চোপড়া: মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ছররা গুলিতে বিদ্ধ হন ১৪ জন তৃণমূল নেতা। এখনও অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় আগেই সামনে এসেছিল তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। সেই ঘটনার উত্তাপ এখনও কাটেনি। এবার ২ দিনের ব্যবধানে ফের চলল ছররা গুলি। আহত আরও একজন। এহেন পরিস্থিতিতে এবার দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন খোদ বিধায়ক। চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানের দাবি, দলীয় নেতৃত্বের ভুল সিদ্ধান্তেই নাকি এলাকায় বাড়ছে গোলমাল। শুধু তাই নয়, পুলিশ দলের আর এক অংশের হয়ে কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার তিনি এই অভিযোগ করার পরই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান নুড়ি বেগম দাবি করেন, তাঁর বাড়িতে আচমকা হানা দিয়েছে পুলিশ, তুলেও নিয়ে গিয়েছে কয়েকজনকে। সব মিলিয়ে এখনও উত্তপ্ত ইসলামপুরের সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। এই বিষয়ে অবশ্য ইসলামপুর পুলিশ জেলার পুলিশ আধিকারিকরা কেউ মুখ খোলেননি।
গত মঙ্গলবার সুজালি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পরপর গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। আহতদের মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তড়িঘড়ি। কেউ কেউ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ তুললেও শাসক দলের একাংশের দাবি ছিল, নির্দল প্রার্থীদের তরফে গুলি চালানো হয়েছে। সেই ঘটনার সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে সুজালি এলাকা থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চোপড়া ব্লক তৃণমূলের একটি সভা ছিল। সেই সভা থেকে বেরিয়ে দলের একাংশের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন বিধায়ক হামিদুল রহমান। তিনি বলেন, ‘পুলিশ এলাকায় ওদের হয়ে কাজ করছে, আমাদের একজনের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হল, অথচ তার অভিযোগ নেওয়া হচ্ছে না।’ কারা এই ওরা? স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের দাবি, জেলা সভাপতি কানাইয়া আগরওয়ালের অনুগামীদের কথাই বোঝাতে চেয়েছেন হামিদুল রহমান।
বিধায়ক এই অভিযোগ করার কয়েক ঘণ্টা পরই সুজালীর প্রধান নুড়ি বেগম দাবি করেন, তাঁর বাড়িতে আচমকা অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তিনি নাকি নিজের বাড়িতে পঞ্চায়েতের সদস্যদের নিয়ে একটি বৈঠক করছিলেন, সেই সময়েই হঠাৎ পুলিশ সেখানে যায় ও দু’রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। সেখান থেকেই নাকি বেশ কয়েকজনকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। এদিকে, বৃহস্পতিবার যিনি আহত হয়েছেন, সেই যুবকের দাবি, পুলিশি অভিযান চলার সময় তিনি প্রধানের বাড়ির কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময়ই আহত হন তিনি।
পঞ্চায়েত প্রধান নুড়ি বেগমের স্বামী আব্দুল হকের দাবি, পুলিশ তাঁদের রীতিমতো হুমকি দিচ্ছে। বিধায়ক হামিদুলের অনুগামী বলে পরিচিত আব্দুল হক বলছেন, দলের আর এক অংশ অর্থাৎ ইসলামপুর ব্লক তৃণমূলের আওতায় চলে গেলে নাকি আর কোনও গণ্ডগোল থাকবে না। ইসলামপুর তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফে এই বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি কেউ।