Sadhguru Jaggi Vasudev: কোন ঘটনার পর বদলে গিয়েছিল সদগুরুর গোটা জীবনটাই! খোদ জানালেন যোগগুরু

Biography in Bengali: যে কোনও কিছু দেখলেই তা নিয়ে ভাবতে শুরু করতেন। বিভিন্ন প্রকারের জিনিসগুলি দেখে মনের মধ্যে কৌতূহল চেপে ধরত, তারপর থেকেই মনকে শান্ত করার জন্য নিজে থেকেই প্রশ্ন করা শুরু করতেন।

Sadhguru Jaggi Vasudev: কোন ঘটনার পর বদলে গিয়েছিল সদগুরুর গোটা জীবনটাই! খোদ জানালেন যোগগুরু
ছবি সৌজন্যে ইশা ফাউন্ডেশন
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 22, 2023 | 2:31 PM

মাত্র ২৫ বছর বয়সে এক অস্বাভাবিক ঘটনায় জীবনে মোড় ঘুরে গিয়েছিল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় আধ্যাত্মিক ও যোগগুরুর। যার পরে তিনি সমস্ত আনন্দ ত্যাগ করে চামুন্ডি পর্বতের একটি বিশাল পাথরের উপর বসে আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা লাভ করেন। সদগুরু জগ্গি বাসুদেবের জীবন কাহিনি এক অসাধারণ মানুষের গল্পের মতো। সদগুরুকে আজ কে না চেনেন? চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা ও ব্যক্তিত্ব কোটি কোটি মানুষের বিপথগামী জীবনকে ইতিবাচক দিকনির্দেশন করেছে। সদগুরু হলেন একজন পবিত্র সত্ত্বা, যোগী, দূরদর্শী, কবি, লেখক, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বক্তা ও ব্যক্তিত্ব, যিনি জীবন ও মৃত্যুর ঊর্ধ্বে। বিশ্বের প্রায় ৫০ জন প্রভাবশালী ব্যক্তির তালিকায় সদগুরুর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাঁকে। প্রথম জীবনেই তিনি সদগুরুতে পরিণত হননি, জগ্গি বাসুদেব থেকে গুরু ও তারপর সদগুরু হিসেবে পরিচিত হয়েছেন বিশ্বমঞ্চে।

সদগুরুর জীবনী

১৯৫৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর, কর্ণাটকের মাইসোরে একটি ধনী তেলেগু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন সদগুরু জগ্গি বাসুদেব। তাঁর পুরো নাম জগদীশ ‘জগ্গি’ বাসুদেব। শৈশব থেকেই ভিন্নভাবে চিন্তা করতেন। যে কোনও কিছু দেখলেই তা নিয়ে ভাবতে শুরু করতেন। বিভিন্ন প্রকারের জিনিসগুলি দেখে মনের মধ্যে কৌতূহল চেপে ধরত, তারপর থেকেই মনকে শান্ত করার জন্য নিজে থেকেই প্রশ্ন করা শুরু করতেন। কেউ যদি তাঁকে জল দিতেন তাহলে জল সম্পর্কে তার মনে অনেক প্রশ্ন জাগত। যেমন জল কী, কার জন্য, কীভাবে এবং কেন ব্যবহার করা হয় ইত্যাদি। এমন বিচিত্র এই অভ্যাস নিয়ে তাঁর বাবাও অত্যন্ত চিন্তিত হতে থাকেন। বয়স যত বাড়তে শুরু করে, তাঁর মনে আরও প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে থাকে। শৈশবে তিনি গাছের নিচে বসে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। মাত্র ১১ বছর বয়সে যোগ গুরু রাজেন্দ্র ভাবজি মহারাজের কাছ থেকে যোগ অনুশীলন শুরু করেছিলেন।

দ্বাদশ ক্লাস পাস করার পর, সদগুরু মহীশূর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক হন। পড়াশোনা শেষ করে সদগুরু ব্যবসা শুরু করেন। তাতেও একজন সফল ব্যবসায়ীও হয়ে ওঠেন। এছাড়া পোল্ট্রি ফার্ম, ইটভাটা ও নির্মাণ ব্যবসাতেও নিজেকে নিযুক্ত করেন। সদগুরু ভিজ্জি নামে এক মহিলাকে বিয়ে করেন ও বিবাহিত জীবন শুরু করেন। বিয়ের ছয় বছর পর ১৯৯০ সালে তাদের একটি মেয়ে হয়, যার নাম ছিল রাধে জাগ্গি।

কোন ঘটনা তাঁর জীবনটাই বদলে দেয়

সদগুরু যখন ২৫ বছরের যুবক, তখন তাঁর জীবনে এমন একটি অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছিল, যার পরে তিনি সব আনন্দ ত্যাগ করেছিলেন। শুরু হয় আধ্যাত্মিক জীবন। তাঁর কথায়, এই বয়সে একদিন তিনি মহীশূরে অবস্থিত চামুন্ডি পাহাড়ে যান। সেখানে পাহাড়ের উঁচু পাথরে বসে থাকতে থাকতে ধীরে ধীরে ধ্যানে মগ্ন হয়ে যান। এই সময়ে, তাঁর মনে হয়েছিল যে তিনি প্রকৃতির সঙ্গে দেখা করেছেন। আর এটিই ছিল সদগুরুর জীবনের এমন একটি অভিজ্ঞতা, যার জেরে গোটা জীবনের অর্থই পাল্টে যায় এক নিমেষে।

চামুন্ডি পাহাড়ের পাথরে বসে সদগুরু ধ্যানে গভীরভাবে মগ্ন হয়েগিয়েছিলেন। সেই অবস্থা এমন একটি অবস্থা যা ব্যক্তি সচেতন থাকে, কিন্তু চিন্তা-চেতনা শূন্য হয়ে যায়। এত বেশি যে সময়ের কোনও ঠিক ঠিকানা থাকে না। সদগুরু যখন ধ্যানমগ্ন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসেন, তখন তিনি অনুভব করেন মাত্র ১০ মিনিট তিনি এইভাবে কাটিয়েছেন। কিন্তু এই সময় ঠিক নয়। তিনি ওই অবস্থায় মোট ৪৮ ঘণ্টা কাটান। এরপরে সদগুরু আবার ধ্যানমগ্ন অবস্থায় চলে যান। পরে ধ্যানমগ্ন অবস্থায় থাকা সদগুরুকে মালা পরিয়ে পুজো করেছিলেন বহু মানুষ। সদগুরুর মতে, তিনি গভীর ধ্যানে চলে গিয়েছিলেন মাত্র ২৫ মিনিট। পরে জানতে পারেন তিনি আসলে একইভাবে ধ্যানরত অবস্থায় ছিলেন টানা ১৩দিন ধরে।