Panchayat Elections 2023: পঞ্চায়েত মামলা: আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা, মৃতদের সৎকারে সাহায্য করতে রাজ্যকে নির্দেশ প্রধান বিচারপতির
Panchayat Elections 2023: ভোটের দিন একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বাংলায়। বহু মানুষ আক্রান্ত হন। ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের দিন যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্যকে। যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের আত্মীয়দের সৎকারের কাজেও সাহায্য করতে হবে। সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর করা মামলায় এমনই নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। ভোটের দিন যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের জন্য ক্ষতিপূরণ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অধীর।
কী অভিযোগ? কী নির্দেশ দিলেন বিচারপতি?
- ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ ওঠায় হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, নোডাল অফিসার হিসেনে যিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর দায়িত্বে ছিলেন সেই বিএসএফ-এর ডিজিকে একটি রিপোর্ট দিতে হবে। বুথের বাইরে কোথায় কোথায় অশান্তি হয়েছে তা উল্লেখ করতে হবে রিপোর্টে। এই রিপোর্ট জরুরি বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
- প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের নির্দেশ, মঙ্গলবার গননা কেন্দ্রগুলির বাইরে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা কর্মীদের ভিড় থাকবে না। রাজ্যকে হাইকোর্টের নির্দেশ, ভোটের দিন যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি ভাল চিকিৎসা করাতে হবে।মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। প্রধান বিচারপতির আরও নির্দেশ, মৃতদেহগুলির ময়নাতদন্ত করার সময় ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে, আর তার রিপোর্ট দিতে হবে আদালতে। মৃতদের সৎকারের সাহায্য করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে রাজ্যকে। রাজ্য যে রিপোর্ট আদালতে জমা করবে, তার উপর ভিত্তি করে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
- প্রধান বিচারপতি এদিন জানতে চেয়েছেন, যে বুথগুলিতে ব্যালট পোড়াতে দেখা গিয়েছে সেখানে পুনর্নির্বাচন হয়েছে কি না। সে বিষয়ে মঙ্গবার আদালতে রিপোর্ট দেবে কমিশন। যারা ব্যালট বক্স জলে ফেলে দিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা উচিৎ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
- প্রধান বিচারপতি এদিন অভিযোগ শুনে রাজ্যকে নির্দেশ দেন, যাঁরা অসুস্থ তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি তিনি রাজ্যের কাছে জানতে চান, দ্রুত কী পদক্ষেপ করতে পারে রাজ্য? উত্তরে অ্য়াডভোকেট জেনারেল জানান, এফ আই আর করতে হবে ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেতে হবে। চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে রাজ্যের কোনও সমস্যা নেই বলেও জানান তিনি।
- কীভাবে ৪০ জনের মৃত্যু হল, তা জানতে স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে বা কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে তদন্ত করা হোক, এমনই আর্জি জানান অধীর। তাঁর দাবি ছিল, আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, মৃতদের সৎকারের ব্যবস্থা করতে হবে, আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। গণনা কেন্দ্রের বাইরে ১০০ মিটারের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে বলেও আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
- আদালতে অধীর বলেন, রাজীব গান্ধী বলেছিলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের মাধ্যমে নবজাগরণ আসবে। এ রাজ্যে কি সত্যিই কোনও গণতন্ত্র আছে?”
- ভোটের দিন অশান্তির অভিযোগ উঠেছে, সে সম্পর্কে অধীর মন্তব্য করেছেন, ‘গণতন্ত্রের নামে প্রহসন চলছে’। তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মিলে বাংলার সাধারণ ভোটারদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন।
- মামলায় অধীর উল্লেখ করেন, তাঁর জেলা অর্থাৎ মুর্শিদাবাদ সহ সব জায়গায় ভোটের দিন দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত মানুষের উপর আক্রমণ করা হয়েছে। কোথায়, কার কাছে যেতে হবে, তা জানেন না আক্রান্তরা। তিনি উল্লেখ করেছেন, হাসপাতালেও যেতে পারেননি অনেকে।
- গত শনিবার ভোটগ্রহণ হয়েছে। সেই ভোট নিয়েই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী। তাঁর আর্জি ছিল, ভোটের দিন যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে হবে।