Pratima Bhoumik: ত্রিপুরার প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন প্রতিমা ভৌমিক? চিনে নিন ‘ত্রিপুরার দিদিকে’
Pratima Bhoumik: বাম গড়ে এই বিধানসভা নির্বাচনে পদ্মফুল ফুটিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক। ত্রিপুরার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী তিনি হতে পারেন বলেও জল্পনা শুরু হয়েছে।
আগরতলা: নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ত্রিপুরায় (Tripura) সরকার গড়ার পথে ভারতীয় জনতা পার্টি। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে ৬০ টি আসনের মধ্যে বিজেপি জোট পেয়েছে ৩৩ টি আসন। বিজেপির পক্ষে ফলাফল যাওয়ার পর থেকেই বিজেপির নয়া মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বিজেপির তরফে ত্রিপুরার আগামী মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণাও করা হয়নি। ফের একবার মানিক সাহাই ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রীর সিংহাসনে বসবেন নাকি নতুন কোনও মুখ আসবে ত্রিপুরায় শাসন করার জন্য তা নিয়েই বাড়ছে চাপা উত্তেজনা। এই পরিস্থিতিতে একটি নাম ভেসে আসছে তা হল প্রতিমা ভৌমিক। সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তিনি।
এই বিধানসভা নির্বাচনে তিনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। লাল গড়ে এই প্রথম পদ্মফুল ফুটল তাঁর হাত ধরেই। ১৯৯৮ সালের মার্চ মাস থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের গড় ছিল এই ধানপুর কেন্দ্র। এই প্রথম তা বামেদের হাতছাড়া হল। এই জয়ের পুরস্কার হিসেবে কি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর পদ কি তাঁকে দেবে বিজেপি? সময় আসলেই জানা যাবে এর উত্তর।
কে এই প্রতিমা ভৌমিক?
টিলার রাজ্যে তিনি ‘ত্রিপুরার দিদি’ বা ‘প্রতিমা দি’ নামেই পরিচিত। তিনি এই নির্বাচনে ধানপুর আসন থেকে মোট ১৯,১৪৮ টি ভোট পেয়েছেন। শতাংশের নিরিখে ভোট ৪২.৫। ১৯৯৮ এবং ২০১৮ সালে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ধানপুর কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। দুইবারই মানিক সরকারের কাছে হেরে যান প্রতিমা। তবে এইবার সেই আসন থেকেই সিপিএম প্রার্থী কৌশিক চন্দকে ৩,৫০০ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন ‘ত্রিপুরা দিদি’। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। এদিকে ত্রিপুরার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে প্রতিমা ভৌমিক বলেন, “আমি একজন নিবেদিত দলীয় কর্মী এবং দলের কারণেই আমি আপনাদের সামনে বসে রয়েছি। আমি দলের নির্দেশে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি এবং এই দলটি আমার মা। সুতরাং, কারও কিছু অনুমান করা উচিত নয়। দল যা বলবে আমি তাই করব।”
তিনি ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই নির্বাচনে বিদায়ী সাংসদ শঙ্কর প্রসাদ দত্তরে ৩০৫,৬৮৯ ভোটে হারিয়েছিলেন তিনি। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার দুই বছর পর ২০২১ সালের জুলাই মাসে তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ত্রিপুরার প্রথম কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন তিনি। বিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক বছপ ৫৪-র প্রতিমা। ১৯৯১ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। এর ১ বছর পরেই বিজেপি রাজ্য কমিটির একজন সদস্য হয়ে ওঠেন। সেই বছরই বিজেপির ধানপুর মণ্ডলের প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। প্রতিমা ভৌমিক বিজেপির যুব ও মহিলা মোর্চার সহ সভাপতিও ছিলেন। ২০১৬ সালে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উন্নীত হন তিনি।
প্রতিমা ভৌমিকের বাবা ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। তাঁর তিন ভাইবোন রয়েছে। ছেলেবেলায় ব্লক, জেলা ও রাজ্য স্তরের বিভিন্ন ইভেন্টে তিনি খো-খো ও কাবাড্ডি খেলেছেন। সোনামুরায় বড় নারায়ণে তিনি কৃষিকাজও অনুশীলন করেছেন। প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে এখনও কোনও নাম নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। সেই পরিস্থিতিতে প্রতিমা ভৌমিকও ত্রিপুরায় বিজেপির পরবর্তী মুখ্য়মন্ত্রী হতে পারেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের একাংশ। এদিকে ভৌমিকই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন এই জল্পনার প্রশ্নে বিজেপি প্রধান রাজীব ভট্টাচার্য বলেছেন, “বিধায়কদের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ১-২ দিন অপেক্ষা করুন, এর মধ্যেই আমরা সিদ্ধান্ত নেব। বিজেপিতে নেতাদের অভাব নেই এবং আমরা এই নির্বাচনে একটি দল হিসাবে কাজ করেছি।”