Calcutta High Court: ED-র মামলায় হাইকোর্টে হলফনামা দিতে এসে CID-র হাতে গ্রেফতার! বেজায় বিরক্ত বিচারপতি
Calcutta HC: বেজায় বিরক্ত বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। প্রশ্ন তুললেন, 'কার নির্দেশে সিআইডি এটা করল? রেজিস্ট্রার জেনারেলের অনুমতি কি নেওয়া হয়েছে? কোন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন?'
কলকাতা: সাইবার অপরাধের এক মামলায় আর্থিক তছরূপের অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। সেই মামলায় দুই অভিযুক্ত কুণাল গুপ্তা ও নন্দিনী গুপ্তা এদিন হাইকোর্টে হলফনামা দিতে এসেছিলেন। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তি মাঝে দুবাইয়ে চলে গিয়েছিলেন। তারপর এদিন আদালতে হলফনামা দিতে আসেন। আর তখনই সিআইডি তাঁদের গ্রেফতার করে হাইকোর্ট থেকে। ওই সাইবার অপরাধের ঘটনায় পৃথক FIR দায়ের করে তদন্ত চালাচ্ছিল সিআইডিও। সেই FIR-এর ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেফতার করে নেন রাজ্যের গোয়েন্দারা।
আর এই নিয়েই এদিন আদালতে আপত্তি জানায় ইডির আইনজীবী। তাদের বক্তব্য, মামলায় তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। হঠাৎ করে এভাবে সিআইডি যদি গ্রেফতার করে নেয়, তাহলে তারা তদন্ত করবে কীভাবে? এদিকে দুপুরে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাস বসতেই গ্রেফতারির বিষয়টি বিচারপতির নজরে আনেন অভিযুক্তদের আইনজীবী। আর তা শুনেই বেজায় বিরক্ত বিচারপতি। প্রশ্ন তুললেন, ‘কার নির্দেশে সিআইডি এটা করল? রেজিস্ট্রার জেনারেলের অনুমতি কি নেওয়া হয়েছে? কোন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন?’
এরপরই বিচারপতি রাজ্যকে নির্দেশ দেন, যে অফিসাররা ওই দু’জনকে গ্রেফতার করেছেন তাঁদের এজলাসের হাজির করার জন্য। কড়া বার্তাও দেন বিচারপতি। বলেন, ‘নাহলে, আমি যা নির্দেশ দেওয়ার দেব। কেউ ছাড় পাবে না।’ এদিকে বিচারপতির ধমকের পরই গ্রেফতার হওয়া দু’জনকে এবং সিআইডির পাঁচ জন অফিসারকে নিয়ে এজলাসে হাজির হন পিপি ও সরকারি আইনজীবী রুদ্রদীপ্ত নন্দী। সিআইডির তরফে জানানো হয়, এজলাসের মধ্যে থেকে গ্রেফতার করা হয়নি। হাইকোর্টের পশ্চিম গেটের সামনে থেকে ওই দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
যদিও এই জবাবে সন্তুষ্ট হননি বিচারপতি। বিচারপতি বলেন, আদালতের নির্দেশে তাঁরা হলফনামা দিতে এসেছিলেন। এরপর যদি অন্য তদন্তকারী সংস্থা তাঁদের গ্রেফতার করে নেয়, সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। ধমকের সুরে বললেন, ‘সিআইডির বিরুদ্ধে কেন রুল ইস্য়ু করব না? এতদিন সিআইডি কী করছিল? আমি এই নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আজই কথা বলব। নাহলে এই প্রবণতা চলতেই থাকবে।’
প্রসঙ্গত, রাজ্যের তরফে এদিন আদালতে জানানো হয়, ওই দুই ধৃতের বিরুদ্ধে সাত হাজার বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে পৃথক মামলা হয়েছে। তখন অভিযুক্তদের আইনজীবীর পাল্টা প্রশ্ন, ‘তাহলে এতদিন কেন গ্রেফতার করা হল না? আজ কোর্টের নির্দেশে তাঁরা হলফনামা জমা দিতে এসেছিলেন। আর এখান থেকে সিআইডি অ্যারেস্ট করবে? এটা কি মগের মুল্লুক চলছে?’
যদিও শেষ পর্যন্ত বিচারপতি বলেন, গ্রেফতারির ক্ষেত্রে আইনি বাধা নেই। কিন্তু যেভাবে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটা মেনে নেওয়া হলে যে যা খুশি করবে। তা যে কাম্য নয়, সেটাই এদিন বলেন বিচারপতি। আগামিকাল এই মামলার ফের শুনানি রয়েছে।