Kalna Woman: ফেলে দেওয়া সবজি তুলেই দিন গুজরান, তিনজনের পেট চালান কালনার দেবী
Kalna Woman: প্রৌড়ার দাবি, সরকারি সাহায্য বা প্রকল্পের সুবিধা পান না তিনি। টাকার অভাবে অনেক বছর আগেই বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগও কেটে দিয়েছে দফতর।
কালনা: বেলা বাড়লে আস্তে আস্তে পসরা গোটাতে থাকেন সবজি ব্যবসায়ীরা। তখনই বাজারে হাজির হন এক প্রৌঢ়া। পচে যাওয়া সবজি, যেগুলি পসরা তুলে নেওয়ার পর পড়ে থাকে, সেগুলোই একটি ব্যাগে ভরে নেন ওই প্রৌঢ়া। বর্ধমানের কালনার ধর্মডাঙা গ্রামে এই দৃশ্য অনেকেই দেখে আসছেন কয়েক বছর ধরে। কোনও কোনও দিন কোনও ব্যবসায়ী দয়া পরবশ হয়ে কিছু ভাল সবজিও দিয়ে দেন ওই প্রৌঢ়াকে। এ সব কুড়িয়েই সংসারে পেট চলে তিনজনের। স্বামী পক্ষাঘাতগ্রস্ত। শাশুড়িও অসুস্থ। কিন্তু পেট চালাবে কে? অসুস্থ স্বামী-শাশুড়িকে রেখে কাজ করতে যাওয়াও সম্ভব নয়। তাই, খাবারের জোগাড় এভাবেই করেন ৫৩ বছরের দেবী ধাড়া।
কালনা ১ নম্বর ব্লকের ধর্মডাঙা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। ঘর বলতে এক চিলতে টিনের ছাউনি দেওয়া ঘর। দুই সন্তানকেই হারিয়েছেন তিনি। শিশু অবস্থাতেই মৃত্যু হয় একজনের, প্রাচীর চাপা পড়ে মৃত্যু হয় আরও এক ছেলের। বছর পাঁচেক আগে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় নিখোঁজ হয়ে যান আর এক ছেলে। বিগত ১০ বছর ধরে শয্যাশায়ী স্বামী, বৃদ্ধা শ্বাশুড়ি বয়সের ভারে অসুস্থ।
প্রৌড়ার দাবি, সরকারি সাহায্য বা প্রকল্পের সুবিধা পান না তিনি। টাকার অভাবে অনেক বছর আগেই বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগও কেটে দিয়েছে দফতর। স্বামীর চিকিৎসার খরচ বহন করতেও পারেন না তিনি। ঘরে আসা ল্যাম্প পোস্টের আবছা আলোতেই স্বামী আর শাশুড়ির সেবা করে রাত কাটে প্রৌঢ়ার।
প্রায় প্রতিদিন আপন মনে সবজি খোঁজেন তিনি। কোনও দিন কোনও ব্যবসায়ী বিক্রি না হওয়া সবজী তাঁকে দিলে তিনি সে দিন মুদি দোকান থেকে চেয়ে নেন কিছু তেল, মশলা। রাস্তা থেকে কুড়িয়ে আনা গাছের শুকনো পাতা বা কাঠের টুকরো দিয়ে সেদিন রান্না বসে দেবীর বাড়িতে। বাকি দিনগুলিতে পেট ভরাতে হয় সিদ্ধ করা পচা গলা সবজি দিয়েই। এই প্রৌঢ়ার বিষয়ে জানতে পেরে ব্লকের বিডিও সেবন্তী বিশ্বাস মৌখিক বলেন, বিষয়টি খোঁজ নেব।