Jadavpur University: যাদবপুরকাণ্ড: দিদির মতোই Ph.D করার স্বপ্ন, মৃত পড়ুয়ার পাশের ঘরেই থাকতেন ধৃত প্রাক্তনী সুমন

Jadvapur Case: বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পাট চুকে গেলেও, হস্টেলের ঘর দখল করেই রয়ে গিয়েছিলেন সুমন। থাকতেন মেন হস্টেলে। মৃত পড়ুয়ার যে ঘরটি ছিল, ঠিক তার পাশের ঘরেই ছিলেন তিনি। হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর পরের দিনই হস্টেল ছাড়েন সুমন।

Jadavpur University: যাদবপুরকাণ্ড: দিদির মতোই Ph.D করার স্বপ্ন, মৃত পড়ুয়ার পাশের ঘরেই থাকতেন ধৃত প্রাক্তনী সুমন
কী বলছেন ধৃত সুমনের বাড়ির লোকেরা?Image Credit source: টিভি নাইন বাংলা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 16, 2023 | 8:03 PM

মন্দিরবাজার: যাদবপুরের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজার এলাকার বাসিন্দা সুমন নস্করও। যাদবপুরের প্রাক্তনী। দর্শনে স্নাতকোত্তর। গতবছরই এম.এ শেষ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পাট চুকে গেলেও হস্টেলের ঘর দখল করেই রয়ে গিয়েছিলেন সুমন। থাকতেন মেন হস্টেলে। মৃত পড়ুয়ার যে ঘরটি ছিল, ঠিক তার পাশের ঘরেই ছিলেন তিনি। হস্টেলের তিনতলা থেকে পড়ে স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর পরের দিনই হস্টেল ছাড়েন সুমন। ফিরে যান মন্দিরবাজার থানা এলাকার মাধবপুরের ভাড়া বাড়িতে।

সুমন যে এমন কোনও ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন, তা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না তাঁর দিদি তিথি নস্কর। তিথিও যাদবপুরের প্রাক্তনী। তিনিও দর্শনে নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। পিএইচডি শেষ করে এখন একটি মন্দির বাজারের বীরেশ্বপুর কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত। সুমনের দিদি জানালেন, ঘটনার রাতে ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর কোনও কথা হয়নি। হস্টেলের ওই ঘটনার পরের দিন সুমনের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথা হয়। তিথি তখন ছিলেন কলেজে। সেই সময়েই ফোনে দিদিকে গোটা ঘটনা জানান সুমন। বাড়ি ফিরে আসবেন কি না, তা নিয়ে দিদির থেকে পরামর্শ চাইছিলেন।

সেই সময় প্রথমে তিথি তাঁর ভাইকে বলেছিলেন, হস্টেলে থেকে যেতে। কারণ, তাঁর মনে হয়েছিল যেহেতু সুমন মৃত পড়ুয়ার পাশের ঘরেই থাকে, সেক্ষেত্রে যদি হঠাৎ করে সুমন হস্টেল থেকে চলে আসেন, তাহলে তাঁর উপর সন্দেহ হতে পারে। এছাড়া তদন্তকারী অফিসারদের কোনও প্রশ্নও করার থাকতে পারে সুমনকে, সেই সব বিবেচনা করেই প্রথমে তিথি ভাইকে বলেছিলেন হস্টেলে থেকে যেতে। তারপর যখন হস্টেলে প্রাক্তনীদের থাকা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন খবর প্রকাশিত হতে থাকে, তখন তিনি ভাইকে বলেন বাড়ি ফিরে আসতে।

কিন্তু কেন পড়াশোনার পাট চুকে যাওয়ার পরেও হস্টেলে থেকে গিয়েছিলেন সুমন? তিথি বলছেন, পড়াশোনার জন্যই থেকে গিয়েছিলেন সুমন। দিদির মতো সুমনও পিএইচডি করতে চান। স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা চলাকালীনই নেট পাশ করেন। কিন্তু জুনিয়র রিসার্চ ফেলো (JRF)-এর তালিকায় নাম ওঠেনি। তাই আবার পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। সুমনের দিদি বলছেন, অনলাইন কোর্স করতে হস্টেলে থেকে সুবিধা হত সুমনের। হস্টেলে ফ্রি-তে ওয়াই-ফাই পাওয়া যেত অনলাইন কোর্সের জন্য। তাছাড়া কোথাও কিছু বুঝতে সমস্যা হলে, অন্যদের থেকে সুবিধাও পাওয়া যেত। সেই কারণেই থেকে গিয়েছিলেন তিনি।

সুমনের দিদি তিথি জানাচ্ছেন, ‘ওদের হস্টেলে তো এরকম চলে আসছে। পাস আউট হয়ে গেলেও ওখানে থাকছে।’ তবে একইসঙ্গে তিনি এও জানাচ্ছেন, ঘটনায় যাঁরা জড়িত তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। একইসঙ্গে প্রশ্ন তুলছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতি নিয়েও। বলছেন, ‘এখানে কর্তৃপক্ষেরও গাফিলতি রয়েছে। দিনের পর দিন ছেলেরা থেকে যাচ্ছে হস্টেলে, এখানে তারা কেন কোনও কড়া নিয়ম আনছে না!’

সুমনের বাবা জগদীশ নস্করেরও মাথায় বাজ পড়েছে এদিনের ঘটনায়। ছেলে যে এমন কিছু করতে পারে তা কিছুই মানতে পারছেন না তিনি। আজ সকালে পুলিশ এসে সুমনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। পরে পুলিশ বাড়িতে ফোন করে জানায়, সুমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুমনের বাবার সন্দেহ, হস্টেলের বন্ধুদের সঙ্গে ফোনে ঘটনা নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন সুমন। সেই সূত্র ধরেই সুমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে সম্ভবত।