British baby killer nurse: আজীবন জেল ৭ শিশুর হত্যাকারী নার্সের, কেন এমনটা করত সে?

British baby killer nurse: আধুনিক ইউরোপের ইতিহাসে সবথেকে বিপজ্জনক শিশু সিরিয়াল কিলার বলা হচ্ছে তাকে। সোমবার (২১ অগস্ট), সময়ের আগে জন্মানো এবং অসুস্থ নবজাতকদের হত্যা করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হল। ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্ট, এদিন তাকে আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।

British baby killer nurse: আজীবন জেল ৭ শিশুর হত্যাকারী নার্সের, কেন এমনটা করত সে?
৭ শিশুকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হল লুসি লেটবিকেImage Credit source: AFP
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 21, 2023 | 7:27 PM

লন্ডন: ২০১৫ থেকে ২০১৬ – একবছরের মধ্যে সাত-সাতটি শিশুকে হত্যা এবং আরও ছয় শিশুকে হত্যার চেষ্টা করেছিল ব্রিটিশ নার্স লুসি লেটবি। গত কয়েক মাসে তাঁর ‘কীর্তিকলাপ’ শুনে হতবাক হয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্বের মানুষ। আধুনিক ইউরোপের ইতিহাসে সবথেকে বিপজ্জনক শিশু সিরিয়াল কিলার বলা হচ্ছে তাকে। সোমবার (২১ অগস্ট), সময়ের আগে জন্মানো এবং অসুস্থ নবজাতকদের হত্যা করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হল তাকে। এর পাশাপাশি, ওই শিদের বাবা-মায়েদের দুর্বলতার সুযোগ নেওয়ার দায়েও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তাকে। ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্ট, এদিন তাকে আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।

সাজা ঘোষণার সময় ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্টের বিচারপতি বলেছেন, লুসি লেটবি আকস্মিকভবে এই হামলাগুলি করেনি। যথেষ্ট ভাবনা-চিন্তা করে, অঙ্ক কষে এবং চরম ধূর্ততার সঙ্গে সে নবজাতকদের হত্যা করেছে বা হত্যার চেষ্টা করেছে। তার আচরণের নিষ্ঠুরতা ‘অত্যন্ত ভয়ঙ্কর’ বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি। ৩৩ বছরের লুসি লেটবিকে, শেষ পর্যন্ত পাঁচ শিশুপুত্র এবং দুই শিশুকন্যাকে হত্যার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। প্রতিটি ঘটনাই ঘটেছিল ২০১৫ সালের জুন থেকে ২০১৬-র জুনের মধ্যে, ইংল্যান্ডের কাউন্টেস অব চেস্টার হাসপাতালে। তবে, আরও বেশ কয়েকজন নবজাতক তার শিকার হয়ে থাকততে পারে বলে সন্দেহ রয়েছে তদন্তকারীদের মনে। কারণ, ২০১০ সাল থেকেই ওই হাসপাতালে কাজ করত লুসি।

প্রথম থেকেই তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছিল লুসি। তবে, ব্রিটিশ পুলিশ তার বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে বেশ কিছু নোট পেয়েছিল। এই নোটগুলিই শেষ পর্যন্ত তাকে দোষী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে কাজে এসেছে। কোনও নোটে লেখা ছিল, “আমি খুব খারাপ, আমি এই কাজ করেছি।” কোনও নোটে লেখা ছিল “আমি বেঁচে থাকার যোগ্য নই। আমি ওদের ইচ্ছে করে হত্যা করেছি। ওদের যত্ন নেওয়ার যোগ্য নই আমি।” এই নোটগুলি লুসি লেটবিকে দোষী সাব্যস্ত করতে সাহায্য করলেও, কেন সে খুনগুলি করেছিল তা জানা যায়নি। একের পর এক নিরপরাধ নবজাতককে হত্যার পিছনে তার কী উদ্দেশ্য ছিল, তা রায় ঘোষণার পরও অস্পষ্ট থেকে গিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলকে ভাবাচ্ছে এই প্রশ্ন।

মনোবিদদের মতে, ‘ঈশ্বর’ হতে চেয়েছিল লুসি লেটবি। তার জন্যই সে ওই শিশুদের উপর হামলা চালাত। তারপরে তার সহকর্মীদের ওই শিশুদের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে বলে আগাম সতর্ক করত। কী ঘটতে চলেছে, সে আগে থেকেই জানত। সবকিছুই তার নিয়ন্ত্রণে ছিল। আর এই ক্ষমতাটা সে উপভোগ করত। জানা জিনিসের ভবিষ্যদ্বাণী করে সে নিজেকে ঈশ্বর বলে মনে করতে শুরু করছিল। একাংশের মতে, মনযোগ এবং সহানুভূতি আদায় করাই ছিল লুসি লেটবির আসল উদ্দেশ্য। যেসব চিকিৎসক,নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মীরা হত্যার মতো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে, তাদের নিয়েই গবেষণা করেন প্রফেসর ইয়র্কার। এই ধরনের ১৩০টিরও বেশি মামলা খতিয়ে দেখেছেন তিনি। তাঁর মতে, এই ধরনের হত্যার ক্ষেত্রে, হত্যাকারীরা এক অদ্ভুত ক্ষমতা অনুভব করেন। প্রাণ নেওয়ার মতো ক্ষমতার স্বাদ পেতেই বারংবার একই ঘটনা ঘটিয়ে চলে তারা।