পূর্ব মেদিনীপুর: বিজেপির সমর্থনে প্রধান হওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। অথচ শেখ সুফিয়ানের সেই জামাইকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার খোশমেজাজে দেখা যায় তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা দলীয় মুখপাত্র কুণাল ঘোষের সঙ্গে। কলকাতায় ‘শ্বশুর-জামাই’কে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনও করেন কুণাল। এরপরই কুণালের বিরুদ্ধে ক্ষোভের পারা চড়তে থাকে নন্দীগ্রামে। রবিবার সেখানে কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয় কুণালের। অভিযোগ, তৃণমূলের একাংশ এ কাজ করেছে। যদিও এসব অভিযোগ হেসে উড়িয়ে দেন কুণাল ঘোষ। বলেন, “ওসব সিপিএমের কেউ কেউ করেছে। শুভেন্দু অধিকারী ১০ হাজার ৪৫৭ ভোটে পিছিয়ে পড়ায় যাদের দুঃখ হয়েছে তারা এসব করেছে। তৃণমূল হইহই করে এগিয়ে যাওয়ায় যাদের দুঃখ হয়েছে তারা আমার কুশপুতুল পোড়াচ্ছে। মোগাম্বো খুশ হুয়া।”
নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের মহম্মদপুর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত হয়েছে নন্দীগ্রামের রাজনীতি। এই পঞ্চায়েতে মোট ১৮টি আসন। তৃণমূল ১২টিতে জয়ী হয়। ৬টি আসন পায় বিজেপি। এরপরই তৃণমূল বোর্ড গঠনের পথে এগোয়। কিন্তু সেখানে প্রধান পদপ্রার্থী হিসাবে তৃণমূলের দু’জন দাবিদার হয়ে ওঠে। সূত্রের খবর, তৃণমূলের শাহনেওয়াজ আলি খানকে প্রধান করা হবে বলে দলের তরফে চিঠি দেওয়া হয়। অন্যদিকে তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানের জামাই শেখ হাবিবুলও প্রধান হওয়ার দাবি তোলেন।
প্রধান নির্বাচনের সময় হাবিবুল তৃণমূলের তরফে নিজের নাম প্রস্তাব করেন। তাঁর পাশে দাঁড়ান দলের ৬ জন ও বিজেপির ৬ জন। অন্যদিকে শাহনেওয়াজের পক্ষে ভোট দেন ৬ জন। ফলে শেখ সুফিয়ানের জামাই ১২ ভোটে প্রধান হয়ে যান। এরপরই চর্চা শুরু হয়, বিজেপির সমর্থনে প্রধান পদ পেয়েছেন তৃণমূলের দাপুটে নেতা শেখ সুফিয়ানের জামাই। নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে বিক্ষোভও দেখানো হয়।
এরপরই কলকাতায় শনিবার শেখ সুফিয়ান ও শেখ হাবিবুলকে নিয়ে কুণাল ঘোষ সাংবাদিক সম্মেলন করেন। এরপরই রবিবার বিকেল ৫টায় নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের মহম্মদপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার মিলন বাজারে তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ কুণাল ঘোষের কুশপুতুল দাহ করেন।
এ প্রসঙ্গে তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মেঘনাথ পাল বলেন, “আমরা বিজেপি ৬টায় জিতি। তৃণমূল ১২টায় জেতে। আমরা প্রধান নির্বাচনের জায়গায় নেই। ওরাই প্রধান নির্বাচন করতে গিয়ে দ্বিধাভক্ত হয়ে যায়। দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায় দলের লোকেরাই। ৬-৬ ভোট পায়। আমরা তৃণমূলে অফিশিয়াল প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছি। সেক্ষেত্রে প্রধান হয়েছে। তৃণমূল কেন নিজের ঘর রক্ষা করতে পারছে না ওরাই জানে।” এ নিয়ে শেখ সুফিয়ানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে ফোনে তাঁকে পাওয়া যায়নি।