AI Companies in Indian Stock Market: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা কোম্পানিগুলির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৭৫ শতাংশেরও বেশি
Indian Share Market News: যে সমস্ত কোম্পানি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছে বা তার বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন তৈরির মাধ্যমে জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করে তুলছে, সেই কোম্পানির শেয়ারের দামও বেড়েছে। ভবিষ্যতে তা আরও অনেক বাড়বে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
ভবিষ্যতের প্রযুক্তি নয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্বিমত্তা ছাপ ফেলেছে এখনই। লালমোহন বাবুর ভাষায় ‘ঘোর বাস্তব’। বর্তমানে যে দিকে তাকানো যায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারিক প্রয়োগ ও সেই প্রয়োগের উত্তরোত্তর বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। বর্তমান যুগের প্রযুক্তিগত এই উন্নতির নেপথ্যে রয়েছে প্রথমত মেশিন লার্নিং ও তারপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর এই উন্নতির জন্য যে সমস্ত কোম্পানি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করছে বা তার বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন তৈরির মাধ্যমে জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করে তুলছে, সেই কোম্পানির শেয়ারের দামও বেড়েছে। ভবিষ্যতে তা আরও অনেক বাড়বে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
ভারতে কোন কোন কোম্পানি এআই নিয়ে কাজ করে?
ভারতে চ্যাট জিপিটি বা গুগল বার্ড বা মাইক্রোসফট বিং এআই বা ডল-ই২-এর এআই টুল বর্তমানে ধীরে ধীরে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠছে। অনেক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশে আমেরিকান সফটওয়্যার ও জিপিইউ চিপসেট ডিজাইনার এনভিডিয়ার চিপসেট ব্যবহার করা হয়। ফলে এই এনভিডিয়া কোম্পানির শেয়ারের দাম হু হু করে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২৩-এর শুরু থেকে এনভিডিয়ার শেয়ারের দাম প্রায় ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও এই ধরনের কোনও কোম্পানি ভারতে নেই যারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে এই ধরনের কাজ করে।
ভারতে এমন কিছু কোম্পানি রয়েছে যারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত পরিষেবা দেয় বা নিজেদের পণ্যে এআই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে। এর মধ্যে টাটা এ্যালেক্সি (Tata Elxsi), পারসিস্টেন্ট (Persistent), সায়ইন্ট (Cyient), কেপিআইটি টেক (KPIT Tech) ও জেনসার টেকনলজিস (Zensar Technologies) উল্লেখযোগ্য। এই কোম্পানিগুলোর প্রত্যেকেরই মার্কেট ক্যাপিটালিজাশন ৫০০০ কোটি টাকার উপরে ও শেষ ৬ মাসের রিটার্ন ১৫ শতাংশের বেশি।
টাটা এ্যালেক্সি (Tata Elxsi)
টাটাদের ইআর অ্যান্ড ডি (Engineering Research and Development) কোম্পানি হল টাটা এ্যালেক্সি। এই কোম্পানি অটোমোটিভ, ব্রডকাস্ট, কমিউনিকেশন ও হেলথ কেয়ারের মতো সেক্টরে নিজেদের পরিষেবা দেয়। গত ৬ মাসে টাটা এ্যালেক্সির শেয়ারের দাম ১৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে। টাটা এ্যালেক্সি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও অ্যানালিটিক্সের মাধ্যমে গাড়ির চালকের ব্যবহারের উপর কাজ করছে। গত ১২ মাসে টাটা এ্যালেক্সির সেলস ৩০ শতাংশ ও লভ্যাংশ ৪১ শতাংশ বেড়েছে। যদিও কোম্পানির লভ্যাংশের মাত্র ১৭ শতাংশই ভারতের বাকি পুরোটাই বিদেশ থেকে আসে।
পারসিস্টেন্ট (Persistent)
১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত পারসিস্টেন্ট সিস্টেম লিমিটেড একটি আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার সলিউশন ও টেক ইনোভেশন কোম্পানি। এও কোম্পানি তার ক্লায়েন্টদের নিজেদের প্রযুক্তিগত ভাবে আরও উন্নত করতে সাহায্য করে। গত ৬ মাসে পারসিস্টেন্টের শেয়ারের দাম ২৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এই কোম্পানি টেক, ব্যাঙ্কিং, হেলথ কেয়ার ও লাইফ সাইন্স। আমাজন ওয়েব সার্ভিস (Amazon Web Services), আইবিএম (IBM), মাইক্রোসফট (Microsoft), গুগলের (Google) মতো কোম্পানির সঙ্গে পারসিস্টেন্টের পার্টনারশিপ রয়েছে।
কেপিআইটি টেক (KPIT Tech)
অটোনমাস ড্রাইভিং সলিউশন (ADS), অ্যাডভান্স ড্রাইভার অ্যাসিস্টেন্ট সিস্টেম (ADAS)-এর মতো সার্ভিস দেয় কেপিআইটি টেক। এছাড়াও ভেহিকল ডায়াগনস্টিক, ভেহিকল ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডিজাইন এবং ডিজিটাল কানেক্টেড সলিউশনের মতো পরিষেবাও দেয় এই কোম্পানি। গত ৬ মাসে কেপিআইটি টেকের শেয়ারের দাম ৫৪ শতাংশের বেশি বেড়েছে। অডি, মার্সিডিজ, বিএমডব্লিউ, পোর্শে, ফক্স ভোগেনের মতো কোম্পানির সঙ্গে কেপিআইটির সুসম্পর্ক রয়েছে।
জেনসার টেকনলজিস (Zensar Technologies)
আরপিজি এন্টারপ্রাইজের একটি সংস্থা হল জেনসার টেকনলজিস। মিল্পিটাস, সিয়াটেল, প্রিন্সটন, কেপ টাউন, লন্ডন, সিঙ্গাপুর ও মেক্সিকো সিটির মতো শহরে জেনসার টেকনলজিসের অফিস ও কার্যক্ষেত্র ছড়িয়ে রয়েছে। গত ৬ মাসে এই কোম্পানি ৭৬ শতাংশের বেশি রিটার্ন দিয়েছে।
সায়ইন্ট (Cyient)
সায়ইন্ট একটি ইন্ডিয়ান মাল্টি ন্যাশনাল টেক কোম্পানি। যারা ইঞ্জিনিয়ারিং, উৎপাদন, ডেটা অ্যানালিটিক্স, নেটওয়ার্ক ও অপারেশনসের মতো বিষয় নিয়ে কাজ করে। সায়ইন্ট এরোস্পেস, ডিফেন্স, কমিউনিকেশন, ট্রান্সপোর্টেশন ও সেমি কন্ডাক্টারের মতো সেক্টরে কাজ করে। গত ৬ মাসে সায়ইন্টের শেয়ার ৭৮ শতাংশের বেশি রিটার্ন দিয়েছে। রেথিয়ন টেকনোলগিস, বোম্বার্ডিয়ার, বোয়িং, ব্রিটিশ টেলিকমিউনিকেশন ও টেলি অ্যাটলাসের মতো কোম্পানির সঙ্গে সায়ইন্টের বেশ মজবুত সম্পর্ক রয়েছে।