বারাসত লোকসভা কেন্দ্র নির্বাচনের ফলাফল
Dr Kakoli Ghoshdastidar |
692010 |
TMC |
Won |
Swapan Majumder |
577821 |
BJP |
Lost |
Tapas Banerjee |
121440 |
AISF |
Lost |
Sanjib Chatterjee |
100000 |
AIFB |
Lost |
Smritikana Haoladar |
5787 |
BSP |
Lost |
Saifuddin Mondal |
3827 |
IND |
Lost |
Swapan Majumdar |
3085 |
IND |
Lost |
S Mukhtar Ahmed |
2647 |
IND |
Lost |
Sefali Dey |
2252 |
BNARP |
Lost |
Sadhan Ghosh |
2047 |
SUCI |
Lost |
Bikash Sarkar |
1929 |
MPOI |
Lost |
Mohan Lal Adhikary |
1864 |
IND |
Lost |
রাজ্য রাজনীতির নিরিখে বারাসত লোকসভা কেন্দ্র এবার যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এই লোকসভার মধ্যেই রয়েছে হাবড়া বিধানসভা কেন্দ্র। হাবড়ার বিধায়ক রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, যিনি এখন রেশন দুর্নীতি মামলায় জেলে রয়েছেন। আছে মধ্যমগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র, যেখানকার বিধায়ক রথীন মল্লিক রাজ্যের বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী। আবার দেগঙ্গাও রয়েছে এই লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে, যেখান থেকে গ্রেফতার হয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ বাকিবুর রহমান। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন লোকসভা ভোটে বারাসত যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বারাসত লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে মোট সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র। হাবড়া, অশোকনগর, রাজারহাট-নিউটাউন, বিধাননগর, মধ্যমগ্রাম, বারাসত ও দেগঙ্গা। সাতটি বিধানসভাই বর্তমানে তৃণমূলের দখলে। একুশের বিধানসভা ভোটে সবুজ আবির উড়েছে সাত বিধানসভা কেন্দ্রেই। বারাসতের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারও ইতিমধ্যে জয়ের হ্যাটট্রিক করে ফেলেছেন লোকসভায়। এই বারাসত লোকসভা কেন্দ্রকে তৃণমূল যে একপ্রকার নিজেদের শক্ত ঘাঁটি বানিয়ে ফেলেছে, তা বললে অত্যুক্তি হয় না। তবে বর্তমানে রেশন দুর্নীতির অভিযোগ ও পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জনতা-জনার্দনের রায় কোন দিকে যায়, সেদিকেই নজর থাকছে সকলের। সিংহের গর্জন থামাল ঘাসফুলের জোয়ার এককালে এই বারাসত ছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্ত ঘাঁটি। বারাসতের রাজনীতির আনাচে কানাচে আজও ঘুরে বেড়ায় প্রয়াত ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা চিত্ত বসুর কথা। বারাসত থেকে পাঁচবারের সাংসদ তিনি। তবে চিত্ত বসু পরবর্তী জমানা থেকে বারাসতে ক্রমেই ক্ষয়িষ্ণু হতে শুরু করেছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্তি। এককালে যেখানে ফরওয়ার্ড ব্লকের সিংহের গর্জন শোনা যেত, সেই বারাসত কীভাবে হয়ে উঠল ঘাসফুলের দুর্গ? উত্তর খুঁজতে গেলে বিগত কয়েকটা লোকসভার হিসেব নিকেশ বুঝতে হবে। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোট ২০০৯ সালের লোকসভায় ফরওয়ার্ড ব্লক এখান থেকে প্রার্থী করেছিল সুদিন চট্টোপাধ্যায়কে। অধ্যাপক মানুষ। রাজনীতিতে তথা সমাজে স্বচ্ছ্ব ভাবমূর্তির ব্যক্তি হিসেবেই পরিচিত সুদিন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল ভোটে দাঁড় করিয়েছিল কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে। লড়াই মোটেই সহজ ছিল না। কিন্তু সুদিনবাবুকে প্রায় সোয়া এক লাখ ভোটে হারিয়ে সাংসদ হন কাকলি। কাকলি ঘোষ দস্তিদার পেয়েছিলেন ৫ লাখ ২২ হাজার ৫৩০ ভোট। সুদিন চট্টোপাধ্যায়ের ঝুলিতে যায় ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৯ ভোট। বিশাল ব্যবধানে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীকে হারিয়ে সাংসদ হন কাকলি। লড়াই ছিল মূলত দ্বিমুখীই। কংগ্রেস, বিজেপি তখন হিসেবেই ছিল না। বিজেপি প্রার্থী ব্রতীন সেনগুপ্ত পেয়েছিলেন ৫৫ হাজারের কিছু বেশি ভোট। আর কংগ্রেসের কুমারী কমলা দাস পেয়েছিলেন সাড়ে সাত হাজারের কিছু বেশি ভোট। