পূর্ব বর্ধমান: টিভি নাইন বাংলার ক্যামেরায় মুখ খুলেছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের রাঁধুনি। তাঁর দাবি, এর পর থেকে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে তাঁকে। অভিযোগ, হস্টেলের এক সিনিয়র তাঁকে হুমকি দিয়েছেন। ভয়ে বাকি রাঁধুনিও। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলগুলিতে প্রাক্তনী ও বহিরাগত ছাত্রছাত্রীদের থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, হস্টেলগুলিতে যে সংখ্যায় ছাত্রছাত্রী থাকার কথা, তার থেকে বেশি সংখ্যায় ছাত্রছাত্রীদের রান্না হচ্ছে। এরপরই হস্টেলের রাঁধুনিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যতগুলি হস্টেল, তার মধ্যে অন্যতম চিত্তরঞ্জন হস্টেল। ৮৫ জন আবাসিক থাকেন সেখানে। অথচ রাঁধুনির দাবি, রান্না করতে হয় ১০৪-১০৫ জনের। কেন এত অতিরিক্ত খাবার হয়? কে খায় এই খাবার? স্পষ্ট জবাব রাঁধুনি দেননি। তবে সেই রাঁধুনিকে টিভি নাইনের কাছে মুখ খোলার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
রাঁধুনি বিজয় আগরওয়াল স্পষ্ট বলেন, “সুপার সিনিয়র এসে বলছে তুমি হস্টেলের ভাতের খবর কেন বাইরে দেবে? আমাকে বলছে, তোমার ঘরে ক’টা মিল চলছে তুমি কি মিডিয়ার সামনে বল? মিডিয়ার ক্যামেরার সামনে কেন বলেছ? তোমাকে সাহস কে দিয়েছে? গালিগালাজ করেছে। বলেছে দেখে নেবে। আমার বারোটা বাজিয়ে দেবে।” আরেক রাঁধুনি সোমনাথ সিদাই বলছেন, “আজ ওকে দিয়েছে, কাল আমাকেও দিতে পারে। আতঙ্কে আছি।”
রাঁধুনি মণিমালা ঘোষ বলেন, হস্টেলের সিনিয়ররা যা বলবেন, সে কথা বেদবাক্যের মতো মানতে হয়। না শুনলেই অশান্তি বাধে। এমনকী কিছুদিন আগে একজনকে মারধরও করা হয়েছে। রাঁধুনিদের দাবি, মদের আসর বসে হস্টেলে। বলতে গেলেই ঝগড়া। এই ঘটনায় সুদীপকুমার রায় বলে এক সিনিয়রের দিকে অভিযোগের আঙুল।
যদিও নিজেকে এমফিলের ছাত্র হিসাবে দাবি করে সুদীপকুমার রায় বলেন, “সংবাদমাধ্যমের কাছে ভুল কথা গিয়েছে। শুধু জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, ‘দাদা কী ভেবে তুমি এ কথা বললে? এখানে তো দেখেছ বাইরের কেউ থাকে না। যারা আছে সকলেই তো হস্টেলের’।” এই ঘটনাকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই দুই ছাত্র সংগঠনের তরজা চরমে।
এসএফআই নেত্রী ঊষশী রায় চৌধুরী বলেন, “র্যাগিং করা থেকে শুরু করে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা। যাতে কেউ শাসকদলের সংগঠন বাদ দিয়ে অন্য কোনও সংগঠন না করে তার জন্য হুমকি দেওয়া। অনেক কিছুই আমরা দেখতে পাই।” তবে তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি স্বরাজ ঘোষ বলেন, “আমরা সবটা খতিয়ে দেখছি। অভিযোগের উপর তদন্ত হবে।” রাঁধুনিদের একটাই আর্জি, কোনও চাপ যেন তাঁদের উপর না আসে।