Goghat: থমকে একশো দিনের কাজ, হয়নি খাল সংস্কার! গোঘাটে জলে হাবুডুবু খাচ্ছে মৌজার পর মৌজা ধানের ক্ষেত
Waterlogged Farmland: গোঘাট-১ ব্লকের শুনিয়া, নলডুবি, নকুণ্ডা, শ্যাওড়া, কোটা, বালি, শ্যামবল্লভপুর-সহ ১২-১৪টি মৌজায় আমন ধানের ক্ষেতে জল ঢুকে গিয়েছে। গোঘাট-২ ব্লকেও সাতবেড়িয়া,শ্রীপুর, মান্দারণ, লালুকা-সহ ৬ -৮টি মৌজার একই অবস্থা।
গোঘাট: একশো দিনের কাজ থমকে থাকা নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েন। আর এদিকে এই যাতাকলের মধ্যে পড়ে জলে হাবুডুবু খাচ্ছে বিস্তীর্ণ চাষের জমি। বর্ষার মরশুম শুরু হতে না হতেই গোঘাট-১ ও গোঘাট-২ ব্লকে মৌজার পর মৌজা চাষের জমি জলের তলায়। আমন ধানের ক্ষেতের উপর দিয়ে বইছে বন্যার জল। মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। চরম দুশ্চিন্তায় রাত কাটছে গোঘাটের ধান চাষিদের। এই জলমগ্ন, বেহাল দশার জন্য নিকাশি খাল সংস্কার না হওয়াকেই দুষছেন চাষিরা। আর এদিকে শাসক দল বলছে, কেন্দ্র একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে, তাই খাল-বিল সংস্কারের কাজ থমকে রয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি আবার বলছে, রাজ্য একশো দিনের কাজের টাকার ঠিকঠাক হিসেব দেয়নি। আর এই টানাপোড়েন, দায় ঠেলাঠেলির মধ্যেই চরম দুর্ভোগে, দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে চাষিদের।
গোঘাট-১ ব্লকের শুনিয়া, নলডুবি, নকুণ্ডা, শ্যাওড়া, কোটা, বালি, শ্যামবল্লভপুর-সহ ১২-১৪টি মৌজায় আমন ধানের ক্ষেতে জল ঢুকে গিয়েছে। গোঘাট-২ ব্লকেও সাতবেড়িয়া,শ্রীপুর, মান্দারণ, লালুকা-সহ ৬ -৮টি মৌজার একই অবস্থা। সব ধানক্ষেতগুলি জলের তলায়। কোথাও হাঁটু সমান জল, তো কোথাও আবার কোমর সমান। এমন অবস্থায় আমন ধানের চাষ কীভাবে হবে, তা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই কৃষকদের। কার্যত মাথায় হাত পড়েছে তাঁদের। কারণ তাঁরা বলছেন, এমন জলমগ্ন অবস্থায় ধানের চারা রোপন করা হলেও তা জলে পচে যাবে।
চাষিরা বলছেন, বাঁকুড়ার দিক থেকে বৃষ্টির জল বিভিন্ন খাল-বিল দয়ে হুগলির দিকে ঢুকছে। তাঁদের বক্তব্য, আগে এইসব এলাকায় খাল-বিলগুলি সংস্কার করা হত। কিন্তু এবার তা হয়নি। অনেক খাল-বিলে তো কচুরিপানাও জমে গিয়েছে। এমন অবস্থায় ধান জমিতে জল ঢুকে পড়ায় বড়সড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন গোঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকার আমন ধানের চাষিরা।
বিষয়টি নিয়ে গোঘাট-১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ি কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নারায়ণচন্দ্র পাঁজাও স্বীকার করে নিচ্ছেন, খাল-বিলগুলি সংস্কার না হওয়াতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু একইসঙ্গে কেন্দ্রের দিকেও আঙুল তুলছেন তিনি। বলছেন, ‘আগে একশো দিনের কাজে খাল-বিল সংস্কার হত। কিন্তু এখন কেন্দ্র টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।’ চাষ জমিতে জল ঢুকে যাওয়ার বিষয়টি যোগাযোগ করা হয়েছিল বিজেপির মণ্ডল সভাপতি দোলন দাসের সঙ্গেও। তিনি আবার পাল্টা রাজ্যের দিকে আঙুল তুলছেন। বলছেন, একশো দিনের কাজে রাজ্য ঠিকঠাক হিসেব না দেওয়াতেই টাকা আটকে রয়েছে। তবে এই জল জমার কারণে যে চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছে দুই পক্ষই।
চাষিদের এই দুর্ভোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল গোঘাট-১ ব্লকের বিডিও সম্রাট বাগচির সঙ্গেও। এই দুর্ভোগের বিষয়টি তাঁর নজরেও এসেছে এবং তিনি এই নিয়ে ইতিমধ্যেই সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলেছেন।