোর্ড রয়েছে। ওই ভুয়ো ভিজিল্যান্স অফিসাররা জাতীয় সড়কে গাড়ি থামিয়ে নথি পরীক্ষার নামে ছুতো করে তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ।
গাড়ির চালকদের সন্দেহ হওয়ায় নিরসা থানায় খবর দেন। খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছতেই ভুয়ো সাত ভিজিল্যান্স অফিসার দুটি গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। পিছু নিয়ে তাঁদের পুলিশ ধরে ফেলে। পুলিশ প্রাথমিক অনুমান দীর্ঘদিন ধরেই এই গ্যাঙ সক্রিয়।
ধৃতদের বিরুদ্ধে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন থানায় ও আরপিএফের কাছে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ অনেক দিন ধরে খুঁজছিল তাঁদের। ধৃতদের বুধবার ধানবাদ জেলা আদালতে পেশ করা হয়।
বিজেপি-র জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “তৃণমূল আর দুষ্কৃতী সমর্থক। ঝাড়খণ্ডে তোলাবাজি করছিল সাত যুবক। তাঁরা আসলে আসানসোলের। আসলে ভিন রাজ্যে ছিল বলেই ধরা পড়েছে।”
এ প্রসঙ্গে তৃণমলের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে শুনেছি। তৃণমূলের ব্যাজ, উত্তরীয় পাওয়া গিয়েছে, সেটাও শুনেছি। কিন্তু এগুলো তো বাজারেই কিনতে পাওয়া যায়। পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।”