Murshidabad: পুলিশের তাড়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ, বেঘোরে প্রাণ হারালেন মুর্শিদাবাদের তরতাজা যুবক
Murshidabad: মৃতের বাবার অভিযোগ, ছেলে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পর পুলিশ তাঁকে নদী থেকে তোলার কোনও চেষ্টা করেনি। এমনকী বাড়িতেও জানানো হয়নি বলে অভিযোগ।
বহরমপুর: নবগ্রামের ঘটনা এখনও জেলাবাসীর মনে টাটকা। কিছুদিন আগেই পুলিশ লকআপে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল। তা নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল গোটা জেলা। নিহতের বাড়িতে ছুটে গিয়েছিলেন এসডিপিও। তড়িঘড়ি সাসপেন্ড করা হয়েছিল নবগ্রামের ওসিকে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের আঙুল উঠতে শুরু করেছে উর্দিধারীদের ভূমিকা নিয়ে। এবার অভিযোগ, পুলিশের তাড়া খেয়ে জলে ঝাঁপ দিয়ে এক যুবকের নদীতে তলিয়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থল এবারও মুর্শিদাবাদ। বহরমপুরের সৈদাবাদ এলাকা। গত সন্ধেয় যুবকের দেহ উদ্ধারের পর থেকে এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মৃত যুবকের নাম অতনু ঘোষ (২২)। পরিবারের দাবি, গত পরশু বেলা ১১টা নাগাদ পুলিশের তাড়া খেয়ে নদীতে ঝাঁপ মারেন অতনু। তারপর নদীতে তলিয়ে যায়।
মৃতের বাবার অভিযোগ, ছেলে নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পর পুলিশ তাঁকে নদী থেকে তোলার কোনও চেষ্টা করেনি। এমনকী বাড়িতেও জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। বলছেন, ‘বিনা দোষেই আমার ছেলেকে মেরে ফেলল। এটা তো খুন করার সামিল।’ পরিবারের দাবি, ছেলের খোঁজ না পেয়ে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পারেন তাঁরা।
মৃত অতনু ঘোষ বহরমপুর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। পরিবারের দাবি, অতনু খেলতে গিয়েছিল, সেই সময়ই পুলিশ তাঁকে পাকড়াও করার চেষ্টা করে। এমনকী পুলিশ অতনুকে মারধর করেছে বলেও অভিযোগ উঠে আসছে। সন্তানহারা মা বলছেন, ‘পুলিশের চোখের সামনে ছেলে নদীতে ঝাঁপ দিল। পুলিশ কেন কোনও পদক্ষেপ করল না? আমি সিবিআই তদন্ত চাইছি। আমার ছেলে মরত না। পুরো পুলিশের জন্য মরে গেল। পুলিশের গাড়িতে ভরে আমার ছেলের মুখে-চোখে মেরে, ছেলেকে দুর্বল করে দিয়েছিল।’
কেন হঠাৎ এই ঘটনা ঘটল? পুলিশ সূত্রে খবর, কিছুদিন আগে সৈদাবাদে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে গন্ডগোল হয়েছিল। সেই গন্ডগোলে অভিযুক্তদের পুলিশ খুঁজে বেড়াচ্ছিল। সেই সূত্র ধরেই সন্দেহের বশে অতনুকে ধরা হয়েছিল বলে সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে।
যদিও মারধর বা নদীতে তলিয়ে যাওয়ার পরও কোনও পদক্ষেপ না করার অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য, ‘নদীতে খোঁজাখুঁজির জন্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে খবর দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ ওই যুবককে আটকও করেনি এবং মারধরের প্রশ্নও ওঠে না।’
এদিকে মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতেও শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পলের অভিযোগ, ‘মানুষের মৃত্যকে কোনও গুরুত্বই দেওয়া হয় না। মমতার পুলিশ তৃণমূলের ক্যাডারের কাজ করতেই ব্যস্ত।’ তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ আবার এই ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা বলেই ব্যাখ্যা করছেন।