মস্কো: মাস খানেক আগেই বিদ্রোহ শুরু করেছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। সরাসরি হুমকি দিয়েছিলেন, ভ্লাদিমির পুতিন(Vladimir Putin)-কে রাশিয়ার মসনদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত করার। তারই কি মাশুল দিলেন প্রিগোজিন? বুধবার রাশিয়ায় ভেঙে পড়ে একটি বিমান। বিমানে থাকা ১০ যাত্রীরই মৃত্যু হয় দুর্ঘটনায়। জল্পনা ছিল, রাশিয়ার ভাড়াটে সৈন্য বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন(Yevgeny Prigozhin)-ও ওই বিমানে ছিলেন। সেই জল্পনাতেই এবার সিলমোহর দিল রাশিয়া। সরকারিভাবে জানিয়ে দেওয়া হল, বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে প্রিগোজিনের।
বুধবারই রুশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর মেলে, মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গে যাওয়ার পথে ১০ জনকে নিয়ে ভেঙে পড়ে একটি বিমান। নিহত যাত্রীদের তালিকায় নাম রয়েছে ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান প্রিগোজিনেরও। পরে এক রুশ শীর্ষ কর্তাও এই খবরে সিলমোহর দেন। জানান, প্রিগোজিনের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবারই আফ্রিকার মরুভূমি থেকে সোশ্যাল মাধ্যমে ভিডিয়ো বার্তা পোস্ট করেন প্রিগোজিন। সেখান থেকেই আইএস এবং আল কায়দার বিরুদ্ধে লড়াই শুরুর কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু একদিনও কাটল না, তার আগেই খবর মিলল, বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে প্রিগোজিনের। এরপর থেকেই প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়েছে যে জুন মাসে পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করারই মাশুল গুনলেন ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান?
রাশিয়ার জরুরি পরিস্থিতি মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, সেন্ট পিটার্সবার্গগামী বিমানে ৩ ক্রু সদস্য সহ মোট ১০ জন যাত্রী ছিলেন। তার মধ্যে একজন ছিলেন ইয়েভগেনি প্রিগোজিনও। যাত্রী তালিকায় নাম রয়েছে দিমিত্রি উটকিনেরও, যিনি ওয়াগনার বাহিনীর যাবতীয় কার্যকলাপ পরিচালন করতেন। অতীতে রাশিয়ার গোয়েন্দা বাহিনীর সঙ্গেও কাজ করেছিলেন দিমিত্রি।
দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরই রোসাভিয়াতসিয়ার তরফে একটি বিশেষ কমিশন গঠন করা হয় বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত করার জন্য। রাশিয়ার তদন্তকারী কমিটির তরফেও জানানো হয়েছে, বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে এখনও অবধি ৮ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তার মধ্যে প্রিগোজিনের দেহ রয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।
প্রিগোজিনের মৃত্যুর খবর শুনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, “আমি জানি না ঠিক কী হয়েছে, তবে আমি এই খবরে বিস্মিত নই। রাশিয়ায় এমন কিছু হয় না, যার পিছনে পুতিনের হাত থাকে না। তবে এই বিষয়ে আমি বিশেষ কিছু জানি না যে জবাব দিতে পারব।”
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের পরামর্শদাতা মাইখ্যালো পোদোলিয়াকও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে লেখেন, “এই বিমান দুর্ঘটনা আসলে ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে রাশিয়ার ধনী ব্যক্তিদের উদ্দেশে পুতিনের বার্তা। সাবধান! বিরোধিতার অর্থই হল মৃত্যু।”