পশ্চিম মেদিনীপুর: রাত সাড়ে ১১টা। গ্রামে তখন নিঝুম অন্ধকার। হঠাৎই পাশের জঙ্গল থেকে এক তরুণী বেরিয়ে আসেন সন্ত্রস্ত অবস্থায়। গ্রামবাসীরা তাঁকে দেখে রীতিমতো চমকে যান। তরুণী বলতে থাকেন, আমাকে বাঁচাও। তড়িঘড়ি তাঁকে এক গ্রামবাসীর বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। জল-বিস্কুট খেতেও দেওয়া হয়। পরে জানা যায়, বন্ধুর সঙ্গে বাঁধের ধারে ঘুরতে এসে দুষ্কৃতীদের কবলে পড়েন তাঁরা। তাঁর ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে, ফলে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি। গ্রামবাসীরাই উদ্যোগ নিয়ে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। জানা গিয়েছে, ওই তরুণী মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের নার্সিং পড়ুয়া। পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক বন্ধুর সঙ্গে ফুলপাহাড়ির বাঁধের ধারে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি। তখনই ঘটে বিপদ।
এদিকে, আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই তরুণীর বন্ধু। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে তরুণীর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না বলেই অভিযোগ। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গুড়িগুড়িপাল থানা এলাকার অন্তর্গত ফুলপাহাড়ি এলাকায় ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সন্ধ্যায়। মেদিনীপুর হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজের হাউসস্টাফ তাঁর বান্ধবী তথা মেদিনীপুর নার্সিং কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীকে নিয়ে বাঁধের কাছে গিয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর শহর থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে ফুলপাহাড়ি ড্যামে মাঝে মধ্যেই ঘুরতে যেতেন তাঁরা। শুক্রবার বিকেলেও বাইকে চেপে সেখানে গিয়েছিলেন তাঁরা।
অভিযোগ, সেখানে কয়েকজন অপরিচিত লোক যুবককে মারধর করে এবং টাকা লুঠ করতে চায়। সেখান থেকেই তাঁর ওই বান্ধবীকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় যুবককে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ডিএসপি-নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে যায়।
জানা গিয়েছে, পাশের একটি গ্রামে আশিস প্রধানের বাড়িতে ছিলেন ওই তরুণী। তাঁরা জানান, রবীন্দ্রনগরে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছিলেন ওই তরুণী। তবে ঝুঁকি না নিয়ে গ্রামবাসীরা পুরো বিষয়টা জানান স্থানীয় প্রধানকে। পুলিশকেও খবর দেওয়া হয়। রাত বাড়লেই ওই বাঁধের ধারে অসামাজিক কাজকর্ম বাড়ছে বলে অভিযোগ জানাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।