Panchayat Election 2023: এক নামে জমি-বাড়ি, অন্য নামে রাজনীতি! তৃণমূল প্রার্থীর জোড়া নাম ঘিরে বিতর্ক
Birbhum: বাড়ি, ব্যবসা, জমি-জায়গা কেনা, বিদ্যুতের বিল- এসব চলছে এক নামে। আর রাজনীতি করছেন আর এক নামে। 'কী নামে ডেকে, বলব তোমাকে...' শ্যামল মিত্রর এই গানের কলির প্রভাব এতদূর গড়াতে পারে! তা হয়ত বীরভূমের এই কাণ্ড না দেখলে বোঝা যেত না।
বীরভূম: নামে কী আসে যায়! কিন্তু তাই বলে এতটা? একেবারে জোড়া সরকারি পরিচয়? এমনও হয়? পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এমনই তথ্য টিভি নাইন বাংলার হাতে এল। আর এই ঘটনা সেই বীরভূমে। বিগত দিনগুলিতে যেখানে বার বার বেনিয়মের অভিযোগ ধরা পড়েছে। এবার এই কাণ্ডও সেই বীরভূমেই। আর তিনিও এক তৃণমূল নেতা। এবারের পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থীও হয়েছেন। নাম প্রদীপ ভকত। কিংবা বাবলু ভকত বলেও ডাকতে পারেন তাঁকে। দুটি তাঁরই নাম। সরকারিভাবে। বাবার নাম পরশুরাম ভকত। বাড়ি, ব্যবসা, জমি-জায়গা কেনা, বিদ্যুতের বিল- এসব চলছে এক নামে। আর রাজনীতি করছেন আর এক নামে। ‘কী নামে ডেকে, বলব তোমাকে…’ শ্যামল মিত্রর এই গানের কলির প্রভাব এতদূর গড়াতে পারে! তা হয়ত বীরভূমের এই কাণ্ড না দেখলে বোঝা যেত না।
বীরভূম জেলা পরিষদের বিদায়ি খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ ভকত। এবারের ভোটেও তিনি প্রার্থী হয়েছেন। মনোনয়নপত্রে তাঁর নাম রয়েছে প্রদীপ ভকত। কিন্তু জমি-বাড়ির দলিলে নাম রয়েছে বাবলু ভকত। বাড়ির বিদ্যুতের বিল মেটাচ্ছেন বাবলু নামেই। কিন্তু জেলা পরিষদের আসনে বসছেন প্রদীপ নামে। কীভাবে হচ্ছে এমন তাজ্জব কাণ্ড? এমন হলে তো দেশের আইন সংবিধান অনুযায়ী প্রার্থী পদ বাতিলের পাশাপাশি গ্রেফতার হয়ে যাওয়ার কথা। সেখানে ভোটের আগে দাপিয়ে প্রচার চালিয়ে গেলেন তিনি। কীভাবে হল? আসল ঘটনাটি ঠিক কী!
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল ওই তৃণমূল নেতার সঙ্গে। শাসক দলের প্রার্থীর ব্যাখ্যা, তাঁর পুরনো ভোটার কার্ডে নাম ছিল প্রদীপ কুমার ভকত, ব্র্যাকেটে লেখা ছিল বাবলু। কিন্তু প্যান কার্ডে নাম ছিল বাবলু। পরবর্তীতে সব একরকম করে প্রদীপ কুমার ভকত করা হয়েছে। তাহলে বিদ্যুতের বিল এখনও বাবলুর নামে আসছে কেন? তৃণমূল নেতা বলছেন, তাঁর বাড়ি বাবলু প্রসাদ ভকত নামে নথিভুক্ত। তাই বাবলুর নামেই বিল আসে। পরবর্তীতে যেহেতু তাঁর স্কুলের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে প্রদীপ কুমার ভকত ছিল, সেই জন্য রাজনীতির সময়ে নাম প্রদীপ নাম ব্যবহার করছেন।
প্রদীপ ওরফে বাবলু যাই ব্যাখ্যা দিন না কেন, ভোটের মুখে এমন হাতেগরম ইস্যু নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধী দলগুলি। বিজেপি শিবির থেকে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে। এখানে জমি কেলেঙ্কারির তত্ত্বও উস্কে দিচ্ছে পদ্ম শিবির।
বীরভূমের সিপিএম জেলা নেতৃত্ব আবার কটাক্ষ করে বলছে, ‘ওই দলটাই দুষ্কৃতীদের দল। ফলে ওই দলের কোনও একজন কর্মাধ্যক্ষের দুটি নাম নিয়ে চলা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়।’
যদিও তৃণমূলের বীরভূম জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘ওঁর ঝাড়খণ্ডেও কিছু ব্যবসা রয়েছে। সেই সব কোনও কারণে এই অমিল কি না, জানা নেই। তবে এই ধরনের ঘটনা সাধারণত হয় না। যদি কোনও ভুল হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলে তিনি তা সংশোধন করে নেবেন।’