পুরুলিয়া: বাম আমলে বন্দুক কাঁধেই দাপিয়ে বেড়িয়েছেন গোটা এলাকা। বন্দুকের নলই হল ক্ষমতার উৎস, এই রাজনৈতিক আদর্শকে পাথেয় করেই দেখতেন বিপ্লবের স্বপ্ন। তবে ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরেই ফিরেছিল হুঁশ। মাওবাদের (Maoist Leader in Purulia) রাস্তা ছেড়ে ফিরেছেন সমাজের মূল স্রোতে। প্রাক্তন মাওবাদী কমান্ডার আনন্দ কুমারের স্ত্রী তনুজা কুমার এবার লড়ছেন পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election 2023)। হয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রার্থী। যা নিয়েই এখন বিস্তর চর্চা পুরুলিয়ার (Purulia) রাজনৈতিক মহলে।
একসময় জঙ্গলমহলের একাধিক জেলার মধ্যে মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিতি ছিল পুরুলিয়া জেলার বলরামপুর। বলরামপুর ব্লকের ঘাটবেড়া-কেরোয়া গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ কুমার। এক সময়ে অযোধ্যা স্কোয়াডের এরিয়া কমিটির কমান্ডার ছিলেন তিনি। স্কোয়াডে অবশ্য নন্দ কুমার নামেই বেশি পরিচিতি ছিল তাঁর। এলাকার মানুষও তাঁকে ওই নামেই চেনেন। শোনা যায় এক সময় বাংলা-ঝাড়খণ্ডের পুলিশের কাছে রীতিমতো ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছিলেন এই নন্দ। ২০১০ সালের ১১ আগস্ট বাঘমুন্ডির চড়িদা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। ২০১২ সালে মুক্তি। তাঁর বিরুদ্ধে ছিল মোট ১৯টি মামলা।
এদিকে রাজ্যে পালাবদলের পর ওই এলাকার অনেক মাওবাদীই সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসেন। বন্দুক ফেলে সাধারণ জীবন বেছে নিয়েছেন নন্দও। বর্তমানে পুলিশের স্পেশাল হোমগার্ড হিসাবে কাজও করছেন তিনি। গণতন্ত্রের প্রতি ফিরেছে পূর্ণ আস্থা।
এখন স্ত্রী ভোটে দাঁড়ানোয় বেশ খুশি তিনি। হোমগার্ডের কাজে যুক্ত থাকায় সরাসরি প্রচারে যেতে না পারলেও স্ত্রীর প্রতি পূর্ণ সমর্থনও রয়েছে তাঁর। স্বামীর রাজনৈতিক বোধকে পাথেয় করে এগিয়ে যেতে চাইছেন স্ত্রী তনুজাও। বলছেন, “আমি যখন বছর আটেক আগে গ্রামে আসি তখন এখানকার অবস্থা খুবই ভয়ঙ্কর ছিল। ধীরে ধীরে দিদির আমলে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে সেই উন্নয়নের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। জয় আসবেই।”