Food Insecurity: ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার জেরে বিশ্বে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে: রিপোর্ট
Hottest Day: রাষ্ট্রসঙ্ঘের IPCC জলবায়ু বিজ্ঞান উপদেষ্টা প্যানেলের তরফে সতর্কবার্তা দিয়ে জানানো হয়েছে, ২০৮০ সালের মধ্যে প্রতি বছর কমপক্ষে ৩০টি 'মারাত্মক উষ্ণতম দিন' হিসাবে পরিগণিত হবে এবং লক্ষ-লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
প্যারিস: গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের (Global warming) জেরে সারা বিশ্বে তাপমাত্রা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যে তৎপর হয়েছে বিশ্বের তাঁবড়-তাঁবড় রাষ্ট্রনেতারা। কিন্তু, তারপরেও তাপমাত্রা ঠেকানো যাচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিনে বিশ্বে খাদ্যে অনিশ্চয়তা (Food Insecurity) দেখা দিতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত সমীক্ষা রিপোর্টে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১৫০টি দেশের উপর একটি সমীক্ষা করেন। মূলত, ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশ, বর্তমানে যে দেশগুলি তাপপ্রবাহের শিকার হচ্ছে, সেই সমস্ত দেশের কৃষিকাজের উপর সমীক্ষা চালান অক্সফোর্ডের গবেষকরা। ‘পিপল গো হাংরি’ নামক সেই সমীক্ষা রিপোর্টেই উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে, তাপপ্রবাহের ফলে লক্ষ-লক্ষ পুরুষ, মহিলা এবং শিশুরা খাদ্যের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যদি সার্বিকভাবে খাদ্যশস্য অনিশ্চয়তার হার এক শতাংশেরও কম বৃদ্ধি পায়, তবু ঝুঁকি কমছে না।
অক্সফোর্ডের গবেষক কারোলিন ক্রোগারের নেতৃত্বেই ‘পিপল গো হাংরি’ সমীক্ষাটি চালানো হয়। সম্প্রতি নেচার হিউমান জার্নালে সেই সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্টে কারোলিন জানিয়েছেন, যদি আজ উষ্ণতম দিন হয়, তাহলে কয়েকদিনের খাদ্য অনিশ্চয়তা দেখা যাবে। কারণ মানুষ কাজ করতে বেরোতে পারবে না। ফলে খাবার কেনবার মতো সামর্থ্য থাকবে না। এছাড়া তাপপ্রবাহ ও আবহাওয়ার বদলের ফলে খাদ্যশস্যের ফলনও কম হবে। যার প্রভাব মাস, এমনকি বছরেও পড়বে। আবার পশ্চিমবঙ্গের উদাহরণ তুলে ধরে রিপোর্টে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের বহু মহিলা ইটভাটার কাজের সঙ্গে যুক্ত। প্রচণ্ড গরম আবহাওয়া হলে মহিলারা বেশি সংখ্যক ইট বইতে পারে না। ফলে তাদের আয়ও কম হয়।
ইতিমধ্যে গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের জেরে খাদ্য সংকট শুরু হয়েছে বলেও সমীক্ষা রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুসারে, ২০২২ সালেও বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ মাঝারি মানের খাদ্য সংকট অনুভব করেছেন। উষ্ণতম দিনের নিরিখে গত বছর পুরানো সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলেও ‘পিপল গো হাংরি’ রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে। আগামী দিনে এর থেকেও খারাপ পরিণতি হতে পারে এবং তার সামগ্রিক প্রভাব খাদ্যের প্রতুলতার উপর পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কারোলিন।
গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের ব্যাপারে রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফেও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের IPCC জলবায়ু বিজ্ঞান উপদেষ্টা প্যানেলের তরফে সতর্কবার্তা দিয়ে জানানো হয়েছে, ২০৮০ সালের মধ্যে প্রতি বছর কমপক্ষে ৩০টি ‘মারাত্মক উষ্ণতম দিন’ হিসাবে পরিগণিত হবে এবং লক্ষ-লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিশ্ব উষ্ণায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে প্রতিটি শহর, অফিস, বহুতল বিশেষভাবে নির্মাণ করা প্রয়োজন, যাতে সেগুলি ঠান্ডা করার ব্যবস্থা থাকে এবং কর্মীরা কাজ করতে পারেন।