Rajya Sabha MP: পোশাকেই রাজনৈতিক বার্তা, শপথ নিলেন রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদরা
TMC Rajya Sabha MP's take oath: সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদদের বাঙালি পোশাকে, বাংলা ভাষায় শপথ গ্রহণ করতে হবে। রবিবার রাতে ফের একবার নেত্রীর সেই নির্দেশ আসে। আসলে এই বাঙালি পোশাকের নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক বার্তাও।
নয়া দিল্লি: সোমবার (২১ অগস্ট), রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন বাংলার নবনির্বাচিত তৃণমূল সাংসদরা। গত ১৭ জুলাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন দোলা সেন, ডেরেক ও’ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, সামিরুল ইসলাম এবং প্রকাশ চিক বরাইক। একটি আসনের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন সাকেত গোখলে। এদিন তাঁদের প্রত্যেককে দেখা গেল পুরোদস্তুর বাঙালি পোশাকে রাজ্যসভায় এসে শপথ গ্রহণ করতে। ডেরেক-দোলাদের পরনে ছিল যথাক্রমে ধুতি-পাঞ্জাবি-শাড়ি। তৃণমূল সাংসদরা জানিয়েছেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই বাঙালি পোশাক পরে শপথ গ্রহণ করলেন তৃণমূল সাংসদরা।
সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদদের বাঙালি পোশাকে, বাংলা ভাষায় শপথ গ্রহণ করতে হবে। রবিবার রাতে ফের একবার নেত্রীর সেই নির্দেশ আসে। এরপরই দিল্লিতে পাঞ্জাবি কিনতে বের হন সুখেন্দুশেখর রায়। দিল্লির গোল মার্কেট এলাকা থেকে তসরের একটি পাঞ্জাবি এবং সুতির পায়জামা কেনেন। দিল্লিতে নতুন পাঞ্জাবি কেনেন ডেরেক ও’ব্রায়েনও।
আসলে এই বাঙালি পোশাকের নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক বার্তাও। শপথ গ্রহণের পর সুখেন্দু শেখর রায় বলেছেন, “বাংলায় অন্য দল থেকে যাঁরা সাংসদ নির্বাচিত হয়ে আসছেন, তাঁদের মুখে বাংলা ভাষা শুনে মনে হচ্ছে যেন অপশব্দ বলছেন। ওঁরা যেভাবে বাংলা বলছেন, শুনে ভয় তৈরি হচ্ছে। বাংলার ৮ কোটি বাঙালির প্রতিনিধি হয়ে আমরা সংসদে এসেছি। মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রত্যাশিত পথেই আমরা হাঁটছি।” প্রসঙ্গত সম্প্রতি, বাংলার সকল স্কুলে মাতৃভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। রাজ্যের নয়া শিক্ষানীতি অনুযায়ী, ইংরাজী বা বাংলা যে মাধ্যমেরই স্কুল হোক না কেন, প্রথম ভাষা হিসেবে শিক্ষার্থীদের বাংলা নিতেই হবে। স্পষ্টতই বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির চর্চর উপর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার এবং দল হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস যে বাড়তি জোর দিচ্ছে।
এর পিছনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তথা তৃণমূল কংগ্রেসের ‘আইডেন্টিটি পলিটিক্স’ বা ‘পরিচয়ের রাজনীতি’র কৌশল রয়েছে বলে, মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বাংলায় ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল সাফল্যের পিছনে এই পরিচয়ের রাজনীতির বড় ভূমিকা ছিল বলে মনে করা হয়। স্লোগান দেওয়া হয়েছিল, ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’। বাংলা জয় করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছিল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা থেকে শুরু করে, বিজেপির প্রায় সকল কেন্দ্রীয় নেতারা রাজ্যে প্রচারে এসেছিলেন। কিন্তু, ‘বহিরাগত তত্ত্ব’ দিয়ে তাদের প্রচার ভোঁতা করে দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সভার পর সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, দিল্লি থেকে বাংলাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে বিজেপি। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে, ফের সেই বাংলা জাতি পরিচয়ের প্রমাণিত রাজনৈতিক কৌশলেই ফিরতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। এদিন রাজ্যসভার সাংসদদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বাঙালি পোশাক এবং বিজেপি সাংসদদের বাংলা বলা নিয়ে সুখেন্দুশেখর রায়ের কটাক্ষে, সেই ইঙ্গিতই রয়েছে।