কালনা: কচুরিপানা দিয়ে কী কী না হতে পারে… সেই তালিকা শুনিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, কচুরিপানাকে সুন্দরভাবে শুকিয়ে, তা দিয়ে ব্যাগ, বাজারের থলি, খাবারের থালা তৈরি করা যেতে পারে। গতবছর খড়্গপুরের ওই একই সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই কাশফুলে লেপ-বালিশের কথাও শুনিয়েছিলেন তিনি। আর এবার আস্ত একটা ‘কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্র’ তৈরির ভাবনা রাজ্যের। শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে সেই কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্র গড়ে তোলার তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল। কোথায় এই শিল্পকেন্দ্র তৈরি হবে, সেই জায়গাও চিহ্নিত হয়ে গিয়েছে। পূর্বস্থলী-১ ব্লকের সমুদ্রগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত তুলসীডাঙাতে। রাজ্য সরকারের তরফে এই কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্রের জন্য ৪৮ লাখ টাকা অনুমোদনও করা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন মমতার ক্যাবিনেটের অন্যতম সদস্য স্বপন দেবনাথ।
কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্র তৈরির জন্য সেই জমি শুক্রবার পরিদর্শন করে যান খাদি বোর্ডের আধিকারিক মানস গোস্বামী সহ অন্যান্য সরকারি আধিকারিকদের একটি বিশেষ দল। গোটা এলাকা ঘুরে দেখেন তাঁরা। আলোচনা করেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের সঙ্গেও। কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্র তৈরির পাশাপাশি একটি এই শিল্পের সঙ্গে আরও বেশি মানুষকে যুক্ত করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চায় রাজ্য। সেই লক্ষ্যে, একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও তৈরি করা হবে এখানে। সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভবন নির্মাণ নিয়েও আলোচনা হয় মন্ত্রীর সঙ্গে।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী যেদিন কচুরিপানা দিয়ে কী কী করা যায়, সেই তালিকা শুনিয়েছিলেন, তার অনেক আগে থেকেই কচুরিপানা শিল্পকে রপ্ত করে নিয়েছেন এলাকারই এক যুবক। রাজু বাগ। ডোবা, খাল, বিল থেকে তুলে আনা কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করে আসছেন বিভিন্ন ঘর সাজানোর জিনিস। সেই দেখে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এলাকায় গৃহবধূদের কচুরিপানা শিল্পে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আর এবার তা আরও ব্যাপক মাত্রা পেতে চলেছে। তৈরি হচ্ছে কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্র। মন্ত্রী জানাচ্ছেন, ‘এখানে একটি কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। সরকারকে জমি দান করা হয়েছিল। তারপর সরকার অর্থ মঞ্জুর করেছে। প্রথমে এখানে প্রশিক্ষণ হবে। তারপর কাঁচামাল রাখার জায়গা, প্রোডাকশন, বিপণন কেন্দ্র পুরোটাই হবে।’ মন্ত্রীমশাই চাইছেন, যাতে চলতি বছরের ডিসেম্বরেই এই কচুরিপানা শিল্পকেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা যায়।