Calcutta High Court: ‘লকেটের অভিযোগেই ওভার অ্যাকশন?’ প্রশ্ন তুলে শিক্ষিকার ৪ বছরের বেতন ফেরতের নির্দেশ বিচারপতি বসুর
Calcutta High Court: এই মামলায় আগেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে সেই মামলারই শুনানি ছিল হাইকোর্টে।
কলকাতা: “লকেট চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন বলেই এত ওভার অ্যাকশন?” চুঁচুড়ার সাসপেন্ড হওয়া শিক্ষিকার করা মামলায় হাইকোর্টের তোপের মুখে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং জেলা স্কুল পরিদর্শক। একইসঙ্গে আগামী ২ সপ্তাগের মধ্যে ওই শিক্ষিকার চার বছরের বেতন ফেরানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের শীর্ষ আদালতের তরফে। এই মামলায় আগেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এদিন শুনানিতে ফের পর্ষদ ও স্কুল পরিদর্শকের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
আদালতের তোপের মুখে পড়ে ‘ক্ষমা’ চাইতেও দেখা যায় জেলা স্কুল পরিদর্শককে। ‘কবুল’ করেন দোষ। বলেন, “আমি বেআইনিভাবে ওই শিক্ষিকাকে বহিষ্কার করেছি। এটা আমার ভুল হয়েছে। সেই সময় তার আমার মাথার ঠিক ছিল না। ওই সময় চারিদিকে কোভিড। একইসঙ্গে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় চারিদিকে এই ব্যাপার নিয়ে বিক্ষোভ করছেন চারিদিকে। এতে ছাত্রছাত্রীদের মনেও প্রভাব পড়ছিল।” তাঁর এই আজব যুক্তি শুনে হতবাক হয়ে যান বিচারপতি বসু। বিরক্তিও প্রকাশ করেন। তবে বেতন ফেরতের নির্দেশ দিলেও রাজ্যকে এ জন্য কোনও জরিমানা করা হয়নি। বিচারপতির মতে, যেহেতু ক্ষমা চেয়েছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক। তাই কোনও জরিমানা করা হচ্ছে না। তবে আগামীতে যাতে এ ধরনের কোনও ঘটনা আর না ঘটে সে জন্য সতর্কও করেন তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত আজ থেকে প্রায় বছর চারেক আগে। অভিযোগ, চুঁচুড়ার একটি স্কুলে মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের খাওয়ানো হচ্ছিল নুন আর ভাত। সেই সময় স্কুল পরিদর্শনে আসেন উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। এ ছবি দেখেই চোখ কপালে উঠে যায় তাঁদের। সাসপেন্ড করা হয় শর্মিষ্ঠা ঘোষ নামে ওই শিক্ষিকা এবং বিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জকে। যদিও শর্মিষ্ঠা দেবীর দাবি, যে সময় এ ঘটনা ঘটে তখন তিনি ছুটিতে ছিলেন। সে কারণেই সাসপেন্ডের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। ২০১৯ সালে এ ঘটনা ঘটলেও তারপর কেটে গিয়েছে চারবছরের বেশি সময়। চার বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরও বিদ্যালয় এই ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপও (ডিসিপ্লিনারি প্রসেসিং) করেনি বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষিকা। তিনি এও জানান, তার সঙ্গে সাসপেন্ড হওয়া ইনচার্জের সাসপেনশন বাতিল করেছে বোর্ড। কিন্তু তার সাসপেনশন বাতিল করা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
যদিও এদিন আদালতে সরকারি কৌঁসুলি জানান এই বরখাস্তের নির্দেশ তুলে নিয়েছে রাজ্য। অন্যদিকে বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির আইনজীবী জানান, তদন্ত হলেও তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। তাঁরা বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল সংক্রান্ত কোনও বেনিয়ম দেখেননি। এদিকে নিয়ম বলছে, কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করতে হলে প্রথমে স্কুলকে রিপোর্ট করতে হয় জেলা পরিদর্শককে। জেলা পরিদর্শক ওই রিপোর্ট বোর্ডকে পাঠানোর পর বোর্ড বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় অভিযুক্তকে সাসপেন্ড করা যাবে কিনা। কিন্তু এই ক্ষেত্রে কোনও নিয়মই মানা হয়নি বলে অভিযোগ।