Bangladesh: ৪০ টনের কন্টেইনারের নীচে চাপা পড়ল গাড়ি, কীভাবে রক্ষা পেলেন আরোহী পাঁচজন?

Rajib Khan | Edited By: Sanjoy Paikar

Aug 06, 2023 | 6:41 PM

Container truck crushes a car in Chattogram: কী করে ঘটল এই চমৎকার? কিছুটা ভাগ্য, আর বাকিটা স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিত বুদ্ধি। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এই ভাবে বেঁচে ফেরাটা, অলৌকিক ঘটনা ছাড়া কিছু নয়।

Bangladesh: ৪০ টনের কন্টেইনারের নীচে চাপা পড়ল গাড়ি, কীভাবে রক্ষা পেলেন আরোহী পাঁচজন?
এই রকম ভয়ঙ্কর অবস্থায় চাপা পড়েছিল গাড়িটি
Image Credit source: Twitter

Follow Us

ঢাকা: বিদেশ থেকে সদ্য দেশে ফিরেছিলেন প্রবাসী বাঙালি আবু বকর। শনিবার (৫ আগস্ট) সকালে শ্বশুর, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে ফটিকছড়ির মাইজভান্ডারের বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি। আউটার রিং রোড ধরে এসে সীতাকুন্ডের ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের সামনে ইউটার্ন নিতে গিয়েছিল গাড়িটি। আর সেই সময়ই ঘটে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। পিছন থেকে ৪০ টন ওজনের একটি কন্টেইনারবাহী একটি লরি আচমকা ব্রেক কষেছিল। তারপর, ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়েছিল আবু বকরদের গাড়িটির উপর। তারপরও নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছেন প্রত্যেকেই।

কী করে ঘটল এই চমৎকার? কিছুটা ভাগ্য, আর বাকিটা স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিত বুদ্ধি। জানা গিয়েছে, গাড়িটি কন্টেইনারের তলায় চাপা পড়ার পর, গাড়িটি থেকে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ করে আর্তনাদ করতে থাকেন আবু বকরের পরিবার। ছুটে এসেছিলেন আশপাশের লোকজন। দুর্ঘটনাস্থলের পাশেই ছিল একটি আসবাবপত্রের দোকান। দুর্ঘটনার পরপরই সেই দোকান থেকে বেশ কিছু কাঠের তক্তা এনে কন্টেইনারটির নীচে বসিয়ে দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে, ৪০ টন ওজনের কন্টেইনারটির সম্পূর্ণ চাপ পড়েনি নীচে থাকা গাড়িটির উপর।

পুলিশ ও দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসার আগে, স্থানীয়রা যদি বুদ্ধি করে এই কাজটি না করতেন, তাহলে ওই পরিবারের মৃত্যু নিশ্চিত ছিল। কাঠের তক্তা দিয়ে কন্টেইনারটিকে আটকানোর ফলে, গাড়িটি পুরোপুরি চিড়েচ্য়াপ্টা হয়ে যায়নি। গাড়িটির পাঁচ আরোহী কোনওমতে চাপা পড়া গাড়িটির মধ্যে গুটিসুঁটি মেরে শুয়ে-বসে ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাঁরা ক্রমাগত সাহায্য চাইছিলেন। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষে খালি হাতে তাঁদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

এরপর, ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা এবং দমকল বিভাগের কর্মীরা আসেন ঘটনাস্থলে। প্রথমে, শক্তিশালী দুটি ক্রেন দিয়ে কন্টেইনারটিকে গাড়ির উপর থেকে সরানো হয়। তারপর, বৈদ্যুতিক কাটার যন্ত্র দিয়ে গাড়ির বডি কেটে ওই পাঁচজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন দনকল কর্মীরা। তাঁদের মধ্যে দুজনের হাল্কা আঘাত থাকায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। তবে, তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল। মোটের উপর সকলে অক্ষতই আছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, এই ভাবে বেঁচে ফেরাটা, অলৌকিক ঘটনা ছাড়া কিছু নয়। কারণ গাড়িটি একেবারে লরিটির নীচে চলে গিয়েছিল। আতঙ্কে কান্নাকাটি করছিলেন গাড়ির আরোহীরা। চট্টগ্রামের স্থানীয় বারো আউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি, বেলালউদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেছেন, “অলৌকিকভাবে তাঁরা বেঁচে গিয়েছেন। ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। চালকের আঘাত বেশি হওয়ায়, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”

এদিকে, এই ঘটনার কোনও মৃত্যু না হলেও, হাইওয়েতে বেপরোয়াভাবে লরি ও কন্টেইনার ট্রাক চলাচল নিয়ে যারপরনাই অসন্তুষ্ট সাধারণ মানুষ। এই ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে নয়া নিয়ম জারির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে লরি ও দুমড়েমুচড়ে যাওয়া গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। লরির চালকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

Next Article