খণ্ডঘোষ: হায় রে পঞ্চায়েত!ভোটপর্ব মিটেছে, বোর্ডগঠন বাকি। সেই মনোনয়ন জমা থেকে শুরু করে প্রচার, ভোট-অনেক ঝক্কি গিয়েছে। তাই মাঝের সময়টায় সুন্দরবন বেড়াতে গিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। কিন্তু তারই মধ্যে ‘অপহরণ’! কার বিরুদ্ধে অভিযোগ? কাঠগড়ায় খোদ দলেরই বিধায়কের ঘনিষ্ঠরা। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগে ৫ জন সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে বিধায়ক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগেই আরও একবার প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল। ঘটনা পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে।
জানা গিয়েছে, খণ্ডঘোষের শশঙ্কা গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ জন সদস্য-সহ তাঁদের পরিবার পরিজন মিলে ৩১ জনের একটি দল সুন্দরবন বেড়াতে যায় গত ৫ অগষ্ট বাসে করে। বুধবার তাঁরা বিকালে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, ফেরার পথে সুন্দরবনের গদখালির কাছে লঞ্চ থেকে নেমে বাসে ওঠার পর একদল দুষ্কৃতী তাঁদের বাস আটকে গাড়়িতে উঠে পড়ে। তাঁদের গাড়ি থেকে নামিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ৫ জন সদস্যকে অপহরণ করা হয় বলেও অভিযোগ। এমনকি রেহাই পান নি মহিলারাও। মহিলা সদস্যাদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
শেখ নাজিরউদ্দিন,অনুজ মণ্ডল,অনুপ নায়েক,রাজীব মণ্ডল ও সাধন রায় নামে পাঁচ সদস্যকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ। খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শ্যামল পাঁজা জানান, তাঁর মোবাইলও কেড়ে নেওয়া হয়। ফলে তিনি কারোর সঙ্গেই যোগাযোগ করতে পারেননি।
যারা তাঁদের ওপর হামলা চালায়, তারা সবাই বিধায়ক নবীন চন্দ্র বাগের অনুগামী বলে অভিযোগ। তাঁদের মধ্যে একজন এবারের খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শেখ নাসপাতিও ছিলেন। পঞ্চায়েত সদস্য ববিতা সরকার ও শ্রীকান্ত রায়ের অভিযোগ, তাঁদের মোবাইল ও কাগজপত্র কেড়ে নেয় হামলাকারীরা।
উল্লেখ্য, বুধবার বোর্ড গঠনের প্রধান ও উপপ্রধানের নাম ঘোষণা করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। সেখানে দেখা যায়, শশঙ্কা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হিসাবে তালিকায় নাম আছে গোলক রায়ের। তিনি বিধায়কের অনুগামী হিসেবেই এলাকায় পরিচিত। তাঁর প্রধান হওয়ার কথা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অপার্থিব ইসলামের চাপে পড়ে প্রধান হিসাবে নাম ওঠে রিম্পা সাহা প্রামাণিকের। আর সেই কারণেই বিধায়করা অনুগামীরা এই ছক কষেছিলেন বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শশঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসের নাম প্রচুর মানুষের জমায়েত হয়। বোর্ড গঠনের আগে যাতে কোন অশান্তি না হয় তার জন্য প্রচুর সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয় পঞ্চায়েত অফিসের সামনে। অন্যদিকে ১০ জন সদস্য তাঁরা এলাকায় একটি গোপন ডেরায় আশ্রয় নিয়েছেন।
যদিও বিধায়কের বক্তব্য, “যারা অভিযোগ করছে, তারা তো সাত দিন আগেই বাড়িছাড়া হয়েছে। ওরা কোনওভাবে জানতে পেরেছে গোলক রায় প্রধান হচ্ছেন। ওরা নিজেদের লোক নিয়ে চলে গিয়েছিল। কাউকে অপহরণ করা হয়নি। এটা মিথ্যা কথা। দল যা বলবে, তাকেই আমরা প্রধান করব।”