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোট এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি কাকলিকে। ২০১৪ সালে আরও বড় ব্যবধানে জয়। বিরোধীরা কোনও খামতি রাখেনি চেষ্টায়। বাঘা-বাঘা মুখকে প্রার্থী করা হয়েছিল। ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী ছিলেন মোর্তাজা হোসেন। বিজেপি এনেছিল তারকা প্রার্থী জাদুকর পি সি সরকার জুনিয়রকে। কংগ্রেস থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল ঋজু ঘোষালকে। প্রত্যেকেই অতি পরিচিত মুখ। কিন্তু এর মধ্যেও ব্যাপক ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে নেন কাকলি। ৫ লাখ ২৫ হাজার ৩৮৭টি ভোট পান তিনি। ১ লাখ ৭৩ হাজারেরও বেশি ভোটে জেতেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ফরওয়ার্ড ব্লকের মোর্তাজা হোসেন পেয়েছিলেন সাড়ে তিন লাখে কিছু বেশি ভোট। তারকা প্রার্থীকে নিয়ে এসেও বিশেষ ফায়দা করতে পারেনি বিজেপি। পি সি সরকার জুনিয়র পেয়েছিলেন ২ লাখ ৯৬ হাজার ভোট। আর কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছিল ৪০ হাজারের কিছু বেশি ভোট। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট দিল্লিতে ততক্ষণে মোদী ম্যাজিক দেখতে শুরু করে দিয়েছে বঙ্গবাসী। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে তার অনেকটা প্রভাব পড়েছিল বারাসতেও। ভোটে জিতলেও, ব্যবধান অনেকটা কমে আসে কাকলির। বারাসতে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে বিজেপি। গত লোকসভা ভোটে কাকলি ঘোষ দস্তিদার পেয়েছিলেন ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৪ ভোট। আগের বারের তুলনায় জয়ের ব্যবধান কমে হয় ১ লাখ ১০ হাজারের কিছু বেশি। বিজেপির মৃণালকান্তি দেবনাথ পান ৫ লাখ ৩৮ হাজার ২৭৫ ভোট। ফরওয়ার্ড ব্লকের হরিপদ বিশ্বাস পেয়েছিলেন প্রায় সোয়া এক লাখের কাছাকাছি ভোট। কংগ্রেস প্রার্থী সুব্রত দত্ত পেয়েছিলেন ৩৭ হাজার ভোট। বেড়েছে নোটায় ভোট এখানে আরও একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন, তা হল নোটায় ভোট পড়ার হার। নোটা চালু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত দু'টি লোকসভা ভোট হয়েছে। ২০১৪ সালে এবং ২০১৯ সালে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে নোটায় ভোট পড়ার হার ২০১৪ সালের তুলনায় বেড়েছে ২০১৯ সালে। ২০১৪ সালে নোটায় ভোট পড়েছিল ১২ হাজার ৭০০। ২০১৯ সালে সেটা বেড়ে পৌঁছে গিয়েছিল ১৭ হাজার ৭৬৯-এ। এবার সামনে আরও একটি লোকসভা নির্বাচন। বিরোধীদের হাতে গুচ্ছগুচ্ছ ইস্যু। শাসক শিবির অবশ্য নিজেদের দুর্ভেদ্য দুর্গের বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী। এবারের ভোটের লড়াই মূলত দ্বিমুখী। তৃণমূল ও বিজেপি। এখন দেখার আগামী লোকসভা ভোটে মানুষের রায়ে কোন ফুল ফোটে বারাসতে... জয়ের ধারা অব্যাহত রাখবে তৃণমূল? নাকি উড়বে গেরুয়া আবির?
Disclaimer : “The information and data presented on this website, including but not limited to results, electoral features, and demographics on constituency detail pages, are sourced from various third-party sources, including the Association for Democratic Reforms (ADR). While we strive to provide accurate and up-to-date information, we do not guarantee the completeness, accuracy, or reliability of the data. The given data widgets are intended for informational purposes only and should not be construed as an official record. We are not responsible for any errors, omissions, or discrepancies in the data, or for any consequences arising from its use. To be used at your own risk.”