Tollywood Secret: উত্তরকুমারের ‘সব্যসাচী’ থেকে দেবের ‘বাঘাযতীন’, বাংলা ছবির বিষয় স্বাধীনতা সংগ্রাম হলে লাভ কতটা?

Inside Story: দেব অভিনীত ‘বাঘাযতীন’ নিয়ে তিনি খুবই আগ্রহী এবং সেই সঙ্গে আশাবাদীও বটে। অভিনেতা শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “ইতিহাস যতবার পর্দায় আসবে, নতুন প্রজন্ম আরও বেশি করে নিজেদের ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন হবে।”

Tollywood Secret: উত্তরকুমারের ‘সব্যসাচী’ থেকে দেবের ‘বাঘাযতীন’, বাংলা ছবির বিষয় স্বাধীনতা সংগ্রাম হলে লাভ কতটা?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2023 | 11:37 PM

৭৭তম স্বাধীনতার উৎসব পালন করছে ভারত। এই স্বাধীনতার গল্প যেমন ইতিহাসের পাতায় রয়েছে, তেমনিই বারবার উঠে এসেছে সিলভার স্ক্রিনে। সিনেমার মাধ্যমেই স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবগাথা পরিচালকদের সৌজন্যে পর্দায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে। ভারতের স্বাধীনতাপ্রাপ্তির বিভিন্ন ধরনের গল্প বারবার ফুটে উঠেছে বাংলা সিনেমায়। তবে বেশ কিছু বছর যাবৎ বড় পর্দায় স্বাধীনতা সংগ্রামের গল্প সেভাবে আর দেখা যাচ্ছে না। দর্শকদের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই বর্তমানে সামাজিক ও পারিবারিক গল্প-চিত্রনাট্য প্রাধান্য পাচ্ছে। তবে আশার কথা এখন আবার স্বাধীনতার গল্প নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন বাংলা সিনেমার কলাকুশলীরা। পরিচালক প্রেমেন্দুবিকাশ চাকির মতে, “ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম দেখলে সহজেই বোঝা যায়, শুধু বাংলা থেকে অগুণতি বীর এই সংগ্রামে যুক্ত হয়েছেন। বহু গল্প রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের। এসব কাহিনি বাংলা সিনেমাতেও বহুবার এসেছে। এই গল্প দর্শকরা দেখলে নতুন প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হবে। মাঝে কিছুদিন বাংলায় সেরকম স্বাধীনতার সংগ্রামের গল্প না-হলেও একেবারেই যে হয়নি, তেমনটা বলা যায় না।”

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার অবদান কতটা, তা কম-বেশি সকলেরই জানা। যদিও দেশ স্বাধীনতার পাওয়ার পরও নানা ধরনের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশবাসীকে যেতে হয়েছে। দেশের প্রতি সেই ভালবাসা থেকে দেশের জন্য আত্মবলিদান, ভারতের স্বাধীনতা প্রাপ্তির বিভিন্ন গল্প বারবার ফুটে উঠেছে বাংলা সিনেমায়। এই সিনেমাগুলি বক্সঅফিসেও ভাল ফল করেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের কাহিনি যতবার পর্দায় আসবে, দর্শকদের মনে দেশাত্মবোধ জাগ্ত হবেই। অভিনেতা সোহম চক্রবর্তীর মতে, “দেশের গৌরবগাথা যতবার দেখানো হবে, বাংলা সিনেমায় ততবারই সাফল্য পাবে।” সেই প্রসঙ্গেই সোহম জানালেন, দেব অভিনীত ‘বাঘাযতীন’ নিয়ে তিনি খুবই আগ্রহী এবং সেই সঙ্গে আশাবাদীও বটে। অভিনেতা শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “ইতিহাস যতবার পর্দায় আসবে, নতুন প্রজন্ম আরও বেশি করে নিজেদের ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন হবে।”

বহু ছবি যেমন ‘চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠন’, ‘সব্যসাচী’, ‘আনন্দমঠ’ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ‘সব্যসাচী’ ছবিতে মহানায়ক উত্তমকুমারের অভিনীত চরিত্র আজও দর্শকদের মনে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। দেশাত্মবোধক বাংলা ছবির মধ্যে ’৪২-এর জনপ্রিয়তা একেবারে অন্যরকম। অভিনেতা বিকাশ রায়ের অভিনয় দেখে দর্শকদের মনে বিকাশের প্রতি ঘৃণা… সে তো স্বাধীনতা সংগ্রামের কাহিনীর প্রতি ভালবাসার প্রকাশ। সুভাষ চন্দ্র বসুও বারবার সিনেমার পর্দায় এসেছেন। যত বারই সুভাষ চন্দ্র বসুর চরিত্র সিনেমার পর্দায় এসেছে, ততবারই দর্শকদের উৎসাহ বেড়েছে। পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় সুভাষ অন্তর্ধান নিয়ে যেমন ছবি করেছেন, তেমনই ‘রাজকাহিনি’র মতো গল্পের মাধ্যমে দেশ ভাগের যন্ত্রণাও তুলে ধরেছেন। বিনয়-বাদল-দীনেশকে নিয়ে সিনেমা হয়েছে অজস্র। সম্প্রতি অভিনেতা তথা প্রযোজক দেব আনছেন ‘বাঘাযতীন’কে নিয়ে একটি সিনেমা। নতুন প্রজন্মের অনেকেই বিশ্বাস করেন, বাংলা সিনেমায় আরও বেশি করে স্বাধীনতার কাহিনী তুলে ধরা উচিত। অভিনেতা অম্বরীশ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, “বাঘাযতীনকে ইতিহাসের পাতায় শুধু বাঘ মেরেছেন, এমন একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী হিসেবেই মূলত দেখানো হয়। তবে এর বাইরে তাঁর জীবনের নানা কাহিনীর কতটা জানে নতুন প্রজন্ম। এবার তাঁর জীবনের বহু গল্প সিনেমার পর্দায় এলে দর্শক আরও অজানা বিভিন্ন গল্প জানতে পারবে। তবে অবশ্য শুধুই ডকুমেন্টারি নয়, সিনেম্যাটিক হতে হবে এই নির্মাণ।”

দেবের মতে, “বাঘাযতীন চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে অনেক অজানা গল্প জানতে পেরেছি।” আশার কথা, এখন আবার বাংলা ছবিতে স্বাধীনতার গল্প ফিরছে। সম্প্রতি পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র দেবী চৌধুরানির শুটিংয়ের কাজ শুরু করবেন। সেখানে মুখ্য ভূমিকায় দেখা যাবে শ্রাবন্তী ও প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। সিনেমার পর্দায় স্বাধীনতার গল্প যত বার চিত্রায়িত হয়েছে, দর্শকদের ভালবাসা পেয়েছে। এই স্বাধীনতার গল্প আরও বেশি করে বাংলা সিনেমায় হলে দর্শক সহজেই ইতিহাসের পাতা উল্টে ঘুরে আসতে পারে। নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধও করতে পারবে এসব গল্প।