Panchayat 2023: পাছে ভয় দেখিয়ে দল ভাঙিয়ে নেয়, পার্টি অফিসই এখন আশ্রয়স্থল ভোটে জেতা বিজেপি নেতাদের
Alipurduar: জয়ী প্রার্থীদের বক্তব্য, যেভাবেই হোক গ্রামপঞ্চায়েত দখল করতে মরিয়া শাসকদল। ভয় দেখিয়ে ফুল বদলাতে বাধ্য পর্যন্ত করতে পারে, আশঙ্কা তাঁদের। পাল্টা শাসকদলের বক্তব্য, এসব সহানুভূতি আদায়ের খেলা বিজেপির পুরনো অভ্যাস।
আলিপুরদুয়ার: মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়ে ভোটে জিতেছেন। তবু সেই জয়ের আনন্দটুকু ভাগ করার সুযোগ পাচ্ছেন না। ভোটের জয়ই যেন কাল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অভিযোগ, নির্বাচনে জিতে বাড়ি ছেড়ে ঠাঁই নিতে হচ্ছে দলীয় কার্যালয়ে। মাটিতে চাদর, বালিশ পেতে দিনরাত কাটছে জয়ী জনপ্রতিনিধিদের। আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের (Alipurduar) তিনটি গ্রামপঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থীদের এখন এমনই অবস্থা। আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে’র গড়ে পাতলাখাওয়া গ্রামপঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়েছে শাসকদলের। পাশাপাশি পূর্ব কাঁঠালবাড়ি ও চকোয়াক্ষেতি গ্রামপঞ্চায়েত পেয়েছে বিজেপি। বিজেপির অভিযোগ, এই তিনটি গ্রামপঞ্চায়েতের ৩৩ জন জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য এখন প্রাণের ভয়ে ঘর ছেড়ে পার্টি অফিসে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। একইসঙ্গে দলের ঝুঁকি, বাড়িতে প্রার্থীরা থাকলে কোনওভাবে ভয় দেখিয়ে যদি দল ছাড়তে বাধ্য করে। তা হলে যে পঞ্চায়েতটাও হাতছাড়া হয়ে যাবে।
পরিবার পরিজন নিয়েই আলিপুরদুয়ারে বিজেপির কার্যালয়ে টিঙ্কু ভৌমিক দে। তাঁর আবার কোলের বাচ্চাও আছে। তিনি বলছেন, তাঁর ভয় আরও। শুধু নিজের বিপদ নয়, অতটুকু শিশুকেও যদি রেহাই না দেয়! দল কার্যালয়ে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। সকালের চা থেকে দুপুর-রাতের খাবার, সবই দিচ্ছে দল। পূর্ব কাঁঠালবাড়ির চন্দন মজুমদার বলেন, “আগেরবারও অঞ্চল আমাদের হাতছাড়া হয়েছে। জেতার পর শাসকদল বিভিন্নভাবে হামলা করে, ভয় দেখিয়ে দখল করেছে। এবারও সেই ভয় পাচ্ছি। আমাদের জেতা অঞ্চল কেন ওদের দেব?”
জয়ী প্রার্থীদের বক্তব্য, যেভাবেই হোক গ্রামপঞ্চায়েত দখল করতে মরিয়া শাসকদল। ভয় দেখিয়ে ফুল বদলাতে বাধ্য পর্যন্ত করতে পারে, আশঙ্কা তাঁদের। তাই দলও ঝুঁকি নিচ্ছে না। নিরাপদ জায়গায় রাখছে বিজেপি প্রার্থীদের। থাকা, খাওয়া সবই দলের কার্যালয়ে। বিজেপির মুখপাত্র শঙ্কর সিনহা বলেন, “জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে রীতিমতো টানাটানি করছে। ভয় দেখিয়ে শাসকদলে যোগদান করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশকে দিয়ে ভয় পর্যন্ত দেখাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে তিনটি গ্রামপঞ্চায়েতের জয়ী সদস্যদের দলের কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। থাক ওখানেই। আপাতত বাড়ি তো যেতে পারছেন না।”
বিষয়টি কানে গিয়েছে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর মজুমদারেরও। তিনি বলছেন, এমনটা কোনওভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। তিনি বলেন, টিভি৯ বাংলার কাছেই তিনি এমন অভিযোগের কথা জানলেন। খোঁজ নিয়ে দেখবেন দলের কেউ এই ঘটনায় জড়িত কি না। একইসঙ্গে ভাস্করের বক্তব্য, “আমাদের দলের স্পষ্ট নির্দেশ আছে, জনগণের রায় মাথা পেতে নিতে হবে। বিজেপি অভিযোগ করলেই তো আর হবে না। বিজেপি সেফ শেল্টারের খেলাটা খেলে। এর আগেও আমরা দেখেছি। আমাদের এখানে সমস্ত শ্রেণির মানুষের নিরাপত্তা আছে। বিজেপি সহানুভূতি আদায়ের জন্য এটা করছে।” বিজেপির অভিযোগের সত্য়টা কতটা তা দল, প্রশাসন উভয়ই দেখবে বলে জানিয়েছেন তিনি।