পূর্ব বর্ধমান: বিজেপি-তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাত মিলিয়ে বোর্ড গঠনের অভিযোগ সিপিএম, কংগ্রেসের। তাদের দাবি, তৃণমূলের প্রধানকে সমর্থন করেছে বিজেপি, আবার বিজেপির উপপ্রধানকে সমর্থন করেছে শাসকদল। আর এভাবেই তৃণমূল-বিজেপির একে অপরকে সমর্থনের মধ্যে দিয়ে বোর্ড গঠিত হয়েছে গলসির গোহগ্রামে। যদিও একে অপরকে সমর্থনের কথা বিজেপির উপপ্রধান মেনে নিলেও মানতে চায়নি তৃণমূল। তাদের দাবি, বিজেপির সমর্থনের প্রয়োজন তাদের নেই। গোহগ্রাম গ্রামপঞ্চায়েতে মোট ১৬টি আসন। এরমধ্যে তৃণমূল ভোটে জেতে ৭টি। বাকি বিজেপি, সিপিএম, নির্দলের দখলে যায়। বৃহস্পতিবার সেখানে বোর্ড গঠন ছিল। এক নির্দল প্রার্থী তৃণমূলকে সমর্থন করে বলে দাবি তাদের। ফলে তৃণমূলের সমর্থনে দাঁড়ায় ৮ জন সদস্য। অন্যদিকে বিজেপি ৩, সিপিআইএম ১ ও নির্দলের ৪ সদস্য ছিল।
দু’পক্ষই ৮-৮ হয়ে যাওয়ায় টস হওয়ার কথা ছিল। তবে সে পথে না হেঁটে সর্বসম্মতিক্রমে তৃণমূলের প্রধান ও বিজেপির উপপ্রধান বেছে নেওয়া হয় বলে দাবি বিজেপির উপপ্রধান কানন মাজির। তিনি বলেন, “তৃণমূলের তরফে জবা দলুইকে প্রধান নির্বাচিত করা হয়। সেখানে সবাই সমর্থন করেছে। আবার আমার নাম উপপ্রধান হিসাবে প্রস্তাব করা হয়। সকলে সমর্থন করে। তৃণমূল, বিজেপি, নির্দল সকলে সমর্থন করেছে। আমাকে মানুষ ভালবেসে ভোট দিয়েছে। তাদের উন্নয়নে নিরপেক্ষভাবে কাজ করব। আমরা বিজেপি, নির্দল, সিপিএম মিলে ৮টা ছিলাম। ওরা ১ নির্দল, ৭টা তৃণমূল মিলিয়ে ৮টা ছিল। আলোচনায় ঠিক হল ওরা প্রধান নেবে, আমরা উপপ্রধান।”
যদিও তৃণমূল নেতা গুল মহম্মদ মোল্লার দাবি, “আমরা ৭টা জিতেছিলাম। নির্দল পাশে দাঁড়ায়। তারপর দেখলাম বিজেপিও সমর্থন করল। ওরা বলল তৃণমূলের উন্নয়নে শামিল হতে চায়। আমরাও সমর্থন করলাম।” গলসি-২ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অসীম দত্ত বলেন, “আগেই জানি ওদের সেটিং আছে। এখানে অবৈধ পয়সা রোজগারের জায়গা বালি। সেই জায়গা ঠিক রাখার জন্য, লুটেপুটে খাওয়ার জন্য বিজেপি এবং তৃণমূল এক হয়েছে। আগামিদিনে মানুষই এর জবাব দেবে।”
অন্যদিকে বামনেতা মনসিজ হোসেনের কথায়, “চোখের সামনে দেখলাম তৃণমূলের সমর্থনে বিজেপির উপপ্রধান হল। আবার বিজেপির সমর্থনে তৃণমূলের প্রধান হল। তৃণমূলের লোকেরা বিজেপিকে ভোট দিল। আবার বিজেপি তৃণমূলকে ভোট দিল। যৌথভাবে তৃণমূল, বিজেপি পঞ্চায়েত বোর্ড গড়ল গোহগ্রামে।”
এ বিষয়ে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক দেবু টুডু বলেন, “এ কথা একেবারেই ঠিক নয়। তৃণমূল কখনওই এটা করবে না। বিজেপিকে কোনও প্রয়োজন নেই। গোটা জেলায় বিরোধীরা ১০-১২টা আসন পেয়েছে। ওদের কোনও গুরুত্বই নেই। এসব গল্প ছড়ানো ঠিক নয়। এটা মিথ্যা। কীভাবে হয়েছে, কী হয়েছে সেটা জেনে বলতে হবে। তবে বাংলায় তৃণমূলের কোনওদিনই বিজেপিকে দরকার হবে না। ২-১টা পঞ্চায়েত সদস্য আছে ওদের। ওরাও নিশ্চয়ই আমাদের দিকেই চলে আসবে।”