Bowhead Whales Superpower: ওদের ওজন ৮০০০০ কেজি, আর ওরাই এনে দিতে পারে cancer-এর ‘answer, চেনেন ওদের?

DNA Repairing: গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, DNA-এর খণ্ডন এবং হেলিক্সের ত্রুটি একেবারে নির্ভুলভাবে সংশোধন করতে পারে তিমির কোষ। CIRBP এবং RPA2 নামক দুই প্রোটিনের সহায়তায় মূলত জিন সারাই করে থাকে তিমির এই প্রজাতি।

Bowhead Whales Superpower: ওদের ওজন ৮০০০০ কেজি, আর ওরাই এনে দিতে পারে cancer-এর 'answer, চেনেন ওদের?
Follow Us:
| Updated on: Jun 16, 2023 | 5:15 PM

বেঁচে থাকতে গেলে আবিষ্কার করতে হবে ওষুধ, খুঁজে বের করতে হবে নতুন পথ। ডারউইনের ‘যোগ্যতমের উদবর্তন’ প্রতি মুহূর্তে মেনে চলছি আমরা, আর সেই পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি আলাস্কার উত্তরভাগে আর্কটিক সাগরে বসবাসকারী বোহেড তিমিরা এমন কিছু তথ্য সামনে এনেছে, যাতে মানুষের আয়ুবৃদ্ধির রসদ খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা! এই দৈত্যাকার মহাসাগরীয় জীবের দল বাঁচে প্রায় দু’শতকের বেশি সময়। তিমির আঁশ এবং ত্বকের নমুনা পরীক্ষা করে এমন কিছু খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা, যাতে এটা বোঝা যায় যে, কীভাবে এত প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝেও দশকের পর দশক অনায়াসে বেঁচে থাকে তারা।

কেন গবেষণায় বোহেড তিমি?

‘বায়োআর১৪’ নামক এক জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বোহেড তিমির ত্বকে থাকা কিছু রাসায়নিক ক্ষমতার জেরে তাদের আঁশের ক্ষত সেরে উঠে তরতাজা হয়ে যায় নিমেষে। প্যারিসের ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের বিবর্তন বিশেষজ্ঞ অর্সল্যা ভিনসের মতে, “ত্বকের ক্ষত এত দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার অর্থ হল ক্যান্সার থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকা। অন্যান্য প্রাণীরও কোষীয় ক্ষত সারানোর নিজস্ব কৌশল রয়েছে, তবে বোহেড তিমি যেভাবে কোষের ক্ষত নির্মূল করে, তা অভাবনীয়!”

তিমি পরিবারের এই সদস্যদের চেনেন?

বোহেড তিমির বৈজ্ঞানিক নাম―Balaena mysticetus। এই তিমি প্রায় ১৮ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে এবং ওজনের বিচারে পৃথিবীর স্তন্যপায়ীদের মধ্যে প্রথম সারিতে অবস্থান করে। ৬টি সম্পূর্ণ ভর্তি স্কুলবাসের ওজনের সমান একটি বোহেড তিমির ওজন, অর্থাৎ প্রায় ৮০,০০০ কিলোগ্রাম! বিজ্ঞানীদের মতে, এত বিশাল দেহাবয়ব মানেই বিশাল সংখ্যক কোষের আধার, প্রত্যেক কোষ বিভাজনের সময় কোনও ভয়াবহ অভিযোজনের সম্ভাবনা থেকেই যায়, তবে প্রত্যেকবার সেই সম্ভাবনা কাটিয়ে সুস্থতার দিকে এগিয়ে যায় বোহেড তিমি। কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে আপাতত মগ্ন বিজ্ঞানীরা।

এত বিশাল দেহে এত ক্ষমতা! ঐশ্বরিক?

উতাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষবিজ্ঞানী ও গবেষক লিসা অ্যাবেগলনের মতে, “পেতোর প্যারাডক্স অনুযায়ী, এমন বিশাল দেহের প্রাণীদের কোষীয় ক্ষত বা অভিযোজন সংক্রান্ত বিপদ এড়ানোর বিশেষ কৌশল থাকে।” প্রসঙ্গত, লিসার বৈজ্ঞানিক দলের গবেষণাতেই উঠে আসে যে, মানুষের মতোই বেঁচে থাকে যে হাতিরা, তাদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক হাতিই কর্কট রোগে অর্থাৎ ক্যান্সারে প্রাণত্যাগ করে। জার্নাল থেকে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক, গবেষণাগারে মানুষ, ইঁদুর ও বোহেড তিমির কোষ একত্রে পরীক্ষা করে দেখেছেন রোচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ভেরা গর্বুনভা এবং তার বিশেষ দল।

মানুষকে দীর্ঘায়ু দান করবে বোহেড?

গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, DNA-এর খণ্ডন এবং হেলিক্সের ত্রুটি একেবারে নির্ভুলভাবে সংশোধন করতে পারে তিমির কোষ। CIRBP এবং RPA2 নামক দুই প্রোটিনের সহায়তায় মূলত জিন সারাই করে থাকে তিমির এই প্রজাতি। লিসা অ্যাবেগলন জানিয়েছেন, হয়তো প্রকৃতি আমাদের সামনেই ক্যান্সারের ওষুধ ছড়িয়ে রেখেছে, আমাদের শুধু সেটা খুঁজে বার করতে হবে। অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে এই জিনগত ত্রুটি সারাইয়ের ক্ষমতা থাকলেও তা খুব একটা উন্নত নয়; তবে বোহেড তিমি যেভাবে DNA-এর দুই ধারাকে অক্ষুণ্ন রেখে জিনের গুণগত মানকে রক্ষা করে, তাতে চমকে গিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আগামীতে ক্যান্সারের উত্তর যে দিতে পারে এই জলজ স্তন্যপায়ীরা, সে সম্পর্কে বেশ আশাবাদী বিশ্বের বৈজ্ঞানিকমহল।