Term Insurance Plan: জীবন বিমা আছে? না থাকলে কিনে নিন এক্ষুনি
জীবন তো একটাই, বিমা আছে? প্রত্যেক উপার্জনকারী মানুষের উচিত জীবন বিমা করানো। সদ্য চাকরি পাওয়ার পরই কেউ যদি নিজের জীবন বিমা করায় তাহলে প্রতি বছর প্রিমিয়াম হিসাবে খুব বেশি টাকা দিতে হয় না।
বর্তমানে যে কোনও গাড়ি কিনতে গেলে যেমন গাড়ির জন্য বিমা করা জরুরি, ঠিক তেমনই প্রতিটা মানুষেরই উচিত নিজেদের জীবন বিমা করানো। যদিও গাড়ি বা বাইক বদলে ফেলা যায়, কিন্তু জীবন একটাই। তাই প্রত্যেক উপার্জনকারী মানুষের উচিত জীবন বিমা করানো। সদ্য চাকরি পাওয়ার পরই কেউ যদি নিজের জীবন বিমা করায় তাহলে প্রতি বছর প্রিমিয়াম হিসাবে খুব বেশি টাকা দিতে হয় না।
বিমা করানোর কারণ কী?
বিমা আসলে একটা চুক্তিপত্রের মতো। যেখানে বিমা প্রদানকারী সংস্থাকে আমরা একটা নির্দিষ্ট টাকা দিই, পরিবর্তে সেই কোম্পানি কোনও ঝুঁকি বা ভবিষ্যতে হতে পারে এমন ঘটনা যার ফলে আমাদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে, তার দায়িত্ব নেয়।
মেয়াদি জীবন বিমা কী?
মেয়াদি জীবন বিমা বা টার্ম লাইফ ইন্সিওরেন্স আসলে এমনই একটা চুক্তি যেখানে সামান্য একটা টাকার পরিবর্তে বিমা প্রদানকারী সংস্থা প্রতিশ্রুতি দেয়, বিমা নিয়েছেন যিনি তাঁর কোনও কারণে মৃত্যু হলে বিমা কোম্পানি ওই পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেবে। ফলে ওই পরিবারের ভবিষ্যতে এগিয়ে চলার পথে কোনও আর্থিক বাধা থাকবে না।
জীবন বিমা ও মেয়াদি জীবন বিমার পার্থক্য কী?
বিমা কোম্পানিগুলো অনেক সময় এমন অনেক বিমা বাজারে আনে যা পরিবারের প্রতিটা মানুষের জীবনের বিমা করিয়ে নেয়। কিন্তু জীবন বিমা করানোর প্রয়োজন শুধুমাত্র পরিবারের যিনি বা যাঁরা উপার্জন করেন তাঁদের। কোনও কারণে পরিবারের প্রাথমিক উপার্জনকারীর মৃত্যু হলে পরিবারে যে আর্থিক ধাক্কা লাগে বিমা কোম্পানি সেই ক্ষতি পূরণ করার দায়িত্ব নেয়। কিন্তু পরিবারের যাঁরা ডিপেন্ডেন্ট, তাঁদের জীবন বিমা করানোর তেমন কোনও প্রয়োজন পড়ে না। কারণ ডিপেন্ডেন্ট কারও মৃত্যু হলে পরিবারটি কোনও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয় না। তা ছাড়াও কোনও পরিবারে আজ যিনি প্রধান উপার্জনকারী, আজ থেকে ৩০ বছর পর তিনি প্রধান উপার্জনকারী থাকবেন না। ফলে সেই সময় তাঁর জীবনবিমার প্রয়োজন সেই অর্থে নেই। তাই কোনও ব্যক্তি যতক্ষণ পরিবারের প্রাথমিক উপার্জনকারী ততক্ষণ তাঁর বিমার আওওতায় থাকার প্রয়োজন পড়ে।
কতদিন কেউ জীবন বিমার আওতায় থাকবেন?
