Child rights commission Explained: শিশু অধিকার সুরক্ষায় কার কতটা দায়িত্ব? লক্ষ্মণরেখাই বা কতটা কেন্দ্র-রাজ্যের কমিশনের?

Child rights commission: তবে এই দুই কমিশনের কাজ কী? তাদের এক্তিয়ার কতটা? শিশু সুরক্ষাতে এই দুই কমিশন কী কী পদক্ষেপ করতে পারে? দেখে নেওয়া যাক...

Child rights commission Explained: শিশু অধিকার সুরক্ষায় কার কতটা দায়িত্ব? লক্ষ্মণরেখাই বা কতটা কেন্দ্র-রাজ্যের কমিশনের?
(গ্রাফিক্স: শুভ্রনীল দে)
Follow Us:
| Updated on: Apr 01, 2023 | 7:30 PM

কলকাতা: তিলজলায় শিশু খুন। গাজোলে শিশু ধর্ষণ। এই দুই ঘটনায় এলাকা পরিদর্শন করেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন (NCPCR)। রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনও (WBCPCR) দুই জায়গায় পৌঁছে বিষয়টি তদারকি করছে। যে কোনও ঘটনায় দুই কমিশন স্বতন্ত্রভাবে বিষয়টি দেখতেই পারে কিন্তু তিলজলা এবং গাজোলে এই দুই কমিশন যেভাবে পরস্পরের দিকে আঙুল তুলে বাক বিতণ্ডায় জড়িয়েছে, তা নজিরবিহীন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। অনেকে মনে করছেন, ঘটনার গভীরতায় না গিয়ে শুধু রাজনীতিকরণ হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, আদৌ এই কমিশন নিজের দায়িত্ব পালন করছে কি? কেন্দ্র ও রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশনের কাজ কী? তাদের এক্তিয়ার কতটা? শিশুর অধিকার সুরক্ষায় কী কী পদক্ষেপই বা করতে পারে এই দুই কমিশন?

জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন

২০০৭ সালে চেয়ারপার্সন-সহ ৭ সদস্যকে নিয়ে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন বা ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ড রাইট (NCPCR) গঠিত হয়। এই সাতজনের মধ্যে দু’জন মহিলা সদস্য থাকেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশু কল্যাণের ক্ষেত্রে উল্লেখ্যযোগ্য কাজের অবদান থাকতে হবে চেয়ারপার্সেনের। শুধু চেয়ারপার্সন নয়, সদস্যদেরও পারদর্শী হতে হবে শিশুস্বাস্থ্যে। শিশু কল্যাণে নজর দিতে হবে তাঁদের। শিশুর লাঞ্ছনা বিষয়ে কিংবা অবহেলা, বঞ্চনার অভিযোগকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দিতে হবে সদস্যদের। শিশুর মৌলিক অধিকার রক্ষা, ন্যায় বিচার, শিশুর সামগ্রিক বিকাশ এই সদস্যদের কাজ।

রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন

২০০৫ সালে শিশুদের অধিকার সুরক্ষায় এই কমিশন গঠিত হয়। শিশুদের উপর অত্যাচার বন্ধ এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কমিশন কাজ করে। পীড়িত শিশুদের বিশেষ যত্ন এবং সুরক্ষা সম্পর্কিত সমস্যাগুলি বিবেচনা করেন শিশু সুরক্ষা কমিশনের সদস্যরা। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যার উপযুক্ত প্রতিকারও করে থাকেন তাঁরা।

শিশু অধিকারের বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য কমিশনের সদস্যরা গবেষণা করতে পারেন। প্রয়োজনে রাজ্যের বিভিন্ন চাইল্ড কেয়ার ইনস্টিটিউশনও তাঁরা পরিদর্শন করতে পারেন। শিশু নির্যাতন, তাদের অধিকার লঙ্ঘিত হলে কমিশনের সদস্যরা বিষয়টির তদন্ত করতে পারেন। শিশুদের সুরক্ষার স্বার্থে যা যা করণীয় কমিশনের সদস্যরা তা প্রচারও করে থাকেন। বর্তমানে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের অ্যাডভাইজার অনন্যা চক্রবর্তী। চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়। রয়েছেন স্পেশ্যাল কনসাল্টট্যান্ট সৌমিত্র রায়। এর পাশাপাশি রয়েছেন ছ’জন সদস্য।

কার কতটা এক্তিয়ার

প্রসঙ্গত, জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন হোক বা রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন, উভয়ই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে। তবে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন দেশের যে কোনও প্রান্তে শিশুদের উপর নির্যাতনের অভিযোগ পেলে তারা সেখানে পৌঁছে খোঁজ খবর নিতে পারে। এই দুই কমিশন স্বতন্ত্রভাবে কাজ করে। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের শিশু অধিকার কমিশন কোনও কাজে দায়বদ্ধ নয়। তবে, কেন্দ্রের কমিশন বিভিন্ন ইস্যুতে রিপোর্ট তলব করতেই পারে রাজ্যের কাছ থেকে। যদিও রিপোর্ট পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্যের কমিশনই। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহল বলছে, সাম্প্রতিককালে জাতীয় এবং রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে সম্পূর্ণ রাজনীতির উপর নির্ভর করে। তিলজলা এবং গাজোল তারই প্রতিফলন বলে মত তাঁদের।

কী বলছেন বিশেষজ্ঞ?

রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোকেন্দু সেনগুপ্ত বলেন, “একই ক্ষমতা দেওয়া রয়েছে দু’পক্ষকে। মাঝে মধ্যে এরকম হতে পারে, হয়ত কোনও ক্ষেত্রে রাজ্য তেমন গুরুত্ব দিল না তখন জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন হস্তক্ষেপ করতে পারে। আজকে যে ঘটনা ঘটল তা পুরোপুরি রাজনৈতিক ব্যাপার। এরকম এ রাজ্যে আগে হয়নি। যদি জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন তদন্তের দায়িত্ব নিয়ে চিঠি দেয় তাহলে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের এখানে ঢোকা উচিত হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “যে কোনও কমিশন তদন্ত করতে পারে। যে আগে পৌঁছবে তার দায়িত্ব আরও বেশি। তাকে পুরো বিষয় খতিয়ে দেখতে হবে।”