TV9 Bangla Explained on Yevgeny Prigozhin: হটডগ বিক্রেতা থেকে পুতিনের শেফ, কে এই ইয়েভগেনি, যাঁর ত্রাসে কাঁপছেন পুতিনও?

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Jun 24, 2023 | 6:07 PM

TV9 Bangla Explained on Yevgeny Prigozhin: পুতিনের সাহায্য়েই তিনি ক্রেমলিনে খাবার সরবরাহের বরাত পান। দেখতে দেখতেই তিনি হয়ে যান পুতিনের শেফ। ২০১৪ সালে হঠাৎ পেশা বদল করেন ইয়েভগেনি। ঘোষণা করেন নিজের ব্য়ক্তিগত মিলিটারি সংস্থা ওয়াগনারের। তবে বহু বছর ধরেই তিনি এই ভাড়াটে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেন।

TV9 Bangla Explained on Yevgeny Prigozhin: হটডগ বিক্রেতা থেকে পুতিনের শেফ, কে এই ইয়েভগেনি, যাঁর ত্রাসে কাঁপছেন পুতিনও?
ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজ়িন।
Image Credit source: TV9 বাংলা

Follow Us

মস্কো: প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে যুদ্ধ চলছে। তার মধ্যেই ঘরের অন্দরে শুরু হল বিদ্রোহ। দেশের অন্দর-বাইরে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কারণ তাঁর ‘হাতের মুঠো’য় থাকা ভাড়়াটে সশস্ত্র বাহিনীই দেশের সেনার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছে ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজ়িন (Yevgeny Prigozhin)। শনিবারই তিনি রাশিয়ার সেনার সদর দফতরের অন্দরে ঢুকে পড়েছেন। হুমকি দিয়েছেন সামনে আসা সবকিছু গুঁড়িয়ে দেওয়ার। পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন(Vladimir Putin)-ও। এই বিদ্রোহকে তিনি “বিশ্বাসঘাতকতা” বলে তকমা দিয়েছেন। ভাই ভাইয়ের পিঠে ছুরি মেরেছেন বলেও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। এখন প্রশ্নটা হল কে এই ইয়েভগেনি প্রিগোজ়িন? কেনই বা তাঁর এত দাপট রাশিয়ায়? প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গেও বা তাঁর সম্পর্ক কী?

হটডগ বিক্রেতা থেকে কোটিপতি-

ছা-পোষা সাধারণ ঘরের ছেলে। সেখান থেকেই কখনও পেটের দায়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিক্রি করেছেন হটডগ, কখনও আবার কোটি টাকার প্রমোদতরীতে গা ভাসিয়েছেন। নিজেকে ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দিলেও রাশিয়ার ঘরে ঘরে তিনি পরিচিত প্রেসিডেন্ট পুতিনের নিজস্ব ভাড়াটে সশস্ত্র বাহিনী ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান হিসাবে।

১৯৬১ সালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে জন্ম ইয়েভগেনি প্রিগোজ়িনের। ওই একই শহরে জন্মগ্রহণ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। বর্তমানে কয়েকশো কোটি টাকার মালিক হলেও শৈশবটা খুব একটা মধুর ছিল না। অল্প বয়সেই বাবার মৃত্যুর পর ইয়েভগেনিকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় স্পোর্টস অ্যাকাডেমিতে। কিন্তু ক্রীড়া জগতে কেরিয়ার গড়ার আগেই তাঁকে যেতে হয় জেলে। চুরি থেকে ডাকাতির মতো একাধিক অভিযোগ ছিল তাঁর নামে। রাশিয়ার কঠোর আইনে প্রায় ১৫ বছর জেলে থাকেন ইয়েভগেনি।

১৯৯০-র দশকে জেল থেকে বেরনোর পর সেন্ট পিটার্সবার্গেই রাস্তায় হটডগ বিক্রি করতে শুরু করেন ইয়েভগেনি। সেই ব্যবসা রমরমিয়ে চলে। লাভের টাকা দিয়ে বেশ কিছু দামি রেস্তোরাঁ ও মদের দোকান খোলেন ইয়েভগেনি। তবে তাঁর ভাগ্য বদলে দেয় নিউ আইল্য়ান্ডের রেস্তোরাঁ। উদ্বোধনের কয়েক বছরের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয় হয় ওই রেস্তোরাঁ, রাশিয়ার নামী-দামি ব্যক্তিত্বরা ওই রেস্তোরাঁয় আসতে শুরু করেন। আনাগোনা বাড়ে ভ্লাদিমির পুতিনেরও। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও তিনি একাধিক বিদেশি অতিথিদের নিয়ে আসেন ওই রেস্তোরাঁয়। সেখানেই ইয়েভগেনির সঙ্গে পরিচয় হয় পুতিনের।

পুতিনের সাহায্য়েই তিনি ক্রেমলিনে খাবার সরবরাহের বরাত পান। দেখতে দেখতেই তিনি হয়ে যান পুতিনের শেফ। ২০১৪ সালে হঠাৎ পেশা বদল করেন ইয়েভগেনি। ঘোষণা করেন নিজের ব্য়ক্তিগত মিলিটারি সংস্থা ওয়াগনারের। তবে বহু বছর ধরেই তিনি এই ভাড়াটে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা অস্বীকার করেন। এমনকী অনেকের বিরুদ্ধে মামলাও করেন ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গে তাঁর নাম জড়ানোর জন্য। শোনা যায়, কেজিবির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন ইয়েভগেনি। শেষে ২০২১ সালে তিনি স্বীকার করে নেন যে তিনিই ওয়াগনার গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। নিজের সংস্থায় প্রচুর নিয়োগও শুরু হয়।

 ওয়াগনার গ্রুপের আধিপত্য-

পুতিনের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল ইয়েভগেনির ওয়াগনার বাহিনী। সিরিয়া ও মালিতে সংঘর্ষের সময় পুতিন ওই ওয়াগনার বাহিনীকেই পাঠিয়েছিলেন। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধে যখন ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল রুশ বাহিনী, সেই সময় পুতিন ওয়াগনার বাহিনীকেই পাঠান যুদ্ধক্ষেত্রে। যুদ্ধে যাওয়ার জন্য ইয়েভগেনি প্রায় ১০ হাজার অপরাধীকেও নিয়োগ করেন। রাশিয়ার বিভিন্ন জেলে ঘুরে তিনি অপরাধীদের নিয়োগ করেন। যদি অর্ধেক বছর যুদ্ধক্ষেত্রে টিকে যান, তবে বাকি সাজা মাফ করে দেওয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।

দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়া ইউক্রেনের বাখমুট দখল করার চেষ্টা করলেও, ইউক্রেনের বাহিনীর সঙ্গে পেরে উঠছিল না। কিন্তু ইয়েভগেনির ওয়াগনার বাহিনী যুদ্ধে নামতেই কয়েক দিনের মধ্যে বাখমুট দখল করে নেয়।

ক্রেমলিনের সঙ্গে বিরোধ-

যুদ্ধক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে তাঁর বিরোধ শুরু হয়। তাঁর অভিযোগ ছিল, ওয়াগনার গ্রুপ ইউক্রেনে যে সাফল্য পাচ্ছে, তার কৃতিত্ব চুরি করে নিচ্ছে রুশ সেনা। মস্কোর কূটনীতিরও সমালোচনা করেন তিনি। এবার সরাসরি রুশ সেনা বাহিনীর প্রধানের বিরুদ্ধেই যুদ্ধে নামল ইয়েভগেনির ওয়াগনার বাহিনী।

Next Article