Jail Inmates Result: জেলে পড়াশোনা, ৬০০-র মধ্যে ৫০৩ পেয়ে তাক লাগালেন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি
যে সমস্ত কয়েদিরা উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করেছে এবং আরও উচ্চশিক্ষা করতে চায়, তাদের জন্য ইন্দিরা গান্ধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে (IGNOU) পড়ার ব্যবস্থা করা হবে এবং জেলেই IGNOU কেন্দ্র খোলা হবে।
লখনউ: ইচ্ছা আর মনের জোর থাকলে পড়াশোনায় কোনও কিছুই বাধা হতে পারে না। উত্তরপ্রদেশ বোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক রেজাল্ট প্রকাশে একথা আবার যেন প্রমাণিত হল। মাধ্যমিকে ৬০০-র মধ্যে ৫০৩ নম্বর পেয়ে ফার্স্ট ডিভিশনে পাশ করেছে বরেইলি সেন্ট্রাল জেলে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক খুনের আসামী। আবার উচ্চ মাধ্যমিকে ৬০০-র মধ্যে ৪৩৬ নম্বর পেয়েছে পণপ্রথা আইনে ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত বরেইলি জেলেরই এক কয়েদি।
শুধু দু-একজন নয়, রাজ্যে জেলবন্দি কয়েদিদের ৯৫ শতাংশ দশম পরীক্ষায় পাশ করেছে। আর দ্বাদশ পরীক্ষায় পাশ করেছে মাত্র ৭০ শতাংশ। শুধু পাশ করা নয়, ৮০ শতাংশের উপর নম্বর নিয়ে প্রথম বিভাগে পাশ করেছে অধিকাংশ। বাকিরা দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও প্রথম ডিভিশনে পাশের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তবে এর জন্য জেল কর্তৃপক্ষ থেকে যোগী সরকারের বিশেষ উদ্যোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন কারা প্রতিমন্ত্রী ধরমবীর প্রজাপতি। তিনি বলেন, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আমরা জেলবন্দির পড়াশোনার ব্যাপারে বিশেষ নজর দিই। বিভিন্ন জেলে কারিগরী দক্ষতারও ব্যবস্থা করেছি আমরা।
জানা গিয়েছে, গত ২৫ এপ্রিল উত্তরপ্রদেশ মাধ্যমিক শিক্ষা পরিষদের দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, দশম শ্রেণির পরীক্ষায় বসেছিল প্রায় ৬০ জন বন্দি। তারা ৮২.৪০ শতাংশ নম্বর নিয়ে ফার্স্ট ডিভিশনে পাশ করেছে। আর দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় বসেছিল ৬৪ জন। যার মধ্যে ৭০.৩০ শতাংশ পাশ করেছে এবং ১৩.৩০ শতাংশ অর্থাৎ ৬ বন্দি ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছে। দশম শ্রেণিতে ফার্স্ট ডিভিশন প্রাপ্তদের মধ্যে শাহজাহানপুর, এটাহ, মইনপুরী, বারাণসী, বিজনৌর জেলা সংশোধনাগারের বন্দিরা রয়েছে। আর দ্বাদশ শ্রেণিতে ফার্স্ট ডিভিশনপ্রাপ্তদের তালিকায় রয়েছে গাজিয়াবাদ, লখনউ এবং রায়বরেলি জেলার ৩ বন্দি।
জেলবন্দিদের পরীক্ষার জন্য সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের তরফেও বিশেষ সহায়তা প্রদান করেছইল বলে জানিয়েছেন এক সিনিয়ার জেল আধিকারিক। তিনি জানান, ১০টি জেলে পরীক্ষা কেন্দ্র ফেলা হয়েছিল। পরীক্ষার্থীরা যাতে পড়াশোনার সুযোগ পায়, সেজন্য পরীক্ষার সময় তাদের দৈনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। জেলের মধ্যেই বইপত্র সহ পড়াশোনার অন্যান্য সামগ্রী দেওয়া হয়েছিল। এমনকি জেল লাইব্রেরিরও ব্যবস্থা ছিল।
তবে এখানেই শেষ নয়, যে সমস্ত কয়েদিরা উচ্চ মাধ্যমিকে পাশ করেছে এবং আরও উচ্চশিক্ষা করতে চায়, তাদের জন্য ইন্দিরা গান্ধী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে (IGNOU) পড়ার ব্যবস্থা করা হবে এবং জেলেই IGNOU কেন্দ্র খোলা হবে বলে জানিয়েছেন ওই সিনিয়ার আধিকারিক। যারা পড়াশোনার ব্যাপারে আগ্রহী তাদের জন্য জেল কর্তৃপক্ষের তরফে সমস্ত রকম বন্দোবস্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিজিপি (কারা) এস.এন সাবাত। যে সমস্ত কয়েদিদের শিক্ষক নেই, তাদের জেলকর্মীরা সাহায্য করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।