Kharda Police: বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীর পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূলকর্মীদের ওসি-র হুঁশিয়ারি, ‘তোলাবাজি করবেন না’
Kharda Police: বিজেপির দাবি, পুলিশ শুধু তৃণমূলকে নিয়ন্ত্রণ করছে তাই নয়, বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী দলের লোকজনের ওপরও চাপ সৃষ্টি করছে পুলিশ। তৃণমূল নেতৃত্বও বিষয়টা ভালভাবে দেখছে না।
খড়দহ: ‘সমাজের জন্য কাজ করুন। তোলাবাজি করবেন না। আমরা সরকারের মুখ…’, কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি নয়, মঞ্চ থেকে শাসক দলের কর্মীদের এ কথা বলছেন পুলিশ আধিকারিক। সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে তখন আসীন এলাকার বিধায়ক। তাঁর পাশে দাঁড়িয়েই তোলাবাজি নিয়ে নিদান দিতে শোনা গেল থানা ওসি-কে। উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহের এই ঘটনায় তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে বিরোধী মহলে। প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি শাসক দলকে এখন নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ? তৃণমূলও ওসি-র এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
খড়দহে ‘খেলা হবে দিবস’-এর অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে বক্তব্য পেশ করেন খড়দহ থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি রাজকুমার সরকার। একই মঞ্চে ছিলেন ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী। সেই মঞ্চ থেকেই তৃণমূলের কর্মীদের ওসি বুঝিয়ে দিলেন, কী করতে হবে আর কোনটা করা যাবে না।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে পুলিশ আধিকারিক রাজকুমার সরকার বলেন, “আমি সোজা কথা বলতে ভালবাসি। তোমরা দলের কাউন্সিলর। তোমরা যেমন কাজ করবে, বিধায়কের ভাবমূর্তি তেমনই হবে। বিধায়ক তো সব জায়গায় যেতে পারেন না। তোমরাই ওঁর সম্মানটা রাখবে।” সামনেই দুর্গা পুজো। এ কথা মনে করিয়ে দিয়ে ওসি বলেন, “বার বার বলছি সামাজিক কাজ কর, পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে কাজ কর। মনে রাখবে, আমরা সরকারের মুখ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।” তাঁর ‘নির্দেশ’, “অসামাজিক কাজ করবে না। তোলাবাজি করবে না।” পুলিশ অফিসার আরও দাবি করেন, তাঁকে যদি অযোগ্য বলে মনে হয়, তাহলে তা জানাতে পারেন যে কেউ। অভিযোগ শুনলেই সরে যাবেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
এই ঘটনায় সরব হয়েছে এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতা কিশোর কর বলেন, দলটা এখন পুলিশ প্রশাসন কন্ট্রোল করছে। যেভাবে ওসি বিবৃতি দিয়েছেন, তা থেকে স্পষ্ট পুলিশকে দিয়ে কন্ট্রোল করাতে হচ্ছে দলকে। শুধু তৃণমূলকে নিয়ন্ত্রণ করছে তাই নয়, বিভিন্ন জায়গায় বিরোধী দলের লোকজনের ওপরও চাপ সৃষ্টি করছে পুলিশ। তৃণমূল নেতৃত্বও বিষয়টা ভালভাবে দেখছে না। খড়দহ শহর যুব তৃণমূলের সভাপতি দিব্যেন্দু চৌধুরী বলেন, “কিছুদিন আগে তোলাবাজি নিয়ে ঝামেলা হয়েছে খড়দহে। কিন্তু আইসি সে ব্যাপারে বার্তা দিতে যেভাবে রাজনৈতিক মঞ্চ ব্যবহার করেছেন, সেটা ঠিক নয়। উনি গুলিয়ে ফেলেছেন। আমরা প্রতিবাদ জানাচ্ছি, এটা নিন্দনীয় ঘটনা।”
কয়েকদিন আগেই পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে দেখা যায়, থানার আইসি দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে গিয়ে বিধায়ককে কেক খাওয়াচ্ছেন, মোমবাতি জ্বালিয়ে পালন করছেন জন্মদিন। এমন দৃশ্যে প্রশ্ন ওঠে পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে। আর এবার দলীয় কর্মীদের নিদান দিতে দেখা গেল পুলিশকে।