ইসলামপুর: এবার কার্যত দলনেত্রীকে হুঁশিয়ারি দিলেন তাঁরই দলের বিধায়ক। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের (Islampur) তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ভোটের পরও হিংসা থামছে না। এই হিংসা যদি না থামে তাহলে রাজ্যসভার নির্বাচনে অন্য ভাবনাচিন্তা করবেন। আব্দুল করিম চৌধুরীর কথায়, “সন্ত্রাস যদি বন্ধ না হয়, তাহলে আপনার নির্দেশে রাজ্যসভার ভোট দেব না। আর বিধানসভার কোনও বিলকেও সমর্থন করব না।”
ইসলামপুরে তৃণমূলের অন্দরে তুমুল আকচাআকচি। গোষ্ঠীকোন্দল এতটাই প্রবল যে, পঞ্চায়েত ভোটে দলের প্রতীকে দাঁড়ানো প্রার্থীকে সমর্থনের বদলে নির্দল কাঁটা বিছিয়ে দিয়েছেন বর্ষীয়ান এই বিধায়ক। প্রকাশ্যে সে কথা নিজেই বলেছেন। বলেছে, ভোটলুঠের ভয়ে নাকি নির্দলের হয়ে লড়তে হয়েছে (সমর্থন) তাঁকে। ভোটের পরও তাঁর গোষ্ঠীর লোকজনের সঙ্গে অশান্তির অভিযোগ উঠছে কানাইয়ালাল আগরওয়াল গোষ্ঠীর। আব্দুল করিম চৌধুরীর কথায়, “আমার লোক মারা যাবে আর আমি বিলে সই করব?”
ইতিমধ্যেই ভোটের হিংসায় নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও পরিবারের একজনকে হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবারই নবান্ন থেকে এই ঘোষণা করেন তিনি। মমতার সেই ঘোষণারও বিরোধিতা তাঁর দলেরই বিধায়কের গলায়। আব্দুল করিম চৌধুরীর কথায়, এসব প্রলোভন দেখানো।
বিধায়ক বলেন, “একটা লোককে মেরে ফেলবে তারপর বলবে যে তোমার পরিবারকে কিছু দিচ্ছি। আজ এত লোক মরল, ২৪-এ ৮০টা লোক মরবে। আমি মরলে ২ লাখ টাকা পরিবারকে দিয়ে দেবে, ভাইকে চাকরি দিয়ে দেবে। তারপর ২০২৬-এ ২০০ লোক মরে যাবে। মরণ ঝাঁপ দেবে এই টোপে।” করিম চৌধুরী প্রশ্ন তোলেন, রাজীব সিনহার নিয়োগ নিয়েও। তাঁর কথায়, এক সময় মুখ্যসচিব পদে থেকে সবরকম সুবিধা নিয়ে কীভাবে রাজীব সিনহা রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হলেন? কী করে পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকার পরও একদিনে ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিলেন?
আব্দুল করিম চৌধুরী এর আগেও একাধিকবার দলনেত্রীর নাম করে তোপ দেগেছেন। বারবারই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, অন্য পথে হাঁটার। অভিষেক যখন নবজোয়ারে ইসলামপুর গিয়েছিলেন, সেই সময়ও সুর চড়াতে শোনা গিয়েছিল তাঁকে। যাননি নবজোয়ারের অধিবেশনে। বলেছিলেন, তিনি ‘সিনিয়র মোস্ট এমএলএ’। তাঁকে অভিষেক এসে নিয়ে গেলে, তবে যাবেন।