Jalpaiguri News: ভোট পর্বে অশান্তির মাঝেই ভিন্ন চিত্র কালিম্পংয়ে, রোপাই উৎসবে মাতল পাহাড়
Jalpaiguri News: কথিত আছে অম্বাবুচিতে বসুন্ধরা রজঃস্বলা হয়। অর্থাৎ এইসময় বৃষ্টি নামে। মাটি ভিজে নরম হয়ে যায়। এরপর কৃষক জমিতে পুজো দেয়। চাষ করতে নামেন। ঠিক একই জিনিস অনুষ্ঠিত হয় পাহাড়েও।
জলপাইগুড়ি: ভোট পর্ব মিটে গেলেও রাজ্য জুড়ে যখন হিংসার আগুনে জ্বলছে বেশ কিছু জেলা। ঠিক তখনই উল্টো ছবি দেখা গেলো কালিম্পং জেলায়। বিনা রক্তপাতে ভোট পর্ব মিটিয়ে পাহাড় এখন ব্যস্ত রোপাই উৎসব নিয়ে।
রোপাই উৎসব আসলে কী?
কথিত আছে অম্বাবুচিতে বসুন্ধরা রজঃস্বলা হয়। অর্থাৎ এইসময় বৃষ্টি নামে। মাটি ভিজে নরম হয়ে যায়। এরপর কৃষক জমিতে পুজো দেয়। চাষ করতে নামেন। ঠিক একই জিনিস অনুষ্ঠিত হয় পাহাড়েও। তবে সেখানে অনুষ্ঠান আরও রঙিন হয়। আষাঢ় মাসে চাষ শুরু করার আগে পুজো দিয়ে নাচ গান করা হয়। তারপর লাঙল চালিয়ে পাহাড়ের ভেজা মাটিতে কাদা বানিয়ে সেখানে ধানের চারা রোপণ করা হয়। এটাই রোপাই উৎসব।
পাহাড়ে গেলেই এখন ভিন্ন ছবি চোখে পড়বে। কারণ এই আষাঢ় মাসে শুরু হয়েছে ধান রোপণের কাজ। আর এই রোপাই উৎসবের ঐতিহ্যকে বজায় রাখতে হাতে লাঙল, গায়ে কাদা মেখে ধানের চারা রোপণ করতে ব্যস্ত পড়লো কালিম্পং জেলার বোম বস্তির তরিগ্রামের নেপালি সম্প্রদায়ের পুরুষ ও মহিলারা। নাচে,গানে উৎসবের মেজাজে দিনভর ধানের চারা রোপণ করতে দেখা গেল তাঁদের। প্রকৃতির পুজোয় মেতে ওঠেন সকলে। রীতিমতো তরুণ তরুণী সহ বাড়ির গৃহিনীরা রূপসজ্জায় চর্চিত হয়ে এই মাটির অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এ দিন, গ্রামের যুবক যুবতী সহ বয়স্ক মানুষরা ক্ষেতের মাঠে ধানের চারা রোপণ করার সঙ্গে-সঙ্গে সামাজিক উৎসবে মুখরিত হয়।
বরুণ দেবের আরাধনায় সকলেই পুজো অর্চনা করেন। যাতে পর্যাপ্ত মাত্রায় জল এবং বায়ু যেন গাছপালা পায় এবং আশ্বিন কার্তিক মাসে ঘর যেন নবান্ন দিয়ে ভরে যায়। এ দিন, ধান ক্ষেতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দিনভর খুব আনন্দ করে ভুরিভোজের মধ্যে দিয়ে।
গোর্খা গৌরব সংস্থার কর্মকর্তা নরেন্দ্র তামাং বলেন, “আমরা নেপালী সমাজের বিভিন্ন কৃষ্টি যা ক্রমেই হারিয়ে যেতে বসেছে সেগুলোকে ধরে রাখতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সেইজন্য আষাঢ় মাসে রোপাই উৎসব পালন করলাম।”
স্থানীয় বাসিন্দা ভূহান নেপাল জানান যে নেপালী সম্প্রদায়ের অনেক রীতির মধ্যে অন্যতম হল রোপাই উৎসব। যা আষাঢ় মাসে পালন করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে পাহাড়ে এই রীতি চলে আসছে। তারা ছোট বেলায় দেখেছেন তাদের পূর্ব পুরুষ এই ভাবে চাষ আবাদ করেছেন। সেই নিয়ম আজও অক্ষুন্ন রয়েছে।