Chandrayaan-3: চাঁদের বুকে অবতরণ নয়, চন্দ্রাভিযানে সবথেকে কঠিন কাজ ছিল এটি…
ISRO: শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে চাঁদের দক্ষিণ মেরু, এই ৪০০,০০০ কিলোমিটারের যাত্রাপথে সবথেকে উদ্বেগের সময় ছিল শেষের ২০ মিনিট।
নয়া দিল্লি: দেশ তথা গোটা বিশ্বের নজর ছিল ঘড়ির দিকে। ঘড়ির কাটা ৬-এর ঘরে ঢুকতেই বুক দুরুদুরু শুরু। সবাই চুপ, চোখ আটকে জায়ান্ট স্ক্রিনের দিকে। তারপরই এল মাহেন্দ্রক্ষণ। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করল ইসরোর পাঠানো চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3 Landing)। আর তার সঙ্গে সঙ্গেই ইতিহাস গড়ল। বিশ্বের প্রথম দেশ হল ভারত, যারা চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করল। এর আগে রাশিয়া, আমেরিকা ও চিন চাঁদে পৌঁছলেও, তারা কেউ চাঁদের দক্ষিণ মেরু বা কুমেরুতে আসেনি। চন্দ্রযান-৩ এর সাফল্যই বিশ্বমঞ্চে আরও উচু স্থানে পৌঁছে দিল ভারতকে। শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে চাঁদের দক্ষিণ মেরু, এই ৪০০,০০০ কিলোমিটারের যাত্রাপথে সবথেকে উদ্বেগের সময় ছিল শেষের ২০ মিনিট। এমনটাই জানালেন ইসরোর (ISRO) প্রধান এস সোমনাথ (S Somnath)। কিন্তু কেন? তাঁর কথায়, এই সময়ে চন্দ্রযানের ‘পাওয়ার ডিসেন্ট’ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, যেখানে ল্যান্ডার নিজে থেকে চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণের সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে ইসরো বা অন্য কারোর হাতে এর নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
বুধবার সন্ধে ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের বুকে অবতরণ করে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম। অভিযান সফল হওয়ার পরই আবেগে ভাসেন ইসরোর প্রধান, সমস্ত বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে কোটি কোটি ভারতীয়। পরে সংবাদমাধ্য়মের মুখোমুখি হলে ইসরোর প্রধানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই অভিযানে সবথেকে কঠিন পর্যায় বা অংশ কোনটা ছিল? জবাবে তিনি বলেন, “এই মিশনের সবথেকে কঠিন অংশ ছিল এর উৎক্ষেপণ...এটা ভুলে গেলে চলবে না জিএসএলভি মার্ক ৩ (GSLV Mark 3) চন্দ্রযান-৩ কে সঠিক কক্ষপথে পৌঁছে দিয়েছিল।”
তিনি বলেন, “ওই রকেট ৩৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ট্রান্স-লুনার কক্ষপথে পৌঁছয়। এর পরের কঠিন ধাপ ঠিল ল্যান্ডিং বা চাঁদের জমিতে অবতরণ। যদি একবার এই সুযোগ হাতছাড়া হত, তবে আর অবতরণ করা যেত না। এই মিশনের অস্তিত্বই থাকত না।”
তৃতীয় কঠিনতম পর্যায় সম্পর্কে ইসরো প্রধান বলেন, “তৃতীয় সবথেকে কঠিন পর্ব ছিল কক্ষপথ থেকে ল্যান্ডারের বিচ্ছিন্ন হওয়ার মুহূর্ত। এটাও একদম সঠিক সময়ে হয়েছে। এখানেও মনে রাখা দরকার, দীর্ঘ সময় মহাকাশে কাটানোর পর এই কাজ করা হয়েছে। এতটা সময় সমস্ত যন্ত্রাংশ যাতে কোনও সমস্যা ছাড়াই কাজ করে, তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও ছিল। যা আমরা করতে পেরেছি।”
প্রসঙ্গত, উৎক্ষেপণের ১৬ মিনিট বাদে রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চন্দ্রযান-৩ এর মডিউল। এরপর তা পৃথিবীর কক্ষপথে ছয়বার পাক খেয়ে ৩৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটারের দূরত্ব অতিক্রম করে। ১৫ জুলাই প্রথম কক্ষপথ পরিবর্তন করে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে চন্দ্রযান-৩।