Manipur Hindi Film: ২০ বছর পর মণিপুরে আজ দেখানো হবে হিন্দি সিনেমা! ঘোষণা হবে ‘প্রতীকী স্বাধীনতা’
Manipur Hindi Film: মঙ্গলবার (১৫ অগস্ট) রাজ্যের সবথেকে হিংসাধ্বস্ত জেলা চুরাচাঁদপুরে, হিন্দি চলচ্চিত্র দেখানোর আয়োজন করা হয়েছে। দেশের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই পদক্ষেপ করছে রাজ্যের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সংগঠন হমার স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বা এইচএসএ। ফলে, দুই দশকেরও বেশি সময় পর মণিপুরবাসী হিন্দি সিনেমা দেখার সুযোগ পাবেন।
ইম্ফল: ৩ মে থেকে লাগাতার হিংসা চলছে মণিপুরে। ইতিমধ্য়েই দেড়শোর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ৬০,০০০-এর বেশি মানুষ ঘর ছেড়ে দিন কাটাচ্ছেন আশ্রয় শিবিরে। তবে, ধীরে ধীরে শান্তি এবং স্বাভাবিক অবস্থা ফিরছে উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে। মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসের দিন, লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও জানিয়েছেন, শান্তির পথে ফিরছে মণিপুর। গোটা দেশ তাদের পাশে আছে। এই পরিস্থিতিতে, মঙ্গলবার (১৫ অগস্ট) রাজ্যের সবথেকে হিংসাধ্বস্ত জেলা চুরাচাঁদপুরে, হিন্দি চলচ্চিত্র দেখানোর আয়োজন করা হয়েছে। দেশের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এই পদক্ষেপ করছে রাজ্যের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সংগঠন হমার স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বা এইচএসএ। ফলে, দুই দশকেরও বেশি সময় পর মণিপুরবাসী হিন্দি সিনেমা দেখার সুযোগ পাবেন।
কী কী সিনেমা দেখানো হবে, তা স্পষ্টভাবে জানা হয়নি। তবে সূত্রের খবর, ‘উরি: দ্য সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ এবং শাহরুখ খান অভিনীত ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’-সহ মোট চারটি হিন্দি সিনেমা দেখানো হবে এই অনুষ্ঠানে। এইচএসএ বলেছে, “সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী এবং মণিপুর রাজ্য সরকারের প্রতি আমাদের অবজ্ঞা এবং বিরোধ প্রদর্শনের জন্যই এই সিনেমা প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ২০০৬ সালে ইউনাইটেড ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট এবং কংলেইপাক কমিউনিস্ট পার্টির ক্যাডাররা ২০ জনেরও বেশি হমার মহিলা এবং কয়েকজন নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছিল। হমার পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ফেরাতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রচেষ্টাকে সমর্থন করেছিল গ্রামবাসীরা। তাই গ্রামবাসীদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য তারা এই পদক্ষেপ করেছিল। এখন, ২০২৩-এ প্রভাবশালী সম্প্রদায়ের এক মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে মণিপুরে রাষ্ট্রীয় হিংসা চলছে। স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচারের জন্য আমাদের লড়াই চালিয়ে যাব।”
মণিপুরে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলি, ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে রাজ্যের মানুষকে বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে, রাজ্যে হিন্দি সিনেমা প্রদর্শন নিষিদ্ধ করেছিল। জঙ্গি সংগঠনগুলির ভয়ে, রাজ্যের সিনেমাগুলিতে বেশিরভাগই ইংরেজি, কোরিয়ান এবং মণিপুরি সিনেমা দেখানো হয়। ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ রাজ্যের হলগুলিতে চলা শেষ হিন্দি সিনেমা। তাই হিন্দি চলচ্চিত্র দেখিয়েই ‘দেশবিরোধী সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী’ এবং মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের কবল থেকে ‘প্রতীকী স্বাধীনতা’ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই ছাত্র সংগঠন। একদিকে যেমন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি স্বাধীনতা দিবস বয়কটের ডাক দিয়েছে, অন্যদিকে এন বীরেন সিংয়ের সরকার কুকি-জোমি-হমার-মিজো আদিবাসীদের উপর নির্দয় অত্যাচার চালাচ্ছে। তাই দুই পক্ষেরই বিরোধিতা করছে তারা।
নেপথ্যের কাহিনি যাই হোক না কেন, ২০ বছর পর বড় পর্দায় হিন্দি সিনেমা দেখার সুযোগ পেয়ে খুশি মণিপুরবাসী। চুরাচাঁদপুরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এতদিন তাঁদের হিন্দি সিনেমা দেখার একমাত্র উপায় ছিল মোবাইল। এই প্রথম প্রকাশ্যে বড় পর্দায় হিন্দি সিনেমা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন তাঁরা।