How to Invest in Stock Market: শেয়ার বাজার সত্যিই ঝুঁকিপূর্ণ? বিনিয়োগের আগে এই কথাগুলো মনে রাখুন
Share Market: নির্মাণের ভিত শক্ত হলে সেই নির্মাণও মজবুত হয়। ঠিক সেইভাবেই শেয়ার বাজারের বিষয়ে কারও সঠিক জ্ঞান না থাকলে তারপক্ষে বিনিয়োগ করাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের করতে অনেক মানুষই বেশ ভয় পায়। অনেক সময় অনেক সিনেমাতে দেখা যায় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারী নিজের সব কিছু খুইয়ে বসে আছে। কিন্তু আসলে কি সত্যিই তাই? বলা হয়ে থাকে কোনও নির্মাণের ভিত শক্ত হলে সেই নির্মাণও মজবুত হয়। ঠিক সেইভাবেই শেয়ার বাজারের বিষয়ে কারও সঠিক জ্ঞান না থাকলে তারপক্ষে বিনিয়োগ করাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়।
শেয়ার বাজার কতটা ঝুঁকিপূর্ণ?
শেয়ার কেনার অর্থ হল কোনও কোম্পানিতে অংশীদারিত্ব কেনা। সেই কারণেই একে শেয়ার বাজার বলা হয়। আর কোম্পানির অংশীদারিত্ব কিনে নেওয়ার অর্থ হল একপ্রকার কোম্পানির মালিকানা পাওয়া বা সহ মালিক হওয়া। এবার কোম্পানি যদি ক্ষতির সম্মুখীন হয় তাহলে বিনিয়োগ করা টাকা জলে যাবে। আবার সেই কোম্পানি যদি ভাল গ্রোথ দেখায় তাহলে বিনিয়োগ হওয়া টাকার অঙ্কও বাড়তে থাকবে।
আজ থেকে ৪০ বছর আগে কেউ উইপ্রোতে মাত্র ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে থাকলে আজ সেই বিনিয়োগের মূল্য হত ৭০০ কোটি টাকা। আবার এমন স্টকও আছে যাতে সেই সময় কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে থাকলে আজ সেই বিনিয়োগের মূল্য হত মাত্র কয়েক হাজার টাকা।
শেয়ার বাজার থেকে কত রিটার্ন আমি আশা করতে পারি?
যে কোনও ব্যবসায় বিনিয়োগ করলে তাতে লাভ বা ক্ষতির অঙ্ক আগে থেকে হিসাব করা সম্ভব নয়। যে রকম কোনও এসি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে শীতকালের তুলনায় গরমকালে বেশি লাভ হয় বিনিয়োগকারীর। কারণ, ভারতের মতো উষ্ণ জলবায়ুর দেশে শীতকালের তুলনায় গরমকালে এসির বিক্রি অনেক বেশি হয়। আবার অনেক শেয়ার আছে যেগুলো হয়তো বেশ কিছু বছর ধরে তেমনভাবে বাড়ে না, কিন্তু হঠাৎ কোনও এক বছরের কোনও এক মাসে একলাফে অনেকটা বেড়ে যায়। তবে বিনিয়োগ করলে কখনও শুধুমাত্র একটা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা উচিৎ নয়। একসঙ্গে ৭/৮টা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা উচিৎ। যাতে কোনও একটা কোম্পানি ক্ষতির মুখে পড়লেও বাকি কোম্পানিগুলো সেই ক্ষতি পূরণ করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতিতে যদি ভাল শেয়ার নির্বাচন করা যায় তাহলে অন্তত ৫ বছর বিনিয়োগ করা থাকলে ১৮ থেকে ২০ শতাংশ রিটার্ন আশা করা যায়।
কীভাবে শেয়ারে বিনিয়োগ করা যায়?
শেয়ার বাজারে কতটাকা কেউ বিনিয়োগ করছে তার থেকে বড় কথা হল এমন শেয়ারে বিনিয়োগ করা যা ধারাবাহিক ভাবে ভাল রিটার্ন দেয়। ধরা যাক, এমন কোনও বিনিয়োগ করার জন্য এমন শেয়ার নির্বাচন করা হল যা ২৫ বছর ধরে গড়ে বাৎসরিক ১৫ শতাংশ রিটার্ন দেয়। সেখানে যদি কেউ মাসিক ১০০০ টাকা বিনিয়োগ করে ও বিনিয়োগের পরিমাণ বাৎসরিক ১৫ শতাংশ হারে বাড়াতে থাকে তাহলে ২৫ বছর ধরে বিনিয়োগের শেষে ওই বিনিয়োগকারীর পোর্টফোলিওতে প্রায় ১ কোটি টাকা থাকবে।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, আধার কার্ড ও প্যান কার্ড। আর ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া আজকাল অনলাইন হয়। অনেক ব্রোকার আছে যাদের ব্রোকারেজ প্রায় শূন্য।
শেয়ারে বিনিয়োগ করার জন্য কী পড়াশুনা করতে হয়?
শেয়ারে বিনিয়োগ করার জন্য কেউ কী নিয়ে পড়াশুনা করেছে, তা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। একবার আমেরিকায় একটা সার্ভে হয়েছিল সেখানে কয়কজন ১০ বছরের শিশু ও কয়েকজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে কিছু শেয়ার বাছতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ বছর পর দেখা গিয়েছিল ওই ১০ বছরের বাচ্চাদের নির্বাচন করা শেয়ার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের তুলনায় অনেক বেশি রিটার্ন দিয়েছিল। কিন্তু, এটা কীভাবে সম্ভব হয়েছিল? বাচ্চারা নিজেরা যে প্রোডাক্টের সঙ্গে একাত্ম অর্থাৎ ক্যাডেবেরি বা ডিজনির মতো কোম্পানিগুলোকে তারা বিনিয়োগ করার জন্য বেছে নিয়েছিল। অন্যদিকে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টরা বিভিন্ন কোম্পানির বছরের পর বছরের ব্যালেন্স শিট ও অন্যান্য হিসাব নিকেশ দেখলেও গ্রাউন্ড রিয়েলিটি বোঝেননি। ফলে, এমন কোম্পানি চয়ন করা উচিৎ যে কোম্পানিগুলো বাস্তবে কতটা ভাল তা সাধারণ মানুষ একজন কাস্টমার হিসাবে বুঝতে পারে।