কোনও মানুষ যদি বর্তমানে তাঁর পরিবারের প্রধান উপার্জনকারী হন তাহলে তাঁর একটি মেয়াদি জীবন বিমা নেওয়ার প্রয়োজন। কিন্তু সারা জীবনের জন্য বিমা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই তাঁর। কিন্তু কতদিনের বিমা নেবেন তিনি? কারও পরিবারই তাঁর উপর সারাজীবনের জন্য নির্ভরশীল থাকবে না, ফলে সারা জীবনের বিমা নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ধরা যাক, ৪০ বছর বয়সী কোনও ব্যক্তির ১০ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। আশা করা যায় আগামী ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে সেই সন্তানও উপার্জন করা শুরু করবে। সেই সময় ওই ব্যক্তির বয়স হবে ৫৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। সেই বয়সের পর ওই ব্যক্তি উপার্জন করতে থাকলেও তখন তিনি তাঁর পরিবারের প্রাথমিক উপার্জনকারী থাকবেন না। ফলে ৬০ বছর বয়সের পর তাঁর জীবন বিমার প্রয়োজন পড়ে না। এই কারণেই মেয়াদি জীবন বিমা বা টার্ম লাইফ ইন্সিওরেন্সের প্রয়োজনীয়তা সামনে আসে। এই ধরনের জীবন বিমাগুলো একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মানুষের জীবনের বিমা করে।
একই ভাবে, কারও যদি একাধিকও সন্তান থাকে তাহলে হিসাব বলছে তাঁর কনিষ্ঠ সন্তান যতদিন না উপার্জন শুরু করবে, সেই বয়স পর্যন্ত তাঁকে জীবন বিমার আওতায় থাকতে হবে। অর্থাৎ যদি মানুষের উপার্জন শুরু করার বয়স সবচেয়ে বেশি ৩০ ধরা হয় তাহলে কোনও ব্যক্তির কনিষ্ট সন্তান যতদিন না ৩০ পার করছে ততদিন তিনি বিমার আওতায় থাকবেন।
এখানেই একটা প্রশ্ন অনেকেই করতে পারেন। একটা নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত কেন, সারাজীবনের জন্যই তো জীবন বিমা নেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, ভারতে মানুষের গড় আয়ু ৭০ থেকে ৭২ বছর। এই বয়সের বেশি বয়স পর্যন্ত যখই টার্ম লাইফ ইন্সিওরেন্স নেওয়া হয়, তাহলে বিমার প্রিমিয়াম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায়। কারণ ৯৯ বা ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বিমা নেওয়ার ফলে কোনও মানুষ যখনই মারা যাক না কেন, কোম্পানিগুলোকে বিমাকৃত টাকা ওই ব্যক্তির পরিবারকে দিতেই হবে। আর এই ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পরই বিমার প্রিমিয়াম স্বাভাবিকের তুলনায় বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
সারা জীবনের বিমা নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত?
ধরা যাক, কোনও ব্যক্তি ৩০ বছর বয়সে সারাজীবনের জন্য বিমা করালেন। এবং সেই ব্যক্তি ৭২ বছর পর্যন্ত বাঁচলেন। অর্থাৎ ৪২ বছর ধরে তাঁকে প্রিমিয়াম দিতে হল। আজকে কেউ যদি ১ কোটি টাকার জীবন বিমা করেন, তাহলে ভারতের গড় মূদ্রাস্ফীতির হার ৭.৫ শতাংশ ধরলে ৪২ বছর পর সেই টাকার ভ্যালু দাঁড়ায় আজকের দিনের হিসাবে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। ফলে সেই টাকা পরিবারের খুব বেশি কাজে লাগতে পারে না। বিনিয়োগের সহজ নিয়মে বলে, কোনও মানুষের যা বার্ষিক আয় তার অন্তত ২০ গুণ অর্থের জীবনবিমা করতে হবে।
তবে এখানে বলা বিনিয়োগ সম্পর্কিত তথ্য কোনও উপদেশ নয়। বা এর উপর ভিত্তি করেই আপনাকে ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা করতে হবে এমনটাও নয়। তবে এই তথ্য আপনাকে বিভিন্ন বিনিয়োগের ধারণা দেবে।
*যে কোনও ধরনের বিনিয়োগে ঝুঁকি রয়েছে। ফলে বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথি অবশ্যই ভালভাবে পড়ে নেবেন।