চট্টগ্রাম: বর্ষার শুরুতেই বিপর্যস্ত চট্টগ্রাম (Chattogram)-সহ বাংলাদেশের (Bangladesh) ৪ পার্বত্য জেলা। মূলত, বন্যা ও ভূমিধসে বিধ্বস্ত চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দারবান। এই সমস্ত জেলায় নীচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি মেইন সড়ক থেকে রেলপথ পর্যন্ত জলের নীচে চলে গিয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলগুলিতে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে সেনাবাহিনী (Bangladesh Army)।
মূলত, এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতেই প্লাবিত হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের রেলপথ, সড়কপথ। চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগড়া, হাটহাজারী, রাউজান-সহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। টানা বৃষ্টিপাতের জেরে পার্বত্য এলাকাগুলিতে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। এর উপর বৃষ্টিপাত এখনও চলছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে লক্ষ-লক্ষ মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে কাজে লাগানো হয়েছে সেনাবাহিনীকে। বিভিন্ন স্থানে বন্যা-দুর্গতদের হাতে ত্রাণ তুলে দিচ্ছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
চট্টগ্রামের মতো একই অবস্থা পর্যটন জেলা, খাগড়াছড়ির। এই জেলার সদর-শহরে চেঙ্গী নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। যার ফলে নীচু এলাকাগুলি প্লাবিত হয়েছে। ফলে খাগড়াছড়ি পুরসভার মুসলিমপাড়া, মেহেদিবাগ, খবংপুড়িয়া-সহ কয়েকটি গ্রামের শত-শত পরিবার জলবন্দি হয়ে রয়েছে। জেলা সদর ছাড়াও টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন উপজেলায় নদী ও পাহাড়ি ঝরনার জল বেড়ে যাওয়ায় নীচু এলাকাগুলি প্লাবিত হচ্ছে। টানা বৃষ্টির জেরে অনেক স্থানে পাহাড় ধসের ঘটনাও ঘটেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কেননা বিগত বছরগুলিতে বৃষ্টির জেরে পাহাড়ে ধসের ঘটনায় অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।
বন্যা-দুর্গতদের জন্য অবশ্য ত্রাণের ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন। কেবল খাগড়াছড়ি জেলার ৯ উপজেলায় ১৩৩টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। নীচু, প্লাবিত এলাকার বাসিন্দাদের সেখানে নিয়ে আসা হয়েছে। যদিও ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া লোকজন প্রশাসনের তরফে কোনও সহায়তা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও সেই অভিযোগ খণ্ডন করে খাগড়াছড়ি পুরসভার প্যানেল মেয়র শাহ আলম বলেন, শুকনো খাবার বিতরণের প্রস্তুতি চলছে। দমকল বাহিনী-সহ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্ধারকর্মীরাও ত্রাণ বিতরণে প্রস্তুত রয়েছে।
খাগড়াছড়ির মতো বিপর্যস্ত অবস্থা অন্য দুই পর্যটন জেলা রাঙ্গামাটি ও বান্দারবানের। এই দুই জেলায় অসংখ্য পর্যটক আটকে পড়েছেন। বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। যদিও এই পরিস্থিতির মধ্যেও পর্যটকের ঢল কমেনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে সেনাবাহিনী।