Dilip Ghosh: ‘বিজেপিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়, জিজ্ঞাসা করা হয় না’, গুরুদায়িত্ব পাওয়ার জল্পনা উসকে দিলেন দিলীপ ঘোষ

West Bengal Panchayat Election 2023: আজ রাজ্য়ের যে ৬৯৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন হচ্ছে, তা নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বলেন, "পুনর্নির্বাচন নিয়ে আমরা আশাবাদী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন অনেক বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যায়নি। গোটা রাজ্যে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে।"

Dilip Ghosh: 'বিজেপিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়, জিজ্ঞাসা করা হয় না', গুরুদায়িত্ব পাওয়ার জল্পনা উসকে দিলেন দিলীপ ঘোষ
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ।Image Credit source: Twitter
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 10, 2023 | 10:46 AM

কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনে (Panchayat Election 2023) ব্যাপক হিংসা দেখেছে রাজ্য। একাধিক জায়গায় রাজনৈতিক সংঘর্ষ-হানাহানি, বোমাবাজি, গুলিতে প্রাণ গিয়েছে কমপক্ষে ১৯ জনের। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। অন্যদিকে ব্যালট বাক্স (Ballot Box) চুরি থেকে শুরু করে ব্যালট পোড়ানো, পুকুরে ব্যালট ফেলে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবার পুনর্নির্বাচনের ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)। মোট ৬৯৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন হবে। এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেন, “রাজ্যে নির্বাচনের নামে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই সরকারের আর থাকার অধিকার নেই। দরকার নেই এই সরকারের”।

২০২৪ সালের নির্বাচনকে পাখির চোখ বানিয়েছে বিজেপি। চলতি বছরে মধ্য প্রদেশ, তেলঙ্গানা, রাজস্থান সহ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন ও ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখেই দলের সংগঠনে ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদল আনছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই একাধিক শীর্ষ নেতার দায়িত্ব বেড়েছে বা পদ পরিবর্তন হয়েছে। জল্পনা শোনা যাচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ কোনও পদ পেতে পারেন দিলীপ ঘোষও। এই বিষয়ে এ দিন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আগে আমি রাজ্য় সভাপতি ছিলাম। তখন যে পরিমাণ কাজ করতাম, তার থেকে এখন অনেক বেশি কাজ করি। গোটা দেশে ঘুরে বেড়াই। সাধারণ কর্মীদের সঙ্গে দেখা করি, মিটিং করি। আর বিজেপিতে দায়িত্ব দেওয়া হয়, কাউকে তা নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় না। যা দায়িত্ব দেওয়া হয়, তা পূরণ করতে আমরা প্রাণপাত করি। আমরা অমিত শাহ কে দেখেছি যখন তিনি সভাপতি ছিলেন।  ব্লকে, মণ্ডলে গিয়ে মিটিং করতেন। তার ফলে আজ পার্টি সাড়া দেশে পৌঁছে গেছে। এটাই বেসিক কাজ।”

এদিকে, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হতেই দিল্লি গিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। হঠাৎ দিল্লি যাত্রা কেন, এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, মুক্ত বাতাস গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। এই বিষয়ে দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, “রাজ্যে রাজনৈতিক দূষণ হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যে মুক্ত বাতাস নেই।

ভোটে সন্ত্রাসের পর থেকেই বিরোধী দলগুলি, বিশেষ করে বিজেপি রাজ্যে জরুরি অবস্থা জারি করার দাবি জানিয়েছে। সত্য়িই রাজ্যে ৩৫৫ বা ৩৫৬ ধারা লাগু হতে পারে কি না, এই প্রশ্নের জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, “রাজ্যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। সকলে ভয় পাচ্ছেন। নির্বাচনের দিন যা হল, গোটা দেশ ছি ছি করছে। এই সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে এই সরকার এসেছে, সেভাবেই যাওয়া উচিত। কিন্তু ততদিন থাকলে তো রাজ্যের সর্বনাশ হয়ে যাবে।

আজ রাজ্য়ের যে ৬৯৬টি বুথে পুনর্নির্বাচন হচ্ছে, তা নিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি বলেন, “পুনর্নির্বাচন নিয়ে আমরা আশাবাদী। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন অনেক বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া যায়নি। গোটা রাজ্যে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা আরও অনেক বুথে ভোট করাতে পারতাম, কিন্তু তা করতে দেওয়া হয়নি।”

বিজেপির দখলে জেলাপরিষদ আসবে বলেই আশাবাদী রাজ্য় বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “বেশ কয়েকটি জেলা পরিষদ পাব আমরা। উত্তর ও দক্ষিণ-দুই বঙ্গেই আশা করি বেশ কিছু জেলা পরিষদ পাব আমরা।”

নির্বাচন ঘিরে যে সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১৩ জন। এমনটাই অসমর্থিত সূত্রে দাবি। এরমধ্যে অধিকাংশই তৃণমূলের কর্মী বা সমর্থক ছিলেন বলে দাবি শাসক দলের। কিন্তু এ দিন দিলীপ ঘোষ বলেন, “ওদের লোক নয়, সমাজবিরোধীরা মারা গিয়েছে। পুলিশ হার্মাদদের ধরেছে। তৃণমূলের কাছে দুটোই হাতিয়ার ছিল-পুলিশ আর গুন্ডা। ভোটের দিন তৃণমূলের গুন্ডারা রাস্তা বন্ধ করে রেখেছিল। পুলিশ প্রকাশ্যে দাঁড়িয়ে বলেছে শুধু তৃণমূলই ভোট করবে। সন্ত্রাসে সাধারণ ভোটাররা মারা গিয়েছেন। সাধারণ মানুষও পাল্টা জবাব দিয়েছেন।”

এবারের নির্বাচনে বিজেপির মারপিটের খবরের প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “কোথাও যদি করে থাকে, ঠিকই আছে। ওরা প্রতিরোধ করেছে। যেখানে শক্তি দেখাতে এসেছিল, আমরা আটকেছি। মানুষ তাড়া করেছে। কিন্তু পুলিশ এসে আমাদের বাধা দিয়েছে। মজার ব্যাপার, সাধারণ মানুষ মার খায়। আর তারা যখন প্রতিবাদ করে, তখন পুলিশ তাদের ওপরেই লাঠি চালায় আর গ্রেফতার করে। গুণ্ডারা লুঠপাট করে খুন খারাপি করে চলে যায়, তাদের কেউ আটকায় না”।