Jadavpur University: ‘গরিমা যেমন সবার, সঙ্কটের সময় দায়-ও সবার’, দায়িত্ব পেয়ে বলছেন বুদ্ধদেব

Jadavpur University: শনিবার যাদবপুরের গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস।

Jadavpur University: ‘গরিমা যেমন সবার, সঙ্কটের সময় দায়-ও সবার’, দায়িত্ব পেয়ে বলছেন বুদ্ধদেব
গ্রাফিক্স - অভীক দেবনাথImage Credit source: TV-9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 20, 2023 | 10:44 AM

কলকাতা: ছাত্রমৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিগত কয়েকদিন ধরে উত্তাল যাদবপুর (Jadavpur University) ক্যাম্পাস। প্রশ্নের মুখে যাদবপুরের গরিমা, প্রশ্নের মুখে কর্তৃপক্ষ, প্রশ্নের মুখে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির চর্চা, ব়্যাগিং বন্ধের জন্য উঠেছে জোরদার আওয়াজ। এদিকে বিগত কয়েক মাস ধরেই উপাচার্যহীন অবস্থায় পড়েছিল যাদবপুর। সুরঞ্জন দাসের মেয়াদ শেষের কয়েকদিনের জন্য উপাচার্যের দায়িত্ব অধ্যাপক অমিতাভ দত্তের কাঁধে পড়লেও তিনিও সরে দাঁড়ান। যে সময় মেইন হস্টেলে এই ঘটনা ঘটে তখনও অভিভাবকহীনই ছিল যাদবপুর। এরইমধ্যে শনিবার যাদবপুরের গণিতের অধ্যাপক বুদ্ধদেব সাউকে (Prof Buddhadeb Sau) অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস। এদিকে ক্যাম্পাস মুড়ে ফেলা হোক সিসিটিভিতে, মানা হোক ব়্যাগিং রোধে ইউজিসির যাবতীয় নির্দেশিকা, বারবার উঠেছে এই দাবি। এই বিতর্কের আবহে দাঁড়িয়ে নতুন দায়িত্ব পেয়ে কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে চালানোর কথা ভাবছেন বুদ্ধদেববাবু? কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন রাজনীতির দাদাদের দাদাগিরি। টিভি-৯ বাংলার এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে সে কথাই বললেন যাদবপুরের নয়া উপাচার্য। 

প্রশ্নঃ বদলাবেন যাদবপুরের সিস্টেম? কীভাবে?

উঃ যে কোনও সিস্টেমই যত ভালই হোক না কেন তারপরেও সেটাকে ভাল করার থেকে থাকে। তবে সেই প্রক্রিয়াটা সব সময় সহজ হয় না। বরং ভালর থেকে আর একটু ভাল করা অনেক বেশি কঠিন। তাই কঠিন পরিস্থিতি সবসময় আছে। আমাদের সিস্টেম সব ঠিকই আছে। কোন কোনও জায়গায় হয়তো প্রয়োগে কিছু সমস্যা থেকে যায়। কিছু জড়তা এসে গিয়েছিল হয়তো কিছু জায়গায়। আজকের এ ঘটনা সবটা নাড়িয়ে দিয়েছে। আমি নিজে অ্যান্টি ব়্যাগিং কমিটিতে থাকি। পদক্ষেপ করা হয় না এটা ঠিক নয়। স্টেপ অনেক সময়ই নেওয়া হয়েছে। 

প্রশ্নঃ ছাত্র মৃত্যু, ব়্যাগিং, প্রাক্তনীদের হস্টেলে জোর করে থাকার বিষয়টা কীভাবে দেখছেন? 

উঃ প্রাক্তনীদের হস্টেলে থাকার ঘটনা একদমই কাম্য নয়। অবস্থা এমন যাঁর নতুন ছাত্র আসে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের সবাইকে হস্টেলে সবসময় জায়গা দেওয়া সম্ভব হয় না। সুতরাং, প্রাক্তনীরা সেখানে থাকবে এটা তো হতে পারে না। 

প্রশ্নঃ যাদবপুরের ভাবমূর্তি কীভাবে উদ্ধার করবেন?  

উঃ যাঁরা যাদবপুরে জয়েন করবেন ভাবছেন, বা পাবলিকের এ ঘটনায় আর ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এরকম ধরনের ঘটনা শুধু যে যাদবপুরে ঘটতে পারে তা তো নয়। যে কোন জায়গায় ঘটতে পারে। তাহলে কী আপনি যাদবপুর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন? এটার কোনও মানে হয় না। এরকম ঘটনা আইআইটি-সহ আরও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুনতে পাবেন। তাহলে যাবেন কোথায়? এটা আসলে সামাজিক ব্যাধি। সবাই মিলে এটাকে নির্মূল করতে হবে। মিডিয়াকেও সক্রিয় হতে হবে। আমাকেও সবাইকে নিয়ে চলতে হবে। আমি তো একা কিছু করতে পারব না। আমাদের প্রশাসন আছে, ফ্যাকাল্টি আছে, ছাত্ররাও আছে। আজ যাদবপুরের গরিমা তৈরির পিছনে সকলের হাত রয়েছে। এটা কোনও একজন ভিসির ক্রেডিট নয়। এতে সবার কৃতিত্ব আছে। আর আজ যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে সেই দায়ও কোনও একজনের নয়। সেটাও সকলের। 

প্রশ্নঃ সিসিটিভি বসাবেন? 

উঃ শুধু সিসিটিভি নিয়ে কেন কথা হচ্ছে! সবার আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে।  সিসিটিভি না করে হিউম্যান সারভিল্যান্স শুরু করা যেতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত কোনটা ঠিক হবে, সেটা ভেবে দেখতে হবে। সবার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্তে আসতে হবে। আর মিডিয়াকেও বলার যে আপনারা সত্যিটা দেখান। বানিয়ে কিছু বলবেন না। 

প্রশ্নঃ ক্যাম্পাসে রাজনীতিকে কীভাবে দেখেন? 

উঃ রাজনীতিকে আমরা নোংরা নীতি হিসাবে ভাবব কেন। রাজনীতি রাজার নীতি। রাজা মানুষকে প্রোটেকশন দেয়। সেই হিসাবে রাজনীতির যদি কেউ করে থাকে, তাঁরা যদি সত্যি সমাজের ভাল করার কথা ভাবে, বিশ্ববিদ্যালয়কে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবে, এর মধ্যে কোনও দোষের কিছু নেই। কিন্তু, ক্ষমতা দখল করার জন্য একদল আরেক দলকে দোষারোপ করবে, এটা ঠিক নয়। সেটা যদি হয়ে থাকে সেটা অত্যন্ত ক্ষতিকারক।

প্রশ্ন: ক্যাম্পাস নেশার আঁতুড়ঘর, বারবার ওঠে এই অভিযোগ। কী বলবেন? 

উঃ আমি কখনও বনে ঢুকে মদের বোতল খোঁজার চেষ্টা করিনি। রাস্তায় দু-একবার দেখেছি। তবে খুবই কম।

প্রশ্ন: বারবার ভিসিরা ছাত্র বিক্ষোভে পিছু হটেন, আপনিও কী এরকম পরিস্থিতি এলে সেটাই করবেন?

উঃ সময় বলবে।