Drinking Water Problem: ‘৪ দিন জল পাচ্ছি না…’, আদিবাসী পরিবারকে ‘জলে মারা’র ফতোয়া মাতব্বরদের
Drinking Water Problem: পুলিশ তাঁদের আশ্বস্ত করেছিল, কল চালু হয়ে যাবে। কিন্তু কোথায় কী! সুরাহা না হওয়ায় পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। সেখান থেকে বলা হয়, 'থানায় যাও।'
দাসপুর: ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও মিলছে না পানীয় জল। ভেঙে দেওয়া হচ্ছে কল, সিল করে দেওয়া হচ্ছে ট্যাপের মুখ। থানা বলছে ‘পঞ্চায়েতে যাও’, পঞ্চায়েত পাঠাচ্ছে থানায়। একটু জলের জন্য কার্যত নাজেহাল গ্রামবাসীরা। কোনও সুরাহা না হওয়ায় চোখে জল মহিলাদের। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানা এলাকার সামাট গ্রামের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, আদিবাসী সম্প্রদায়ের কয়েকজন ‘মাতব্বর’ নাকি এমন ফতোয়া জারি করেছেন। তাঁরাই নাকি বারবার কল ভেঙে দিয়ে চলে যাচ্ছেন, যাতে ওই পরিবারগুলি জল না পায়। কেউ যাতে তাঁদের জল দিয়ে সাহায্য না করতে পারে, সেই ফতোয়াও নাকি জারি করেছেন তাঁরা!
সরকারের তরফে পানীয় জলের জন্য ট্যাপ বসানো রয়েছে বাড়ির সামনে। গ্রামের বেশ কয়েকটি জায়গায় সেই ট্যাপের মুখ সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পানীয় জল না পেয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন গ্রামের বাসিন্দা মঞ্জুরী দেবী। বাড়িতে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। পানীয় জল ছাড়া কতদিন থাকতে হবে, বুঝতে পারছেন না তিনি। মঞ্জুরী দেবী জানিয়েছেন, প্রথমে তাঁরা থানায় গিয়েছিলেন। পুলিশ তাঁদের আশ্বস্ত করেছিল, কল চালু হয়ে যাবে। কিন্তু কোথায় কী! সুরাহা না হওয়ায় পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হন তাঁরা। সেখান থেকে বলা হয়, ‘থানায় যাও।’ তবে গ্রামের মাতব্বরদের এমন ফতোয়ার পিছনে ঠিক কী কারণ, তা নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাননি কেউ।
জানা গিয়েছে, এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর দাসপুর থানার পুলিশ ওই সব ট্যাপগুলি সারিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল বুধবার। কিন্তু রাত পোহাতেই ফের ভাঙা হয়েছে কল। মাতব্বররাই ট্যাপের সঙ্গে পাইপও ভেঙে দিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। বিডিও বিকাশ নস্কর জানিয়েছেন, ব্লক প্রশাসনের তরফে কল সারিয়ে দেওয়া হয়েছিল, আবার কেউ ভেঙে দিয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা তৃণমূল নেতা চিন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “ঘটনাটা আমাদের জানা ছিল না। আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।” তবে সেই সব মাতব্বর অর্থাৎ যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। আদিবাসী সংগঠনের নেতা রাকেশ নায়েক কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। সমস্যার বিষয়ে জানার পরই পুলিশ ও বিডিও-কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাঁর আর্জি, “যাঁরা এসব করছেন, তাঁরা অবিলম্বে বন্ধ করুন। না-হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।”