তমলুক: নির্বাচনের পর পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে জটলা কম হচ্ছে না গ্রাম বাংলায়। যেসব এলাকায় কোনও একটি দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি, সেখানে অন্যদের সমর্থনে বোর্ড গঠন চলছে। এমন অনেক ক্ষেত্রে বিজেপির সঙ্গেও একজোট হতে দেখা গিয়েছে সিপিএম-কংগ্রেসকে। পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনে বিজেপি বা তৃণমূলকে সিপিএমের যে সব জয়ী প্রার্থী সাহায্য করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। পূর্ব মেদিনীপুরে এ নিয়ে পদক্ষেপও করা হয়েছে। তৃণমূল ও বিজেপির সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রাখার অভিযোগে ৮ জনকে বহিষ্কার করেছে সিপিএম। অন্তর্ঘাতের জন্য ৬৯ জনকে শোকজ করা হয়েছে। এবং নির্বাচনে নিষ্ক্রিয় থাকার জন্য ২০০-র বেশি কর্মীকে নোটিস দিয়েছে সিপিএম।
সিপিআইএমের জয়ী প্রার্থীর তৃণমূল ও বিজেপি যোগের প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, “পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে তৃণমূল ও বিজেপিকে যদি সিপিআইএমের জয়ী কোনও সদস্য সমর্থন দিয়ে থাকেন, তাঁর বিরুদ্ধে পার্টি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শুধু পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই নয় সারা রাজ্যের ক্ষেত্রেই তা চলবে। কিন্তু সিপিআই-কে ঠেকাতে তৃণমূল ও বিজেপি যেখানে জোট বেঁধেছিল তাঁদের সদস্যদের বিরুদ্ধে তৃণমূল বা বিজেপি কেউ কি ব্যবস্থা নেবে? এমন সাহস তাদের নেই।” এর পরই তিনি বলেছেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমাদের অবস্থান ছিল অত্যন্ত পরিষ্কার। বিজেপি তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধেই একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে। সারা রাজ্যে তাই হয়েছে। ৯৮ শতাংশ তাই হয়েছে। কিন্তু দুই এক জায়গায় ব্যতিক্রম হয়েছে। কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে এলাকার ইস্যুতে ভাবিত হয়ে তৃণমূলকে ঠেকাতে বিজেপিকে বা বিজেপিকে ঠেকাতে তৃণমূলকে বোর্ড গঠনে সাহায্য করেছেন। যদিও সেই সংখ্যাটা অত্যন্ত নগণ্য।”
নদিয়ার রুইপুকুর, বাঁকুড়ার বৃন্দাবনপুর, পুরুলিয়ার ধানারা, পূর্ব মেদিনীপুরের অমৃতবেড়িয়ার মতো অনেক জায়গাতেই সিপিএমের জয়ী সদস্যদের বিরুদ্ধে তৃণমূল বা বিজেপিকে সাহায্যের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে কড়া অবস্থান নিচ্ছেন আলিমুদ্দিনও। কিন্তু তা তৃণমূলস্তরে কতটা প্রয়োগ করা সম্ভব হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। রাজ্যের শীর্ষনেতৃত্বের এই বিধিনিষেধ আদেও কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে রাজনৈতিকর মহলের একাংশের।