Afghani Rubab making: ছবি দেখেই বানিয়ে ফেলেছেন রাবাব, কালনার অসিতের জীবনে সেটাই ‘মিরাকল’
Afghani Rubab making: রাবাব প্রধানত আফগানিস্তানের বাদ্যযন্ত্র, যা দেখতে আমাদের দেশের সরোদের মতো। তবে সরোদের থেকে আকারে ছোট, তফাৎ আছে ধ্বনিতেও।
কালনা: বরাবরই বাদ্যযন্ত্রের সুর নেশা ধরাত তাঁর। পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী হলেও মন পড়ে থাকত দোতারার তারে। অনেক কম বয়স থেকেই নিজে হাতে দোতারা বানাতেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দা অসিত বারুই। হঠাৎ একদিন কাগজে দেখেছিলেন কাঠের তৈরি এক বিশেষ বাদ্যযন্ত্রের ছবি। পরে জানতে পারেন সেটি আফগানি বাদ্যযন্ত্র রাবাব। তারপর যন ‘মিরাকল’ ঘটে যায় অসিতের জীবনে। নিজেই বানিয়ে ফেলেন রাবাব। আর এখন আমেরিকা, কানাডার মতো দেশ থেকে অর্ডার আসছে কালনার রামকৃষ্ণপল্লীর এই গ্রামে।
রাবাব প্রধানত আফগানিস্তানের বাদ্যযন্ত্র, যা দেখতে আমাদের দেশের সরোদের মতো। তবে সরোদের থেকে আকারে ছোট, তফাৎ আছে ধ্বনিতেও। এ রাজ্যে অন্য কোথাও রাবাব তৈরি হয় না। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সুরপ্রেমীদের কাছে এই যন্ত্রের বিশেষ কদর রয়েছে। তাই অসিতের তৈরি রাবাবের দর এখন অনেক।
কালনার ২ নম্বর ব্লকের রামকৃষ্ণ পল্লীর বাসিন্দা অসিত অস্থায়ী স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। দোতারা বানানোর নেশা আগেই ছিল। বছর কয়েক আগে করোনার সময় বাড়িতে বানিয়ে ফেলেন রাবাব। নিজে সেটি বাজিয়ে ছবি ও ভিডিয়ো পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই প্রশংসা করেন তাঁর। এরপর থেকেই তিনি রাবাব তৈরির অর্ডার পেতে শুরু করেন। আর ঘুরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। ছেড়েছেন স্বাস্থ্য কর্মীর কাজও।
অসিত বলেন, “সংসার চালাতে একটা কাজ করতে হত, তাই করতাম। কিন্তু রাবাব বানিয়ে মনে তৃপ্তি পেয়েছি। সংসারও আগের থেকে অনেক ভাল চলছে এখন।” দেশের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় তাঁর তৈরি যন্ত্র বিক্রি হয় বলে জানালেন অসিত। তিনি জানান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, বাংলাদেশেও চাহিদা রয়েছে। মূলত সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই আসে অর্ডার।
অসিত বাবু জানান, শিলিগুড়ি থেকে কাঠ কিনে আনতে হয়, তার কিনতে হয় কলকাতা থেকে আর রাবাবের জন্য চামড়া জোগাড় করতে হয় নদিয়া জেলা থেকে। সব মিলিয়ে যন্ত্রটি বানাতে ১৫-২০ দিন সময় লাগে বলে জানিয়েছেন তিনি। কারুকার্য করতে গেলে লেগে যায় এক মাস। যে যেমন চান, তেমন আকারের যন্ত্র বানিয়ে দেওয়া হয়। দাম শুরু হয় ১৭ হাজার টাকা থেকে। ৫০ হাজার বা তারও বেশি দামে ওই যন্ত্র বিদেশে বিক্রি হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।