উত্তর দিনাজপুর: চোর সন্দেহে এক ব্যাক্তিকে বেধড়ক মারধর করে খুনের অভিযোগ। মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের গৌরি গ্রাম পঞ্চায়েতের ইটাল গ্রাম। অভিযোগ, রাতভর পেটানো হয়েছে ওই ব্যক্তি। এমনকি জল চাইলেও, তা দেওয়া হয়নি তাঁকে। যখন গণপিটুনি চলছিল, তখনই গ্রামবাসীদের একাংশ থানায় খবর দেন। কিন্তু ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পুলিশ রাতে ঘটনাস্থলে আসেনি। এক্ষেত্রে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তারও অভিযোগ উঠছে। সকালে পুলিশ গিয়ে তাঁকে পাটক্ষেত থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রহিম শেখ। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্ত হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামে বেশ কিছুদিন ধরেই চুরির ঘটনা ঘটছিল। রহিম শেখ নামে ওই যুবককে এলাকায় ইতঃস্তত ঘোরাফেরা করতে দেখেছিলেন গ্রামবাসীরা। তাতেই সন্দেহ বাড়ে। রহিমকে ঘিরে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন গ্রামবাসীরা। কথাতেও একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়ে।
এরপর শুরু হয় মারধর। প্রথমে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড় চলতে থাকে। এরপর তাঁকে বেঁধে রেখে বেধড়ক মারধর করা হয়। লাঠি, বাঁশ দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ। এরপর যখন রীতিমতো মৃত্যুমুখে দাঁড়িয়ে ওই যুবক, তখন তিনি জল চেয়েছিলেন। অভিযোগ, তখন তাঁকে জল পর্যন্ত খেতে দেওয়া হয়নি। গোটা দৃশ্য় আবার গ্রামবাসীদেরই কেউ মোবাইল বন্দি করেন। তা ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত।
রাতেই গ্রামবাসীদের তরফে থানায় খবর দেওয়া হয়। গোটা বিষয়টি জানানোর পরও পুলিশ রাতে গ্রামে আর আসেননি বলে অভিযোগ। খবর চাউর হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। সকালে আসে পুলিশ। তখন পাটক্ষেতে পড়ে ছিল ওই যুবকের নিথর শরীর। তাঁকে উদ্ধার করে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় বেশ কয়েক জনকে পুলিশ আটক করেছে বলে জানা গিয়েছে। গ্রামবাসীদের তরফে দাবি, সময়মতো পুলিশ গেলে তাঁকে বাঁচানো যেত বলে দাবি মৃতের পরিবারের। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত চলছে। এর থেকে বেশি কিছু বলতে চায়নি পুলিশ।