Jadavpur Student Death: ‘মিড ডে মিল খেতে ভালবাসত, বলত সবাই তো খায়’, স্বপ্নদীপের সরলতা বলতে গিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন মা
JU: স্বপ্নদীপের মায়ের মুখে শোনা গেল সৌরভ চৌধুরী নামে একজনের কথা। তিনি নাকি ফোন করতেন, বলতেন তাঁদের কাছে দিয়ে যেতে। বলেছিলেন, ভালভাবেই থাকবে। আরও একজনের কথা বলছিলেন সন্তানহারা মা।
নদিয়া: পাকা বাড়ি। তবে দেওয়ালের রং চটেছে। চারপাশে কাপড়চোপড় ডাই করে রাখা। ঘরে থেকে থেকেই কান্নার রোল। যাদবপুরের নিহত ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর বগুলার বাড়ির চিত্রটা সকাল থেকেই থমথমে। বাইরে একটা কাঠের চেয়ার পেতে বসে আছেন বাবা। পিছনে দাঁড়িয়ে ভাই। ঘরের মেঝেতে বসে আছেন মা। আলুথালু চুল। গলা বুজে আসছে কথা বলতে গেলেই। বারবারই বলছেন, “পুলিশকে বললাম, স্যর ছেলেটার শখ ছিল যাদবপুরে পড়ার। ওরা র্যাগিং করে না কীসব করে ছেলেটাকে মেরেছে। একটু শাস্তি দেবেন?”
নিহত ছাত্রের মায়ের কথায়, “হস্টেল খরচ ৩ হাজার টাকা। ওর বাবা বলেছিল আমি চালিয়ে নিতে পারব। আমি বারবার বলেছিলাম, ছেলের যেন কোনও অসুবিধা না হয়।” বুধবার রাতে যাদবপুরের হস্টেল থেকে পড়ে মারা যান স্বপ্নদীপ। বৃহস্পতিবার দেহ পৌঁছয় বগুলার বাড়িতে। সাদা কাপড়ে ঢাকা ছেলের নিথর দেহ দেখে ভেঙেচুরে গিয়েছেন মা।
মায়ের চোখের সামনে এখন শুধু ছেলের স্মৃতি। “খুব ভাল ছেলে ছিল আমার। কোনও দাবিদাওয়া ছিল না। কখনও কিছু চায়নি ছেলেটা। টিফিনের পয়সা দিতাম, অথচ খেতো না। মিড ডে মিল খেতো আমার ছেলে জানেন’, বলতে বলতে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেন মা। সকলেই তো মিড ডে মিল খায়, খেতে তো ভালই লাগে, বলতেন ছোট্ট স্বপ্নদীপ।
বারবার মনে পড়ছে, তাঁর কষ্ট হতো বলে ছেলে কীভাবে এগিয়ে এসে ঘরের সমস্ত কাজে হাত লাগাত। পুজো করা, বৃষ্টি এলে ছাদ থেকে কাপড় তুলে আনা, ভাইয়ের ছেড়ে রাখা প্যান্ট শুকোতে দেওয়া — মায়ের বুকে, চোখে এখন শুধুই ছেলের স্মৃতিতর্পণ। এখনও ১৮ বছর বয়স হয়নি। ভোটার কার্ডে নামও ওঠেনি।
স্বপ্নদীপের মায়ের মুখে শোনা গেল সৌরভ চৌধুরী নামে একজনের কথা। তিনি নাকি ফোন করতেন, বলতেন তাঁদের কাছে দিয়ে যেতে। বলেছিলেন, ভালভাবেই থাকবে। আরও একজনের কথা বলছিলেন সন্তানহারা মা। মনোতোষ নামে কেউ একজন, যিনি হস্টেলের সঙ্গে যুক্ত। ছেলেহারা মায়ের দাবি, “যারা ছেলেকে মেরেছে, তারা যেন শাস্তি পায়। আমার ভাল ছেলেটাকে মেরে দিল। কেউ যেন ছাড় না পায়।”